বনগাঁ, 12 ফেব্রুয়ারি: বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় হচ্ছে না এলাকার রাস্তা। বাম আমলে শেষবার রাস্তায় ইট পড়েছে। তারপর বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও রাস্তা হয়নি (Bad Road Condition)। রাস্তা চাইলে গ্রামবাসীদের শুনতে হয়েছে তৃণমূল ক্ষমতায় আসলে রাস্তা করা হবে। ফলে বনগাঁ লোকসভার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের কনভয় আটকে রাস্তার দাবি করলেন গ্রামের বাসিন্দারা। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার বনগাঁ থানার চাঁদা জামতলা এলাকায়। রাস্তা পরিদর্শন করে সংস্কারের আশ্বাস দিলেন মন্ত্রী।
জানা গিয়েছে, এদিন বাগদার আউলডাঙাতে একটি সভায় যোগ দিতে বনগাঁ বাগদা রোড ধরে যাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁ লোকসভার সংসদ শান্তনু ঠাকুর। চাঁদা জামতলা এলাকায় গ্রামবাসীরা রাস্তা আটকে শান্তনু ঠাকুরের কনভয় দাঁড় করান। গ্রামবাসীদের দেখে গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের দিকে হাত জোড় করে এগিয়ে যান মন্ত্রী। গ্রামবাসীরাও সৌজন্যে বিনিময়ের পর শান্তনু ঠাকুরের কাছে রাস্তার দাবি জানান। তাঁদের দাবি মতো এলাকার রাস্তা পরিদর্শন করেন শান্তনু। পরবর্তীতে গ্রামবাসীদের রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দেন তিনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, আশেপাশের সমস্ত রাস্তা ঠিক হয়েছে। কিন্তু তাঁদের এলাকার প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার হচ্ছে না। তাঁদের দাবি, "পঞ্চায়েতে রাস্তার কথা বলতে গেলে তাঁদের বলা হয়, এলাকার মেম্বার বিজেপির। তৃণমূল ওখানে ক্ষমতায় না-আসলে তাঁরা রাস্তা করতে পারবেন না।" এলাকাবাসী আরও দাবি করেন, "তাঁরা রাজনীতির শিকার।" একথা শুনে শান্তনু ঠাকুর বলেন, "গ্রামবাসীদের কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়েছি। তাঁরা বলছেন তৃণমূলকে ভোট না-দিলে নাকি রাস্তা করে দেবে না। পঞ্চায়েত যদি এইভাবে রাজনৈতিক ব্ল্যাকমেল করে তাহলে এলাকার উন্নয়ন হবে না। আমি আমার তহবিল থেকে রাস্তা করে দেওয়ার কথা বলেছি। নিয়ম মেনে এই রাস্তার জন্য আমি জেলাশাসককে জানাব। সেই চিঠি গ্রামবাসীদের দিয়ে দেব। পঞ্চায়েতকে এই রাস্তা করে দিতে হবে।"
আরও পড়ুন: বাবুঘাটে গঙ্গা আরতিতে বাধা দেওয়ায় রয়েছে ষড়যন্ত্র, মন্তব্য শান্তনু ঠাকুরের
গাঁড়াপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সুশান্ত দত্ত গ্রামবাসীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে বলেন, "আমারা বিজেপি মেম্বারের এলাকাতেও কাজ করছি। এই রাস্তা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে করা সম্ভব না, তাই নতুন অর্থবর্ষে ব্লকে পাঠানো আছে।" শান্তনু ঠাকুরের মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "শান্তনু ঠাকুর যদি টাকা দেয় তাহলে আমরা রাস্তা করে দেব।" প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে গোপালনগরের নহাটায় দিদির দূত কাকলি ঘোষ দস্তিদারের কাছে গ্রামবাসীরা রাস্তার দাবি করলে তিনি তাঁদের বলেছিলেন বিজেপি মেম্বার হওয়ায় গ্রামবাসীদের এই অবস্থা। গ্রামবাসীদের তিনি বলেছিল, আগে ভোট পরে রাস্তা। আজ গ্রামবাসীদের অভিযোগ সেই তথ্যই জোড়ালো হল। যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলমত না-দেখে উন্নয়ন করার কথা বলছেন। সেখানে দলের একংশের নেতাদের এমন মনভাবে প্রশ্ন উঠছে, বিরোধীদের ভোট দিলে কি এলাকায় উন্নয়ন হবে না? সাধারণ মানুষ কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবেন!