রায়গঞ্জ, 24 জানুয়ারি : তাম্র প্রস্তর যুগ থেকে শুরু করে ব্রিটিশ আমল ৷ উত্তর দিনাজপুরজুড়ে রয়েছে প্রত্নতত্ত্বের রত্নভাণ্ডার ৷ বর্তমানে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই নিদর্শনগুলি ৷ তাই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে ঘুরে সেগুলি বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বৃন্দাবন ঘোষ ৷ একজন অবসরপ্রাপ্ত ইতিহাসের শিক্ষক ৷ বিভিন্ন জায়গার ইতিহাস খুঁজে বের করাই তাঁর বর্তমান নেশা ৷ দীর্ঘ 23 বছর ধরে এভাবেই জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের খোঁজে ঘুরে বেড়ান তিনি ৷ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক ও সংগ্রহশালা বিভাগে চিঠি পাঠিয়ে জেলার অমূল্য সম্পদকে বাঁচাতে মরিয়া তিনি ৷ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, "যতদিন বাঁচব, জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করব ৷"
বৃন্দাবনবাবুর বাড়ি বীরভূমের ইসলামপুর এলাকায় ৷ চাকরিসূত্রে উত্তর দিনাজপুরে আসেন তিনি ৷ রায়গঞ্জ কর্ণজোড়া হাইস্কুলে ইতিহাস পড়াতেন ৷ ইতিহাসের প্রতি ভালোবাসা থাকায় বরাবরই বিভিন্ন জায়গার ইতিহাস সম্পর্কে জানার একটা ইচ্ছা ছিলই তাঁর ৷ তাই ঘুরতে ঘুরতে জানতে পারেন জেলার অনেক স্থাপত্য অবহেলায় পড়ে রয়েছে ৷ কাজের ফাঁকে ছুটির দিনগুলোতে সেই স্থাপত্যগুলো খুঁজে বার করার কাজ শুরু করেন তিনি ৷
23 বছর ধরে প্রায় 100টি ঐতিহাসিক নিদর্শন খুঁজে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন তিনি ৷ তিনি বলেন, উত্তর দিনাজপুরের উপর দিয়ে একসময় 30টি নদী বয়ে যেত ৷ যে কারণে বিভিন্ন সভ্যতার ও সম্প্রদায়ের স্থাপত্য এই জেলা ছুঁয়ে গেছে ৷ উত্তরবঙ্গের মধ্যে মালদার পর উত্তর দিনাজপুরেই সবচেয়ে বেশি ঐতিহাসিক নিদর্শন সমৃদ্ধ বলেও মনে করেন তিনি ৷ ইতিমধ্যে, জেলার ইতিহাসের উপর লিখে ফেলেছেন 22টি বই ৷ এখনও পর্যন্ত ছ'টি নিদর্শনকে সংস্কারের জন্য মনোনীত করেছে ৷ বলেন, "ভেবেছিলাম চাকরি শেষ হয়ে গেলে ফিরে যাব ৷ তবে, এখন মনে হচ্ছে তা সম্ভব হয়ে উঠব না ৷ এই জেলার ইতিহাসের টান ছেড়ে বেরোতে পারব না ৷ এই জেলার ইতিহাসের নিদর্শনগুলোকে বাঁচিয়ে রাখলে আগামীদিনে পর্যটনেও উন্নতি হবে ৷"