রায়গঞ্জ, 15 অক্টোবর: একদিনে প্রতিমা তৈরি করা ৷ সেই রাতেই কালীপুজো করে সূর্য ওঠার আগেই শ্যামার বিসর্জন। প্রায় 500 বছর ধরে এই রীতি মেনে দীপাবলির রাতে পুজো হয়ে আসছে রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগর কালীবাড়ির মন্দিরে (500 Years Kali Puja of Debinagar Kalibari) ৷ শুধু তাই নয়, দেবীর আদেশে এই মন্দিরে নেই কোনও ছাদ ৷ চারিদিকে দেওয়াল দিয়ে ঘেরা মন্দির থাকলেও খোলা আকাশের নীচেই জাগ্রত দেবীনগর কালীবাড়ির দেবী পুজিতা হন ৷ শুধু উত্তর দিনাজপুর জেলাই নয়, ওই মন্দিরে অন্যান্য জেলা ও ভিনরাজ্য থেকে হাজারের সংখ্যায় দর্শনার্থীদের সমাগম হয় দীপাবলির রাতে ৷
কথিত আছে, রায়গঞ্জ শহরের দক্ষিণ প্রান্তে দেবীনগরে রাস্তার ধারে এই কালীমন্দিরে একসময় গাছের তলায় ডাকাতদল পুজো করত ৷ দিনাজপুরের রাজা গীরিজানাথ রায় সভাসদদের নিয়ে সেখানে পুজো করতেন ৷ একবার এই পথ দিয়ে ভুপালপুর রাজবাড়ি যাওয়ার পথে সেখানে আটকে পড়েন রাজা ৷ সেইসময় দেবীর আদেশ পান যে, এই স্থানে মন্দির তৈরি করে পুজো করার ৷ দেবীর এমনও আদেশ ছিল যে, মন্দির হবে ছাদ খোলা ৷ দেবী রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ের মধ্যে সেখানে পূজিতা হবেন ৷
অবিভক্ত দিনাজপুরের রাজা গীরিজানাথ রায় স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন, দীপাবলির অমাবস্যায় সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে মায়ের মূর্তি তৈরি করতে হবে ৷ আর সূর্য ওঠার আগেই মায়ের পুজো শেষ করে মূর্তি বিসর্জন দিতে হবে ৷ বাকি বছর দেবীর পুজো হবেন পঞ্চমুণ্ডির বেদীতেই ৷ সেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে দিনাজপুরের রাজা রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগরে রাজপথের ধারে তৈরি করেছিলেন ছাদ খোলা কালীমন্দির ৷ সেই থেকে আজও এই ছাদ খোলা মন্দিরে পঞ্চমুণ্ডির বেদীতে মা কালীর আরাধনা হয় ৷ আর দীপাবলির রাতে মূর্তি তৈরি করে কালীপুজো (Kali Puja 2022) হয় এবং ভোরের আলো ফোটার আগে বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয় ৷
আরও পড়ুন: অপুর কাছে কলকাতা মানে ফুচকা আর মাটির ভাঁড়ে চা !
একবারের জন্যও এই রীতির অন্যথা হয়নি রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগর কালীবাড়ির পুজোয় ৷ এই মন্দিরের কালী জাগ্রত বলে এর খ্যাতি রয়েছে ৷ অসম, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বিহার-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় কালীপুজোর রাতে ৷