বসিরহাট, 26 সেপ্টেম্বর: জমি বিবাদের জেরে তৃণমূল কর্মীকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল দলেরই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে । মৃতের নাম সিরাজুল মোল্লা । বয়স 32 । এই ঘটনা ঘিরে মঙ্গলবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় উত্তর 24 পরগনার বসিরহাট পৌরসভার 16 নম্বর ওয়ার্ডে । খুনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারি চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন নিহত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের লোকজন । অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমেছে বসিরহাট থানার পুলিশ । শুধু জমি বিবাদের জেরে এই খুন, নাকি এর পিছনে পুরনো কোনও শত্রুতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
বসিরহাট শহরের হরীশপুর চরপাড়ায় সিরাজুলের পরিবারের নিজস্ব একটি জমি রয়েছে । এলাকায় তিনি তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবেই পরিচিত । তা সত্ত্বেও সেই জমিতে তাঁর দলের অপর গোষ্ঠীর লোকজনের নজর পড়েছিল । অভিযোগ, ওই তৃণমূল কর্মীর পরিবারের জমি দখল করে সেখানে পার্টি অফিস বানাতে চাইছিলেন কয়েকজন নেতা । সেই মতো সপ্তাহ খানেক আগে সিরাজুলের জমিতে দলীয় পতাকা টাঙিয়ে দেন বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজন । তা দেখে ওই তৃণমূল কর্মী প্রতিবাদ করলে তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ । তাঁকে লোহার রড দিয়েও পেটানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে ৷
রক্তাক্ত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ জমিতেই পড়ে ছিলেন সিরাজুল । এরপর খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত নিয়ে যান বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে । যদিও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে আহত সিরাজুলকে বসিরহাট হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে । সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর ।
আরও পড়ুন: প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে খুন তাঁরই মা! মৃত্যু ঘিরে রহস্য দত্তপুকুরে
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সরকারি ঘর অনুমোদিত হয়েছিল ওই তৃণমূল কর্মীর পরিবারের নামে । সরকারের সেই অনুমোদিত ঘরই তৈরির তোড়জোড় চলছিল ওই জমিতে । কিন্তু ঘর বানানোর আগেই সবকিছু শেষ । এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায় । পাড়া-প্রতিবেশীরা বলছেন, নিজের জমি রক্ষা করতে গিয়ে দলেরই অপর গোষ্ঠীর হাতে প্রাণ দিতে হল তৃণমূল কর্মী সিরাজুলকে ।
এই বিষয়ে নিহত সিরাজুলের মা নুরন্নাহান খাতুন ঢালি বলেন, "সরকারি ফান্ডে ঘর তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল ওই জমিতে । কিন্তু সেই জমিতেই তৃণমূলের পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয় । বিষয়টি নজরে আসায় সিরাজুল সেখানে গিয়েছিলেন প্রতিবাদ করতে । জমিতেই তাঁকে মেরে আধমরা করে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান ফিরোজ, রবিউল-সহ আরও অনেকে । ছেলের খুনিদের কঠোর শাস্তি হোক সেটাই চাই ৷"
এ নিয়ে মোল্লা মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "জমিটি সিরাজুলেরই । তৃণমূলের অপরপক্ষ চাইছিল জমিটি দখল করে পার্টি অফিস বানাতে ।তারপর কী হয়েছে না হয়েছে সেটা বলতে পারব না । পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিক সেটাই চাইছি আমরা ৷"
এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ।