বারাসত, 8 ফেব্রুয়ারি : একদিকে ঠাকুর দালানে বসে মায়ের গানের সুরে তাল দেওয়া । অন্যদিকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা, তাঁদের অভাব-অভিযোগ শোনা । বাম দুর্গ বলে পরিচিত বারাসত পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডে এভাবেই প্রচার সারলেন তৃণমূল প্রার্থী দেবব্রত পাল । বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে আঘাত আনতে তরুণ প্রজন্মেই এবার ভরসা রেখেছে শাসকদল (Debabrata Paul is keen win in ward no 10 of Barasat Municipality) ।
দলের ভরসা রাখতে বদ্ধপরিকর তিনিও ৷ ফলে প্রার্থী হওয়ার পর প্রচারে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না তৃণমূল প্রার্থী (TMC Candidate Debabrata Paul) । মূলত, চারবারের বাম কাউন্সিলরের অনুন্নয়নকে হাতিয়ার করেই ভোটের প্রচারে ঝাঁপিয়েছেন তিনি । যদিও অনুন্নয়নের অভিযোগ মানতে নারাজ প্রাক্তন কাউন্সিলর, বাম প্রার্থী রত্না ভট্টাচার্য । পাল্টা তৃণমূল প্রার্থীকে বহিরাগত বলে আক্রমন শানিয়েছেন তিনিও ।
বারাসত পৌরসভার 35টি ওয়ার্ডের মধ্যে গতবার যে 7টি ওয়ার্ড বামেদের দখলে গিয়েছিল তারমধ্যে 10 নম্বর ওয়ার্ডটিও রয়েছে ।দীর্ঘদিন ধরেই এই ওয়ার্ডটি হাতছাড়া তৃণমূলের । পরপর চারবার অর্থাৎ 20 বছর ধরে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের রত্না ভট্টাচার্য । এবারও এই ওয়ার্ড থেকে তাঁকেই বামেদের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে । লড়াইয়ে রয়েছেন বিজেপির কৌশিক মজুমদারও
তবে সবার নজর তৃণমূলের তরুণ মুখ দেবব্রত পালের দিকেই । বারাসতে একটি বেসরকারী গ্যাস সরবরাহ সংস্থার ডিস্ট্রিবিউটরশিপও রয়েছে তাঁর । সেই সুবাদে এলাকায় পরিচিত মুখ দেবব্রত । ফলে তাঁকে প্রার্থী করেই এই ওয়ার্ডে ঘাসফুল ফোটাতে মরিয়া শাসকদল । দেবব্রত পাল বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এই ওয়ার্ডে বাম কাউন্সিলর থাকা সত্ত্বেও সার্বিক কোনও উন্নয়ন হয়নি । রাস্তাঘাট, নিকাশি নালার সংস্কার হোক কিংবা পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা । সবকিছুতেই পৌরসভার অন্যান্য ওয়ার্ডের থেকে পিছিয়ে রয়েছে 10 নম্বর ওয়ার্ড । কোনও উন্নয়নের ছোঁয়াই পৌঁছায়নি এখানে । পৌরসভা প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে সমহারে উন্নয়নের টাকা বণ্টন করলেও অনেক ক্ষেত্রেই উন্নয়নের সেই টাকা ফিরে গিয়েছে । আসলে প্রাক্তন বাম কাউন্সিলরের উন্নয়ন নিয়ে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে । সেটা আমরা প্রচারে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি ।’’
আরও পড়ুন : "আমি অপমানিত", নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়ে বললেন গোবরডাঙা পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান
পালটা দিয়েছেন বাম প্রার্থীও ৷ তিনি বলেন, ‘‘উন্নয়ন না হলে প্রতিবার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করত না । আসলে তৃণমূলের কাছে কোনও ইস্যু নেই । তাই এই ধরণের অবাস্তব অভিযোগ করছে । যিনি অভিযোগ করছেন তিনিই তো ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন ।বহিরাগত একজনকে প্রার্থী করে তৃণমূল ভোটের ময়দানে নেমেছে । তাঁর কোনও অভিযোগ মানুষ বিশ্বাস করবে না । এবারও মানুষ আমাকে ভোট দিতে পঞ্চম বারের জন্য কাউন্সিলর করবে । এই বিষয়ে আমি একশো শতাংশ নিশ্চিত ।’’