বসিরহাট, 11 অক্টোবর : করোনা পরিস্থিতিতে এ বছরও নিরঞ্জনে ইছামতীতে বন্ধ থাকবে দুই বাংলার মিলন উৎসব । তবে নির্দিষ্ট নিয়ম এবং করোনা বিধি মেনে দুই বাংলারই প্রতিমা নিরঞ্জন হবে । সেক্ষেত্রে দুই দেশের কোনও পুজো উদ্যোক্তারা ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবেন না । ইতিমধ্যেই দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । পুজোর ভাসানে দুই বাংলার পরস্পরের মিলন থেকে বঞ্চিত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপের সুর বসিরহাটের টাকিতে ৷
দু'বছর আগে প্রতিমার নিরঞ্জন উপভোগ করতে দর্শনার্থীদের তিল ধারণের জায়গা থাকত না টাকির ইছামতীর পাড়ে । দূর-দূরান্ত থেকে বহু পর্যটকও ছুটে আসতেন বিশেষ এই দিনে । শুধু দুই বাংলার মিলন চাক্ষুষ করতে ৷ নিরঞ্জন উপলক্ষে আগে থেকেই টাকির ছোট-বড় হোটেলগুলো বুকিং হয়ে যেত । দু'পয়সা আয়ের মুখ দেখতেন সেখানকার হোটেল ব্যবসায়ীরা ।
আরও পড়ুন : Durga Puja : চতুর্থীতেই শুরু নিরঞ্জনের প্রস্তুতি, ঘাট পরিষ্কারে নামল পৌরনিগম
কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জেরে একদিকে যেমন মানুষের রুটিরুজিতে টান পড়েছে, তেমনই অন্যদিকে বিভিন্ন ব্যবসার ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়েছে । বাদ যায়নি হোটেল ব্যবসাও । করোনার জেরে বিগত দু'বছর ধরেই মন্দা যাচ্ছে হোটেল ব্যবসায় । যদিও, পুজোর মুখে ফের ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া হোটেল ব্যবসায়ীরা । তবে গতবারের মতো এবারও ইছামতীতে প্রতিবেশী দুই দেশের মিলন উৎসব বন্ধ থাকায় টাকির হোটেলগুলিতে পর্যটকদের ভিড় সেই অর্থে নেই বললেই চলে । তা সত্ত্বেও নদীর পাড়গুলিতে করোনা বিধি মেনে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের প্রতিমা দর্শনের জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে টাকি পৌরসভার তরফে ।
ইছামতীর এপারে টাকি, ওপারে বাংলাদেশের টাউন শ্রীপুর । এই দুই জায়গার দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের দিনে এক হত দুই বাংলা । আনন্দে মেতে উঠতেন দুই বাংলার মানুষ । শতাব্দী প্রাচীন এই ইতিহাস দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে ৷ যা উপভোগ করার জন্য রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করতেন টাকিতে । কিন্তু করোনা সেই মিলন উৎসবে বাধ সেধেছে ৷ গতবারের মতো এবারও নিরঞ্জন উপলক্ষে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে ।
আরও পড়ুন : Durga Puja : গঙ্গার দূষণ ঠেকাতে নিরঞ্জনের নয়া ভাবনা কলকাতা পৌরনিগমের
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছরও নিরঞ্জনে কোনও দর্শনার্থী ইছামতীতে নামতে পারবেন না । পুজো উদ্যােক্তারাই কেবল নদীতে নামতে পারবেন ৷ নৌকায় আটজনের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না । নিরঞ্জনে শব্দবাজি না ফাটাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের ।
এছাড়া নিরঞ্জন উপলক্ষে ইছামতীর পাড়ে যেটুকু জমায়েত হবে, তা সবটাই করতে হবে করোনার নিয়ম বিধি মেনে । এমনই সব নির্দেশিকার কথা ইতিমধ্যে প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের ।
এদিকে করোনা পরিস্থিতিতেও সীমান্ত সুরক্ষায় কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (BSF) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB) ।সেই কারণেই কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে প্রশাসন ।
আরও পড়ুন : Durga Puja 2021 : বেলজিয়াম কাচের ঝাড়বাতি সুরুল জমিদারবাড়ির পুজোর আকর্ষণ