ETV Bharat / state

হিন্দু হয়েও পড়েন নমাজ়, আগলে রেখেছেন মসজিদ ! - barasat

ইদের আগে সারা রাত জেগে মসজিদ সাজান বারাসতের পার্থসারথী বোস । মসজিদের ভালো-মন্দ সকল কাজেই রয়েছেন তিনি । বছরের পর বছর ধরে চড়াই-উৎরাইয়ে নিজের বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন প্রাচীন মসজিদ ।

সম্প্রীতি
author img

By

Published : Jun 5, 2019, 7:55 PM IST

Updated : Jun 5, 2019, 8:08 PM IST

বারাসত, 5 জুন : ফুলের গেট, রঙিন কাগজে সাজানোটা একেবারে ঠিকঠাক হওয়া চাই । কোনও কিছুর যেন খামতি না থাকে । ইদের আগে রাত জেগে মসজিদ সাজান তিনি । শুধু তাই নয়, মসজিদের ভালো-মন্দ সকল কাজেই রয়েছেন যিনি, তিনি মুসলিম নন, হিন্দু । এক বছর দু'বছর নয়, বছরের পর বছর ধরে চড়াই-উতরাইয়ের মাঝেও বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন প্রাচীন মসজিদ ।

ষোড়শ শতক । শের শাহ তখন দিল্লির তখতে । বারাসতে গড়ে ওঠে আমানতি মসজিদ । কয়েক শতাব্দী ধরে সেখানে ধর্মপালন করে আসছিলেন মুসলিমরা । তারপরের ইতিহাস পাওয়া না গেলেও, অবস্থার মোড় ঘোরে গত শতকে । মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগে ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর হয় । দু'দেশের চুক্তির পর ওপারের হিন্দুরা এপারে চলে আসেন । তেমনই এপারের মুসলিমরা ওপারে চলে যান । বারাসতের আমানতি মসজিদ ও সেই সংলগ্ন জমি-জমাও হস্তান্তরিত হয়ে যায় । নতুন মালিক হয় বোস পরিবার । সেই সময় ধর্মীয় ও রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে দেশে । অনেকেই বলেছিল মসজিদ না রাখতে । কিন্তু, মন মানেনি পরিবারের কর্তা নিরোধকৃষ্ণ বোসের । বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন । মুছে যেতে দেননি ইতিহাস ।

ধর্মীয় রীতিনীতি আলাদা । সংস্কৃতিও এক নয় । তবুও মসজিদটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে বোস পরিবার । বর্তমানে মসজিদের দেখাশোনা করেন নিরোধকৃষ্ণ বোসের নাতি পার্থসারথীবাবু । নিজের ধর্মপালনের পাশাপাশি ভোলেননি মসজিদের দায়িত্বও । মুসলিম ভাইদের সঙ্গে তাঁর নিত্য নমাজ় পড়া চাই । আর ইদ এলে তো কথাই নেই । রাত থাকতে মসজিদ সাজানোর দায়িত্ব নিয়ে নেন নিজের কাঁধে ।

barasat
আমানতি মসজিদ

মসজিদের বর্তমান ইমাম আখতার আলি । তিনি বলেন, "ধর্মের আগে আমরা সবাই মানুষ । মানুষকে যে ভালোবাসতে পারে সেই ধার্মিক হতে পারে । আমরা প্রত্যেকেই এই উৎসব সুষ্ঠুভাবে পালন করে চলেছি । ওঁদের(পার্থবাবু) সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে । ওঁরা আমাদের অভিভাবক । উনি আমার সঙ্গে নমাজ় পড়েন । পার্থবাবু হিন্দু না মুসলমান আমি বুঝি না । শুধু বুঝি উনি একজন মানুষ।"

"আমাদের এখানে কোন‌ও বিভেদ নেই।" সাফ জানালেন পার্থসারথী বোস । তিনি আরও বলেন, "হিন্দু ও মুসলমান উভয়েই পরিবারের মতো রয়েছি । আমরা সবাই ভাই ভাই । আমাদের সম্পর্কে রাজনীতি, জাতি, ধর্ম স্পর্শ করতে পারেনি । ধর্ম আলাদা, রাজনীতি আলাদা, সকলের শেখা উচিত ।"

মসজিদের ইমাম ও পার্থসারথী বোসের বক্তব্য

একদিকে যখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বেথুন কলেজ । কলেজে ভরতির অনলাইন আবেদনপত্রে ধর্ম পূরণের জায়গায় অন্য সব ধর্মের অপশনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে 'হিউম্যানিটি' অর্থাৎ 'মানবতা' অপশন । ঠিক তখনই সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ হিসেবে উঠে আসল বারাসতের আমানতি মসজিদ । যেখানে দুই ধর্মের ভাইয়েরা সগর্বে বলতে পারেন, "মোরা একবৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু-মুসলমান ।"

