বারাসত, 9 ডিসেম্বর : বনগাঁয় মুখ্যমন্ত্রীর সভা চলাকালীন আচমকাই জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের পদে থেকে সরে দাঁড়ালেন তৃণমূল নেতা রতন ঘোষ। এদিন বিকেলে বারাসতে এসে জেলা পরিষদ ও জেলাশাসকের দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দেন ওই তৃণমূল নেতা। তবে, কী কারণে হঠাৎ তাঁর এই পদক্ষেপ, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ। সূত্রের খবর, দলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল তৃণমূল নেতা রতন ঘোষের। জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকলেও তিনি সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারছিলেন না বলে তাঁর ক্ষোভ ছিল বলে জানা যায়। সেই কারণেই সম্ভবত ওই নেতা এই পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হওয়ায় ইতিমধ্যে একের পর বিধায়ক, মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী , রাজীব বন্দোপাধ্যায়, শীলভদ্র দত্ত, বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়ার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। শুভেন্দুর ক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেও দল সফল হয়নি । অপরদিকে রাজীব বন্দোপাধ্যায়, বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত বেসুরো হতেই তাঁদের ক্ষোভ সামাল দিতে তৎপর হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব । যদিও ক্ষুদ্ধ তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত ইতিমধ্যে সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আর দলের হয়ে একুশের নির্বাচনে লড়বেন না। তাঁর মানভঞ্জনে ব্যারাকপুরের বাড়িতে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয় জেলা তৃণমূলের সভাপতি ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। দলের বিক্ষুব্ধ হয়ে একের পর এক বিধায়ক, মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতাদের নিয়ে যখন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নাজেহাল ঠিক তখনই জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের পদত্যাগ নিঃসন্দেহে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়বে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে বিধানসভা ভোটের মুখে যেভাবে ক্ষোভের তালিকা লম্বা হচ্ছে, তাতে তৃণমূলের মধ্যে ফাটল আরও চওড়া হওয়ার ইঙ্গিত ৷
আরও পড়ুন :দুপুরে রানিনগরে সভা অধীরের
বনগাঁয় মুখ্যমন্ত্রীর সভা শেষ হতে না হতে এদিন বিকেলে আচমকাই সবার অলক্ষ্যে বারাসতে চলে আসেন বনগাঁর পোড় খাওয়া তৃণমূল নেতা ও জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ রতন ঘোষ। জেলা পরিষদ ও জেলাশাসকের দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দেন ওই তৃণমূল নেতা। তবে, এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি মুখ খুলতে চাননি। ঘনিষ্ঠ মহলের খবর, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা দেখালেও জেলা তৃণমূলের একাংশের কাজকর্মে ক্ষুব্ধ । জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকলেও স্বাধীনভাবে তিনি কাজ করতে পারছিলেন না। দলকে জানিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা। শেষমেশ পদত্যাগের পথেই হাঁটলেন দলের বিক্ষুদ্ধ এই নেতা।