সল্টলেক, 14 জানুয়ারি: প্রাথমিকের ইন্টারভিউয়ে ভুয়ো কল লেটার নিয়ে এসে ধরা পড়ে গেলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের এক যুবক। ধৃতের নাম প্রীতম ঘোষ ৷ শনিবার সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের মূল দফতর আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র (এপিসি) ভবনে (APC Bhawan) দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ ছিল। ইন্টারভিউ চলাকালীন কিছু বিষয় লক্ষ করেই ওই যুবককে নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। তারপরেই লক্ষ্য করা হয় ইন্টারভিউয়ের জন্য সঙ্গে আনা কল লেটারে ওই যুবকের স্বাক্ষর নেই ৷ তাতেই প্রীতমকে আটক করা হয় ৷
ঘটনায় প্রীতমের পাশাপাশি একজনকে গ্রেফতার ও আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন যুবকের আত্মীয় ও অন্যজন পাড়া-প্রতিবেশী বলে জানা গিয়েছে। তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ মোতায়েন রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে। শনিবার চতুর্থ ফেজের ইন্টারভিউ চলছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের চাকরিপ্রার্থীদের। এদিন প্রায় 450 জন চাকরি প্রার্থীদের ইন্টারভিউ হওয়ার কথা। এপিসি ভবনের এক কর্মী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রীতম যে কল লেটার সঙ্গে করে এনেছিল তাতে ওই যুবকের স্বাক্ষর ছিল না। এমনকী ইন্টারভিউ দিতে আসা চাকরিপ্রার্থীদের নামের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল, তাতেও ওই যুবকের নাম ছিল না। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ পর্ষদের কর্তাদের জানান সৌরভ।
আরও পড়ুন: প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণার অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে
এরপরে কর্তারা ওই যুবককে অ্যাডমিট কার্ড দেখাতে বললে, সে একটা প্রতিলিপি দেখায়। আর বলে আসলটি তাঁর সঙ্গে আসা এক আত্মীয়ের কাছে রয়েছে ৷ কিন্তু কর্তারা ওই আত্মীয়কে আসল অ্যাডমিট দেখাতে বললে সেটিও তিনি দেখাতে পারেননি ৷ এরপর পুলিশ প্রীতমের আত্মীয়কেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে ও পরে গ্রেফতার করে ৷ প্রীতমের ওই আত্মীয়ের নাম বিষ্ণু মাহাতো ৷ সূত্রের খবর, এই ভুয়ো কল লেটার বানানোর জন্য প্রীতমের সঙ্গে পঞ্চাশ হাজার টাকা বিনিময়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি হয় ৷ মোট পাঁচ লাখ টাকার চুক্তি হয়। চাকরি হয়ে গেলে আরও সারে চার লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল ৷ তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা । একই পাড়ায় থাকে প্রীতম ও ওই ব্যক্তি ৷ যাকে প্রীতম 'পাড়ার কাকা' হিসেবে পরিচয় দিয়েছে ৷
এরপর পুলিশ প্রীতমের ফোন থেকে সরাসরি কথা বলেন ওই 'দালাল' কাকার সঙ্গে। এরপর স্থানীয় পুলিশ সিভিল ড্রেসে গিয়ে প্রীতমের পাড়ার কাকাকে আটক করে। সেখানেই তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ৷ বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে দু'জনকে বিধাননগর পূর্ব থানার আধিকারিকরা জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন ৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এর পিছনে কোনও বড় চক্র রয়েছে ৷ উল্লেখ্য, প্রীতম 2014 সালের অসফল চাকরিপ্রার্থী ৷