বাদুড়িয়া, 27 নভেম্বর: এক নয়, দুই নয় ৷ নয় নয় করে ১৩৪ জন মহিলার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকল তৃণমূল উপপ্রধানের স্ত্রী'র অ্যাকাউন্টে (Wife of trinamool congress leader turns beneficiary ) ৷ শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে এটাই ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণার বাদুড়িয়ায়। ঘটনায় প্রশাসন প্রযুক্তিগত ত্রুটির সাফাই দিলেও রাজনৈতিক তরজা থামার নয় সহজে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খোদ অভিযুক্ত তৃণমূল উপপ্রধান।
বাদুড়িয়ার জগন্নাথপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান হাসানুর জামানের স্ত্রী ইরানি ইয়াসমিনের নামে যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেখানে সম্প্রতি ১৩৪ জন মহিলার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকেছে বলে অভিযোগ (Lakshmir Bhandar Scam) ৷ বিষয়টি সামনে আসতেই উত্তপ্ত বাদুড়িয়ার তিলডাঙা গ্রাম। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, আবেদন করা সত্ত্বেও তাদের পরিবারের মহিলাদের অনেকেরই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা এখনও ঢোকেনি। প্রকল্পের সেই টাকাই নাকি ঢুকেছে তৃণমূল নেতার স্ত্রী'র অ্যাকাউন্টে ৷ এমনটাই অভিযোগ ৷
এ বিষয়ে প্রশান্ত সেন নামে এক অভিযোগকারী বলেন, "বেনিফিসিয়ারির মধ্যে একটি অন্য মোবাইল নম্বর এবং একটি অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া আছে। যেটি মায়ের নামে করা আবেদনের বেনিফিসিয়ারি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ৷ অন্য একটি স্টেট ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট। মায়ের নামে এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক ছাড়া আর কোথাও অ্যাকাউন্ট নেই। তখনই সন্দেহ হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যার অ্যাকাউন্ট তিনি উপপ্রধানের স্ত্রী ইরানি ইয়াসমিন।" ঘটনায় তদন্তের দাবিতেও সরব হয়েছেন গ্রামবাসীদের একাংশ।
ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। শাসকদলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পের নামে আসলে আখের গোছাতে ব্যস্ত তৃণমূলের নেতারা। সেখানে তো সাধারণ মানুষ সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেনই।" এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন : Calcutta High Court : লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে টাকার জোগান, বঞ্চিত কর্মচারীরা, ডিএ মামলায় কটাক্ষ আইনজীবীর
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জগন্নাথপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান হাসানুর জামান। তাঁর কথায়, "আর পাঁচজনের মতো আমার স্ত্রীও লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদন করেছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতে ৫০০ টাকা করে তিনমাসে মোট দেড় হাজার টাকা ঢুকেছে নিয়ম মেনে। ১৩৪ জন মহিলার টাকা আমার স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকার যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমার স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য জমা দিয়েছি বিডিও'র কাছে। তিনিই বাকিটা তদন্ত করে দেখবেন অভিযোগের কোনও সারবত্তা আছে কিনা।"
তৃণমূলের উপপ্রধান অভিযোগ অস্বীকার করলেও অন্যদিকে জেলা প্রশাসন সাফাই দিয়ে জানিয়েছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এমনটা হয়েছে। ঘটনাটি স্থানীয় বিডিও-কে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে।