বারাসত, 25 ফেব্রুয়ারি : চিৎকার শুনে ছুটে এসেছিলেন প্রতিবেশীরা । এসে দেখেন, আগুনে জ্বলছে তিনটে মানুষ । কোনওরকমে আগুন নিভিয়ে তাঁদের তিনজনকে প্রথমে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয় । পরে অবস্থার অবনতি হয় । তাই NRS হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ায় চারদিনের মাথায় মৃত্যু হয় তাঁদের । এই তিনজন সম্পর্কে শ্বশুর-শাশুড়ি ও বউমা । এই ঘটনার তিন বছর অভিযুক্ত অমিত নস্করকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল বারাসত আদালত ।
2016 সালের 5 জুলাই বাগুইআটির মণ্ডল পাড়ায় একই পরিবারের তিনজনকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় স্থানীয় নার্সিংহোমে ভরতি করা হয় । এই তিন জন সম্পর্কে শ্বশুর-শাশুড়ি ও বউমা । তাঁদের নাম অরুণ নস্কর ও পূর্ণিমা নস্কর এবং মিনা নস্কর । আদালত সূত্রে খবর, ঘটনার দিন বাবা অরুণ ও মা পূর্ণিমার কাছে টাকা চায় অমিত । কিন্তু তাঁরা টাকা দিতে অস্বীকার করেন । তখনই তাঁদের মারধর করতে শুরু করে অমিত । অভিযোগ, প্রতিবাদ করতে এলে স্ত্রী মিনাকেও মারধর করে সে । এরপর তিন জনকে ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে যায় । তারপর বাইক থেকে পেট্রোল বের করে তাঁদের গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় । বাঁচার জন্য জ্বলন্ত অবস্থাতেই চিৎকার করতে শুরু করে অরুণ, পূর্ণিমা ও মিনা ।
তাঁদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরার ছুটে আসেন । কোনওরকমে আগুন নিভিয়ে তাঁদের স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভরতি করে । ঘটনার সময় বারান্দায় দোলনায় শুয়ে ছিল অমিত ও মিনার ছয় মাসের সন্তান । প্রতিবেশীরা তাকেও উদ্ধার করে । পরে অরুণ, পূর্ণিমা ও মিনার অবস্থার অবনতি হলে NRS-এ স্থানান্তরিত করা হয় । শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ায় ঘটনার চারদিনের মাথায় পূর্ণিমা ও মিনার মৃত্যু হয় । পরের দিন মৃত্যু হয় অরুণের ।
মিনার বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে বাগুইআটি থানার পুলিশ অমিতকে গ্রেপ্তার করে । তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয় । বারাসতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট মামলাটির শুনানি শুরু হয় । সাক্ষ্য গ্রহণের পর অমিতকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক । গতকাল বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও 15 হাজার টাকা জরিমানার সাজা শোনায় ।