বারাসত, 14 অক্টোবর: বউবাজারে মেট্রোর ইস্ট ওয়েস্ট প্রকল্পে বিপর্যয়ের জন্য পরোক্ষভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী(Sujan Chakraborty slams Mamata Banerjee on Bowbazar Metro Crisis issue)। শুক্রবার বারাসতে সিপিএমের জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "ইস্ট ওয়েস্ট প্রকল্পের মূল ম্যাপে মেট্রোর বউবাজার রুট ছিল না । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ম্যাপ পরিবর্তন করে তাতে বউবাজার রুট সংযুক্ত করেছেন । এর মধ্যে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সংকীর্ণ রাজনীতি । সেই কারণেই সেখানকার মানুষদের আজ প্রতি মুহূর্তে বিপদের মুখে পড়তে হচ্ছে(Sujan Chakraborty slams Mamata Banerjee)। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর রুট পরিবর্তনই দায়ী ।"
বউবাজারে মেট্রোর ইস্ট ওয়েস্ট প্রকল্পে বারবার কেন বিপর্যয় ঘটছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী । তাঁর কথায়,"সেখানে বাড়িঘর ভাঙছে । দেওয়ালে বড় বড় ফাটল দেখা দিচ্ছে । মানুষ আজ শঙ্কিত । ঘরবাড়ি ছেড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্যত্র আশ্রয় নিতে হচ্ছে । এই ঘটনা নতুন নয় । মাঝেমধ্যেই তা প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছে ।মেট্রো কর্তৃপক্ষ ও তৃণমূলের স্থানীয় কাউন্সিলর ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলছে, ভালো কথা । কিন্তু ক্ষতিপূরণ সবকিছুর শেষ কথা নয় । কেন মুখ্যমন্ত্রী ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের রুট পরিবর্তন করলেন ? এর পিছনে কি স্বার্থ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার । তারপরও বলব এই বিপদের সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো দরকার সবার আগে । তা যথাযথভাবে রাজ্য সরকার এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষ পালন করুক, সেটাই চাই আমরা ।" ক্ষতিগ্রস্তদের নতুন বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার দাবিকেও এদিন সমর্থন করেছেন সুজন চক্রবর্তী ।
আরও পড়ুন : নিয়োগ দুর্নীতিতে বিএড কলেজ থেকেও কমিশন নিয়েছেন মানিক ! তদন্তে ইডি
এই পরিপ্রেক্ষিতে বাম উদাহরণও টেনে এনে সুজন বলেন,"বাম আমলেও একের পর এক মেট্রো প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়েছে । তখন তো এই ধরনের বিপর্যয় নেমে আসেনি ৷ এখন কেন সেটা হচ্ছে ? আসলে মুখ্যমন্ত্রীর চাপে গুরুত্বপূর্ণ এই মেট্রো প্রকল্পের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ । যার মাশুল গুনতে হচ্ছে বউবাজারের বাসিন্দাদের ।"
এদিকে, শিক্ষক দুর্নীতিকাণ্ডে প্রাথমিকের প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের প্রোফাইলে সাংকেতিক চিহ্ন পি এ-র সন্ধান মেলা নিয়েও এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী । এই বিষয়ে তিনি বলেন,"মানিক ভট্টাচার্যের প্রোফাইলে প্রচুর সম্পত্তির হদিস মিলেছে । এগুলো সব লুঠ ও তোলাবাজির টাকা । এর আগে ওর প্রোফাইলে ডি ডি এবং আর কে-র সন্ধান মিলেছিল । আর কে নাকি ডি ডি-কে দিয়ে বেআইনি চাকরির তালিকা অ্যাপ্রুভ করিয়েছে । ডি ডি মানে দিদি । আর কে মানে রাজ কুমার । এটা সকলেই জানে । এবার হল পি এ । সেটাও ক্রমশ প্রকাশ্যে । দু-একদিন অপেক্ষা করুন । সব সামনে আসবে । মানিক ভট্টাচার্যের আমলে যে 58 হাজার শিক্ষকের চাকরি হয়েছে । তার মধ্যে 45 হাজার চাকরিই বেআইনিভাবে নিয়োগ হয়েছে । প্রত্যেক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে 10 লাখ টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়েছে । এই বেআইনি টাকা খুঁজে বার করুক সিবিআই এবং ইডি । নইলে মানুষই সেই চাকরি বিক্রির টাকা খুঁজে বের করবে ।"
আরও পড়ুন : বউবাজারে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হাজির শাসক-বিরোধীরা