বারাসত, 1 অক্টোবর: "রাজ্যপাল বাড়াবাড়ি করছেন, এবার তো মিলিটারি অফিসারদের নিয়ে এসে উপাচার্য পদে নিয়োগ করবেন উনি!" নতুন ছ'টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে তীব্র আক্রমণ করলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ৷ রবিবার বিকেলে উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসতে দলের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের এক সমাবেশে যোগ দেন তিনি। সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুজন চক্রবর্তী রাজ্যপালের উপাচার্য নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিশানা করেন তাঁকে। রাজ্যপালের অতি সক্রিয়তার পিছনে রাজ্য সরকারের অপদার্থতা রয়েছে বলেও মনে করেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এই নেতা।
প্রসঙ্গত, রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহের মধ্যেই ফের ছ'টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে উপাচার্য নিয়োগ করেছে রাজভবন। এগুলো হল মুর্শিদাবাদ ইউনিভার্সিটি, মহাত্মা গান্ধি ইউনিভার্সিটি, আলিপুরদুয়ার ইউনিভার্সিটি, বিশ্ব বাংলা ইউনিভার্সিটি, পঞ্চানন বর্মা ইউনিভার্সিটি এবং উত্তরবঙ্গ ইউনিভার্সিটি। তবে, এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ফের দেখা দিয়েছে বিতর্ক। কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে নিয়ে আসা হয়েছে কেরলের প্রাক্তন আইপিএস সিএম রবীন্দ্রনকে। আর রাজ্যপালের এই একতরফা উপাচার্য নিয়োগ নিয়েই এদিন মুখ খুলেছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
এ নিয়ে রীতিমতো রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "এটা রাজ্যপালের কাজ নয় ৷ তিনি বাড়াবাড়ি করছেন। যেখানে সুপ্রিম কোর্ট উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটির নাম চেয়ে পাঠিয়েছেন। সেখানে রাজ্যপালের একতরফাভাবে উপাচার্য নিয়োগ কাঙ্খিত নয়। আসলে নবান্ন-রাজ্যপাল সংঘাত জিইয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। এছাড়া আর কিছুই নয়।"এরপরই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আক্রমণ করে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "উপাচার্য পদে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাকে নিয়ে আসা হয়েছে কেরলের সেই প্রাক্তন আইপিএস অফিসার তো বাংলার সম্পর্কে কিছুই জানেন না।"
তিনি আরও বলেন, "এই ধরনের কর্মকাণ্ড চলতে পারে নাকি! শিক্ষার সঙ্গে যার কখনও কোনও সম্পর্ক নেই সেই লোককে উপাচার্য পদে নিয়ে আসা।এই ধরনের ঘটনা আগে কখনও দেখেনি বাংলার মানুষ। এবার তো মিলিটারি অফিসারকে উপাচার্য পদে নিয়ে আসা হবে! বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশের ডান্ডাবাজির জায়গা নয়। রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পুলিশের ডান্ডাবাজির জায়গা করতে চাইছেন। আর তার সুযোগ করে দিচ্ছেন রাজ্য সরকার।এটা খুব দুর্ভাগ্যের। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা।" এদিকে, বাঁকুড়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে তিন শিশুর মৃত্যু নিয়ে শাসকদল নোংরা রাজনীতি করছে বলেও এদিন অভিযোগ করেছেন সুজন চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: 'দুর্বলের রক্ষাই হিন্দুর ধর্ম,' দুই পাতায় হিন্দুত্ব নিয়ে 'মন কি বাত' রাহুলের