বারাসত, 9 ফেব্রুয়ারি : অনৈতিকভাবে স্কুল শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশনি করছেন, এই অভিযোগে মঙ্গলবার জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন গৃহশিক্ষকরা। এদিন দুপুরে গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির ব্যানারে প্ল্যাকার্ড নিয়ে চলে এই বিক্ষোভ। তুমুল বিক্ষোভে কার্যত উত্তাল হয়ে ওঠে জেলাশাসকের দপ্তর চত্বর। বিক্ষোভের পর সংগঠনের এক প্রতিনিধিদল বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয় জেলাশাসকের দপ্তরে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলাশাসকের দপ্তরের ঠিক আগে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয় পর্যাপ্ত পুলিশও।
স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের তরফে আগেই নির্দেশিকা জারি হয়েছিল। অভিযোগ, সেই নির্দেশিকাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে স্কুল শিক্ষকদের একাংশ এখনও বহাল তবিয়তে প্রাইভেট টিউশনি করে চলেছেন। এনিয়ে বারবার সরব হয়েছেন গৃহ শিক্ষকদের সংগঠন গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতি। পথে নেমে একাধিকবার প্রতিবাদও জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু তারপরও অনৈতিক এই কাজ বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও অভিযোগ, আইন ভেঙেই স্কুল শিক্ষকদের একাংশ এই পেশাকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছেন। অথচ, প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। এমনই অভিযোগ গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির সদস্যদের৷ এরই প্রতিবাদে ও স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি বন্ধের দাবিতে মঙ্গলবার ফের বারাসতের রাস্তায় নামে ওই সংগঠন। এদিন প্রথমে মিছিল করে সংগঠনের সদস্যরা জমায়েত হয় জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে। সেখানেই প্লাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। গর্জে ওঠেন স্কুল শিক্ষকদের অনৈতিক এই কাজ নিয়েও। অশান্তি এড়াতে আগেই জেলাশাসকের দপ্তরের দু'দিকের রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয় পুলিশ প্রশাসনের তরফে। ছিল পর্যাপ্ত নিরাপত্তাও। ফলে,এদিন শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয় গৃহশিক্ষকদের ডিএম অফিস অভিযান।
এই বিষয়ে সংগঠনের জেলা নেতা দীপঙ্কর দাস বলেন, "2009 সালের আর টি অ্যাক্ট অমান্য করেই গৃহশিক্ষকদের একাংশ এখনও প্রাইভেট টিউশনি করে চলেছেন। আবার 2018 সালের ক্যালকাটা গেজেটের আইনও ঠিকঠাক ভাবে মানছেন না স্কুল শিক্ষকদের একাংশ। বেশ কয়েকবার এই বিষয়ে স্কুল পরিদর্শক থেকে শুরু করে জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। তা সত্বেও কোনও লাভ হয়নি। এরই প্রতিবাদে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে জেলাশাসকের দপ্তরে। আমরা চাইছি জেলাশাসক এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক। উনি আশ্বস্ত করেছেন বিষয়টি আলোচনা করে খতিয়ে দেখবেন। যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন৷"
আরও পড়ুন : ক্যানসার আক্রান্ত ছেলে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আশায় প্রশাসনের দরজায় মা
গৃহশিক্ষকতা বন্ধ না হলে আগামীদিনে স্কুল শিক্ষকদের বাড়ির সামনে ধরনায় বসারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গৃহশিক্ষকরা।