ETV Bharat / state

মধ্যমগ্রামে প্রোমোটার খুনের পিছনে কি লুকিয়ে সিন্ডিকেট ও জমিজমার দখলদারির কর্তৃত্ব ? - Shootout at Madhyamgram

মধ্যমগ্রামে প্রোমোটার খুনের ঘটনা নতুন নয় । এর আগেও দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বহু প্রোমোটার । তবে অশোক সর্দার খুনের ঘটনার এখনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ ।

Madhyamgram
Madhyamgram
author img

By

Published : Dec 23, 2020, 9:55 PM IST

মধ্যমগ্রাম, 23 ডিসেম্বর : মধ্যমগ্রামে প্রোমোটোর খুনের নেপথ্যে কারা ? খুনের নেপথ্যে কি সিন্ডিকেট ও জমিজমার দখলদারির কারণ লুকিয়ে রয়েছে ? নাকি কাঁচা টাকার কর্তৃত্বের লোভেই কি শেষ পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের রোষানলে পড়ে খুন হতে হল প্রোমোটার অশোক সর্দারকে ? খুনের পর এমনই একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে বিভিন্ন মহল থেকে । এই প্রশ্ন আরও জোরালো করেছে নিহত ব্যক্তি প্রমোটিং ব্যবসার পাশাপাশি সম্প্রতি জমি কেনাবেচার সঙ্গেও হাত পাকিয়েছিলেন ।

খুনের আগে ঘটনাস্থানে আততায়ীদের সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয় ওই প্রোমোটারের । স্থানীয় সূত্রের খবর, "সে চিৎকার করে বলতে থাকে, তোরা কি আমায় খুন করবি ?"এরপরই গুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় । খুব কাছ থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা । গুলিতে একপ্রকার ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাঁর শরীর । ঘটনাস্থানেই মৃত্যু হয় প্রোমোটারের । প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলার বয়ান থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে ।

সিন্ডিকেট ও জমিজমার দখলদারি নিয়ে মধ্যমগ্রামে খুন নতুন কিছু নয় । খুন, বোমা ও গুলি যেন একসময় রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বারাসত শহর ঘেঁষা মধ্যমগ্রামে । 2015 সালের 7 মে মধ্যমগ্রাম-সোদপুর রোডের ফ্লাইওভারের কাছে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে । সেদিন রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় আততায়ীরা বাইকে এসে গুলি করে খুন করে বাবু সেন ও নাঙ্কাই নামে দুই যুবককে । এই ঘটনার বছর দুয়েক বাদেই রঞ্জন দাস নামে এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা । গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় সেই সময় বরাত জোরে প্রাণে বাঁচেন তিনি । সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও খুনের ঘটনা ঘটে মধ্যমগ্রাম শহরের বুকে । সালটা 2018 সালের 2 ফেব্রুয়ারি । সেদিন প্রকাশ্য দিবালোকে সেলুনের মধ্যে ঢুকে গৌতম নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করা হয় । সেই বছরের 29 জুলাই তৃণমূলের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সুধীর দাসকে গুলি করে খুন করে আততায়ীরা । এরপর 2019 সালের 9 সেপ্টেম্বর ভরসন্ধ্যায় তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা । বোমা ও গুলিতে জখম হন যুব তৃণমূল নেতা বিনোদ সিং । আহত হন তাঁর সঙ্গে থাকা দলীয় কর্মী দীপক বসুও । এই সমস্ত ঘটনার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল সিন্ডিকেট ও জমিজমার দখলদারির তথ্য । এর আগে ও পরে বিভিন্ন হামলা এবং খুনের চেষ্টার ঘটনার সাক্ষীও থেকেছে মধ্যমগ্রাম ।

মঙ্গলবার আবারও খুনের ঘটনা সামনে আসায় সেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম ও জমি কেনাবেচার কাঁচা টাকার তত্ত্বই আরও জোরালো করেছে । এর পিছনে রয়েছে আরও একাধিক তথ্য । বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের ধারণা, ভৌগোলিক দিক থেকে মধ্যমগ্রাম শহর ও পঞ্চায়েত এলাকা অবস্থান দমদম বিমানবন্দরের কাছেই । রাজারহাট ও নিউটাউন শিল্প তালুকের দূরত্বও খুব বেশি দূর নয় । ফলে, গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় চড়চড় করে জমির দাম বাড়ছে । জমি কিনে বিভিন্ন সংস্থা আবাসন ও কারখানা গড়ে তুলছে । কেউ কেউ আবার কম দামে নিচু জমি কিনে তাতে মাটি দিয়ে উঁচু করে বিক্রি করছে বেশি দামে । ফলে দাপট বাড়ছে সিন্ডিকেটের । আর তার দখলদারি ঘিরে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম দিন দিন বেড়ে চলেছে মধ্যমগ্রাম শহর এলাকায় । বাধা ও পথের কাঁটা সরাতে খুন করতেও হাত কাঁপছে না তাদের । এদিকে, প্রোমোটার অশোক সর্দার খুনের 24 ঘন্টা পরও অধরা আততায়ীরা ।

অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে নিহত প্রোমোটারের পরিবারের তরফে মধ্যমগ্রাম থানায় খনের অভিযোগ দায়ের করা হয় । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়েছে তদন্ত । এই বিষয়ে বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তদন্ত চলছে । খুনের কারণ ও ঘটনায় কারা জড়িত সেবিষয়ে তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে । আততায়ীদের ধরতে চেষ্টার কোনও কসুর করা হচ্ছে না । আশা করা যায় শীঘ্রই তাতে সফলতা মিলবে ।"