বারাসত, 5 জুন : ফুলের গেট, রঙিন কাগজে সাজানোটা একেবারে ঠিকঠাক হওয়া চাই । কোনও কিছুর যেন খামতি না থাকে । ইদের আগে রাত জেগে মসজিদ সাজান তিনি । শুধু তাই নয়, মসজিদের ভালো-মন্দ সকল কাজেই রয়েছেন যিনি, তিনি মুসলিম নন, হিন্দু । এক বছর দু'বছর নয়, বছরের পর বছর ধরে চড়াই-উতরাইয়ের মাঝেও বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন প্রাচীন মসজিদ ।

ষোড়শ শতক । শের শাহ তখন দিল্লির তখতে । বারাসতে গড়ে ওঠে আমানতি মসজিদ । কয়েক শতাব্দী ধরে সেখানে ধর্মপালন করে আসছিলেন মুসলিমরা । তারপরের ইতিহাস পাওয়া না গেলেও, অবস্থার মোড় ঘোরে গত শতকে । মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগে ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর হয় । দু'দেশের চুক্তির পর ওপারের হিন্দুরা এপারে চলে আসেন । তেমনই এপারের মুসলিমরা ওপারে চলে যান । বারাসতের আমানতি মসজিদ ও সেই সংলগ্ন জমি-জমাও হস্তান্তরিত হয়ে যায় । নতুন মালিক হয় বোস পরিবার । সেই সময় ধর্মীয় ও রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে দেশে । অনেকেই বলেছিল মসজিদ না রাখতে । কিন্তু, মন মানেনি পরিবারের কর্তা নিরোধকৃষ্ণ বোসের । বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন । মুছে যেতে দেননি ইতিহাস ।

ধর্মীয় রীতিনীতি আলাদা । সংস্কৃতিও এক নয় । তবুও মসজিদটিকে বাঁচিয়ে রেখেছে বোস পরিবার । বর্তমানে মসজিদের দেখাশোনা করেন নিরোধকৃষ্ণ বোসের নাতি পার্থসারথীবাবু । নিজের ধর্মপালনের পাশাপাশি ভোলেননি মসজিদের দায়িত্বও । মুসলিম ভাইদের সঙ্গে তাঁর নিত্য নমাজ় পড়া চাই । আর ইদ এলে তো কথাই নেই । রাত থাকতে মসজিদ সাজানোর দায়িত্ব নিয়ে নেন নিজের কাঁধে ।

barasat
আমানতি মসজিদ

মসজিদের বর্তমান ইমাম আখতার আলি । তিনি বলেন, "ধর্মের আগে আমরা সবাই মানুষ । মানুষকে যে ভালোবাসতে পারে সেই ধার্মিক হতে পারে । আমরা প্রত্যেকেই এই উৎসব সুষ্ঠুভাবে পালন করে চলেছি । ওঁদের(পার্থবাবু) সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে । ওঁরা আমাদের অভিভাবক । উনি আমার সঙ্গে নমাজ় পড়েন । পার্থবাবু হিন্দু না মুসলমান আমি বুঝি না । শুধু বুঝি উনি একজন মানুষ।"

"আমাদের এখানে কোন‌ও বিভেদ নেই।" সাফ জানালেন পার্থসারথী বোস । তিনি আরও বলেন, "হিন্দু ও মুসলমান উভয়েই পরিবারের মতো রয়েছি । আমরা সবাই ভাই ভাই । আমাদের সম্পর্কে রাজনীতি, জাতি, ধর্ম স্পর্শ করতে পারেনি । ধর্ম আলাদা, রাজনীতি আলাদা, সকলের শেখা উচিত ।"

মসজিদের ইমাম ও পার্থসারথী বোসের বক্তব্য

একদিকে যখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বেথুন কলেজ । কলেজে ভরতির অনলাইন আবেদনপত্রে ধর্ম পূরণের জায়গায় অন্য সব ধর্মের অপশনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে 'হিউম্যানিটি' অর্থাৎ 'মানবতা' অপশন । ঠিক তখনই সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ হিসেবে উঠে আসল বারাসতের আমানতি মসজিদ । যেখানে দুই ধর্মের ভাইয়েরা সগর্বে বলতে পারেন, "মোরা একবৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু-মুসলমান ।"

sample description
Last Updated : Jun 5, 2019, 8:08 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.