দেগঙ্গা, 8 জানুয়ারি: অশোকনগরের খনিজ তেল উত্তোলন কেন্দ্রের সম্প্রসারণের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায়। ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ বিডিওর কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক শাহাজি।
বৃহস্পতিবার দেগঙ্গার চাকলা পঞ্চায়েত এলাকায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য মাটি পরীক্ষার কাজ করছিল ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ। সেই কাজ চলাকালীনই ক্ষতিপূরণের দাবিতে কাজ বন্ধ করিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল নেতা ও চাষিদের বিরুদ্ধে। গতকাল বিকেলের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়। ওএনজিসির পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছে দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিকের কাছে। বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, “ওএনজিসির অভিযোগ পেয়েছি। তা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওএনজিসির পক্ষ থেকে বেশ কিছুদিন ধরেই চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের অনুসন্ধ্যান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাথরঘাটা, মঞ্জিলহাটি, সুবর্ণপুর, কাঁঠালপাড়া, সুবর্ণপুর, চাকলা, রায়কোলা ও রামনগর গ্রামে এই কাজ চলছে। এদিন মাটি পরীক্ষার কাজ চলছিল। কাজ চলাকালীনই জমির ফসলের যতটুকু ক্ষতি হচ্ছে, সেই টাকাও ওএনজিসির কর্তৃপক্ষ চাষিদের দিয়ে দিচ্ছিল।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার চাকলা গ্রামের একাংশ চাষি ক্ষতিপূরণের টাকায় সন্তুষ্ট হননি। সেই সময় দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক শাহাজির অনুগামীরা সেখানে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন। তৃণমূলের তরফে কয়েকজন চাষিকে আলাদা করে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনায় তৃৃণমূূলের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাদের নেতৃত্বে চাষিরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের দাবি, ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ নিজেরা চাষি ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে কাজ করুক। কেন দলের একাংশকে নিয়ে তাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেন বাইরের লোককে দিয়ে টাকার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে ঝামেলার সময় কাজ করতে আসা ওএনজিসি কর্মীদের দীর্ঘ সময় আটকে রাখার পাশাপাশি, তাদের বিভিন্ন সরঞ্জাম ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ওএনজিসির ক্রপ কমপেনসেশন আধিকারিক উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, “আমরা জেলার বিভিন্ন জায়গা জুড়ে অনুসন্ধানের কাজ করছি। ওই কাজ করার সময় চাষিদের শস্যের ক্ষতি হলে তা খতিয়ে দেখে, সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিপূরণের টাকাও দেওয়া হচ্ছে। চাকলার কিছু ব্যক্তি সাধারণ মানুষকে খেপিয়ে সমস্যা তৈরি করেছে। এদিন আমাদের কর্মীদের আটকে রাখা হয়েছিল। কিছু সামগ্রী এদিন ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা বিডিওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক সাহজি বলেন, ”শুনেছি কিছু মানুষ ওএনজিসির আধিকারিকদের কাছে টাকা চেয়েছিল। টাকা না পাওয়ায় এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি আশা করছি পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেবে।"