মধ্যমগ্রাম, 23 ডিসেম্বর : মধ্যমগ্রামে প্রোমোটোর খুনের নেপথ্যে কারা ? খুনের নেপথ্যে কি সিন্ডিকেট ও জমিজমার দখলদারির কারণ লুকিয়ে রয়েছে ? নাকি কাঁচা টাকার কর্তৃত্বের লোভেই কি শেষ পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের রোষানলে পড়ে খুন হতে হল প্রোমোটার অশোক সর্দারকে ? খুনের পর এমনই একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে বিভিন্ন মহল থেকে । এই প্রশ্ন আরও জোরালো করেছে নিহত ব্যক্তি প্রমোটিং ব্যবসার পাশাপাশি সম্প্রতি জমি কেনাবেচার সঙ্গেও হাত পাকিয়েছিলেন ।

খুনের আগে ঘটনাস্থানে আততায়ীদের সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয় ওই প্রোমোটারের । স্থানীয় সূত্রের খবর, "সে চিৎকার করে বলতে থাকে, তোরা কি আমায় খুন করবি ?"এরপরই গুলির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায় । খুব কাছ থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা । গুলিতে একপ্রকার ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাঁর শরীর । ঘটনাস্থানেই মৃত্যু হয় প্রোমোটারের । প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলার বয়ান থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে ।

সিন্ডিকেট ও জমিজমার দখলদারি নিয়ে মধ্যমগ্রামে খুন নতুন কিছু নয় । খুন, বোমা ও গুলি যেন একসময় রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বারাসত শহর ঘেঁষা মধ্যমগ্রামে । 2015 সালের 7 মে মধ্যমগ্রাম-সোদপুর রোডের ফ্লাইওভারের কাছে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে । সেদিন রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় আততায়ীরা বাইকে এসে গুলি করে খুন করে বাবু সেন ও নাঙ্কাই নামে দুই যুবককে । এই ঘটনার বছর দুয়েক বাদেই রঞ্জন দাস নামে এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা । গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় সেই সময় বরাত জোরে প্রাণে বাঁচেন তিনি । সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও খুনের ঘটনা ঘটে মধ্যমগ্রাম শহরের বুকে । সালটা 2018 সালের 2 ফেব্রুয়ারি । সেদিন প্রকাশ্য দিবালোকে সেলুনের মধ্যে ঢুকে গৌতম নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করা হয় । সেই বছরের 29 জুলাই তৃণমূলের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সুধীর দাসকে গুলি করে খুন করে আততায়ীরা । এরপর 2019 সালের 9 সেপ্টেম্বর ভরসন্ধ্যায় তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা । বোমা ও গুলিতে জখম হন যুব তৃণমূল নেতা বিনোদ সিং । আহত হন তাঁর সঙ্গে থাকা দলীয় কর্মী দীপক বসুও । এই সমস্ত ঘটনার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই কারণ হিসেবে উঠে এসেছিল সিন্ডিকেট ও জমিজমার দখলদারির তথ্য । এর আগে ও পরে বিভিন্ন হামলা এবং খুনের চেষ্টার ঘটনার সাক্ষীও থেকেছে মধ্যমগ্রাম ।

মঙ্গলবার আবারও খুনের ঘটনা সামনে আসায় সেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম ও জমি কেনাবেচার কাঁচা টাকার তত্ত্বই আরও জোরালো করেছে । এর পিছনে রয়েছে আরও একাধিক তথ্য । বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের ধারণা, ভৌগোলিক দিক থেকে মধ্যমগ্রাম শহর ও পঞ্চায়েত এলাকা অবস্থান দমদম বিমানবন্দরের কাছেই । রাজারহাট ও নিউটাউন শিল্প তালুকের দূরত্বও খুব বেশি দূর নয় । ফলে, গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় চড়চড় করে জমির দাম বাড়ছে । জমি কিনে বিভিন্ন সংস্থা আবাসন ও কারখানা গড়ে তুলছে । কেউ কেউ আবার কম দামে নিচু জমি কিনে তাতে মাটি দিয়ে উঁচু করে বিক্রি করছে বেশি দামে । ফলে দাপট বাড়ছে সিন্ডিকেটের । আর তার দখলদারি ঘিরে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম দিন দিন বেড়ে চলেছে মধ্যমগ্রাম শহর এলাকায় । বাধা ও পথের কাঁটা সরাতে খুন করতেও হাত কাঁপছে না তাদের । এদিকে, প্রোমোটার অশোক সর্দার খুনের 24 ঘন্টা পরও অধরা আততায়ীরা ।

অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে নিহত প্রোমোটারের পরিবারের তরফে মধ্যমগ্রাম থানায় খনের অভিযোগ দায়ের করা হয় । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়েছে তদন্ত । এই বিষয়ে বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "তদন্ত চলছে । খুনের কারণ ও ঘটনায় কারা জড়িত সেবিষয়ে তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে । আততায়ীদের ধরতে চেষ্টার কোনও কসুর করা হচ্ছে না । আশা করা যায় শীঘ্রই তাতে সফলতা মিলবে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.