হায়দরাবাদ, 9 জানুয়ারি: 'সিনেবাপ' যাঁরা দেখেন তাঁরা মৃন্ময়কে চেনেন না এমনটা নয় ৷ ইউটিউবার হিসাবে বেশ নামডাক করেছেন তিনি ৷ তবে স্বপ্ন ছিল সিনেমার হিরো হওয়ার ৷ এই বছর সেই ইচ্ছাও পূরণ হতে চলেছে ৷ জাতীয় স্তরে পুরস্কার প্রাপ্ত 'ও অভাগী' ছবির পরিচালকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন মৃন্ময় ৷
অনির্বাণ চক্রবর্তী পরিচালিত 'খাঁচা' সিনেমায় মুখ্যচরিত্রে প্রথমবার বড় পর্দায় দেখা যাবে মৃন্ময়কে ৷ ছবি প্রযোজনা করেছে স্বভূমী এন্টারটেন্মেন্ট ও ডঃ প্রবীর ভৌমিক ৷ সহ-প্রযোজক হিসাবেও রয়েছে মৃন্ময়ের সিনেবাপ এন্টারটেইনমেন্ট ৷ অনেকেরই মনেই প্রশ্ন থাকতে পারে জনপ্রিয় ইউটিউবার হিসেবে মেইনস্ট্রিম কমার্শিয়াল সিনেমায় কীভাবে প্রত্যাবর্তন হল?
মৃন্ময় বলেন, " হিরো হওয়ার ইচ্ছা আমার বহু বছরের। এক দশকের ওপরে অভিজ্ঞতা ৷ 2012 সাল থেকে মিডিয়াতে কাজ শুরু করেছি, প্রথমে রিয়েলিটি শো, তারপর ইউটিউব। কিন্তু তারও আগে থেকে আমার স্বপ্ন হিরো হওয়ার। কিন্তু মেইনস্ট্রিম কমার্শিয়াল সিনেমায় হিরো হওয়া মুখের কথা নয়। তার জন্য - সঠিক প্রিপারেশন, সঠিক মানুষদের সান্নিধ্যে আসা, আর সঠিক সময়টা খুব দরকার। ইউটিউবটা আমার প্যাশন এবং প্রফেশন, কিন্তু হিরো হওয়াটা আমার অ্যাম্বিশন। এটা 2025-এ পূর্ণ হতে চলেছে ৷"
ডিরেক্টর অনির্বাণ চক্রবর্তীর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা
মৃন্ময়ের কথায়, "পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী ভীষণ পজিটিভ, জয়ফুল একজন মানুষ। খুব মজা করেন ৷ কিন্তু কাজের সময় ততটাই সিরিয়াস। খুব শার্প ব্রেইনের, হার্ড ওয়ার্কিং একজন পরিচালক। অনেক কিছু শিখেছি তাঁর থেকে। অন ক্যামেরায় সে আমার ক্যাপ্টেন, কিন্তু অফ ক্যামেরায় খুব ভালো বন্ধু আমরা। আর স্বভূমি এন্টারটেইনমেন্ট প্রোডাকশন হাউসে আমি খুব হোমলি ফিল করি। প্রযোজক ডঃ প্রবীর ভৌমিক বাবুকে আন্তরিক ধন্যবাদ। হিরো হিসেবে নতুন ছেলেকে লঞ্চ করার রিস্ক সবাই নিতে চায় না। সেখানে আমার মতো টলিউডের বহিরাগত, ইন্ডাস্ট্রিতে যার কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড নেই, সেই রকম একজনের ওপর ভরসা উনি করেছেন। আর আমি এই ভরসার যোগ্য প্রতিদান দেবই, এই আত্মবিশ্বাস আছে। আর একজনের কথা বলতেই হবে। এই প্রোডাকশনের এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সে ছাড়া খাঁচা শুরুই হতো না।
অভিনেতা হিসাবে প্রস্তুতি
খাঁচা ছবিতে মৃন্ময়ের চরিত্রের নাম কমলেশ ৷ ইতিমধ্যেই ছবির লুক দেখে চমকে গিয়েছেন অনুরাগীরাও ৷ হ্যান্ডসাম হাঙ্ক মৃন্ময় যেভাবে নিজের উপর পরিশ্রম করেছেন তা সিনেমার লুকেই স্পষ্ট ৷ মৃন্ময় বলেন, "কমলেশ চরিত্রের জন্য একটা মাসকুলার ফিগারে ট্রান্সফর্মেশন দরকার ছিল।
তার জন্য শুটিং-এর আগের 6 মাস মেইনস্ট্রিম স্পোর্টসম্যানদের মতো একটা হার্ড রুটিন আর হার্ড ডায়েটিং ফলো করতে হয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। আমি ডিস্ট্রিক্ট বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপে 'মি. কুচবিহার' হয়েছিলাম কলেজ লাইফে। আর 'মি. নর্থ বেঙ্গল' প্রতিযোগিতায় সেকেন্ড হয়েছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা খুব কাজে লেগেছে এই ট্রান্সফরমেশন ট্রেনিং-এ।" |
অভিনেতা আরও বলেন, "টাফ রুটিনে আমাদের কুল ডিরেক্টর বিরিয়ানি দিয়ে লাঞ্চ করতে করতে আমাকে ফোন করে খোঁজ নিতেন আমি বয়েলড চিকেন খেয়েছি কি না! তবে এখন কমার্শিয়াল সিনেমার সেই অধ্যায় কিছুটা হারিয়ে গেছে, যেখানে হিরোর লুক আর বিদেশে 2-3টাে ঝকঝকে গান হলেই সিনেমা হিট। এখন এগুলোর পাশাপাশি অভিনয়ের প্রতিভা ও খুব দরকার ইমপ্যাক্ট ফেলার জন্য। সেই ওয়ার্কশপও হয়েছে, ডিরেক্টর আমাকে অনেক গাইড করেছে। আমার কাছে খাঁচা-র প্ল্যানিং থেকে শুরু করে তার প্রি-প্রোডাকশন, শুটিং, এই পুরো জার্নিটাই গোল্ডেন মেমোরি।"
সিনেমায় সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় ৷ গান গেয়েছেন সিধু, দুর্নিবার ৷ আসলে ইউটিউবার থেকে সিনে পর্দায় জার্নি, স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে মৃন্ময়ের ৷ এখন দেখার, অনুরাগী ও দর্শকদের কাছে অভিনেতা হিসাবে কতটা মন জয় করতে পারেন 'সিনেবাপ' মৃন্ময় ৷