হাড়োয়া, 6 জুলাই : মোবাইলে মগ্ন থাকায় বকাবকি করেছিলেন মা । সাধের মোবাইল ফোনটাও আস্ত রাখেননি । ভেঙে দু'টুকরো । আর তাতেই অভিমানে আত্মঘাতী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ! মৃতার নাম রাজশ্রী বিশ্বাস (15) । গতরাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার হাড়োয়ায় । ঘরের মধ্যেই ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান পরিবারের লোকেরা । পরে পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ।
হাড়োয়ার গোপালপুর এক নম্বর পঞ্চায়েতের পুকুরিয়া গ্রামে বাড়ি রাজশ্রীর । গোপালপুর গার্লস হাইস্কুল থেকে এই বছরই মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তার । কিন্তু, করোনার দাপটে তা বাতিল করতে বাধ্য হয় রাজ্য সরকার । দিনকয়েক আগে মায়ের সঙ্গে মামাবাড়ি গিয়েছিল ওই স্কুল ছাত্রী । সেখানে গিয়েও সারাক্ষণ মোবাইলে মুখ গুঁজে । মোবাইলে মগ্ন থাকায় বকাবকি করেন তার মা । বিরক্ত হয়ে ভেঙে দেন মেয়ের হাতে থাকা মোবাইল ফোনও । এই নিয়ে মায়ের সঙ্গে একপ্রস্থ ঝগড়াও হয় রাজশ্রীর । তখনকার মতো বিষয়টি সেখানেই মিটে যায় ।
এরপর সোমবার মামাবাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরে আসে রাজশ্রী । তারপর নতুন করে আর রাগারাগি-অশান্তি না করেনি বটে, কিন্তু সেদিনের ঘটনার পর থেকে কেমন একটা মনমরা হয়ে গিয়েছিল সে । বাড়ি ফিরেও একইরকম মনমরা । গতরাতে টিভি দেখতে গিয়ে রাজশ্রীর ভাই লক্ষ্য করে, ঘরের মধ্যে দিদির দেহ ঝুলছে । ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে খবর দেওয়া হয় হাড়োয়া থানায় । পুলিশ এসে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে ।
আরও পড়ুন : দাসপুরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল দেওয়াল, চাপা পড়ে মৃত্যু দুই অন্তঃসত্বার
মৃতার আত্মীয়া ফাল্গুনী বিশ্বাস (দাস) বলেন, "মোবাইলে মগ্ন থাকায় ওর(রাজশ্রী) মা বকাঝকা করেছিলেন । তারপরও অস্বাভাবিক কোনও কিছু লক্ষ্য করা যায়নি । ও যে এমন চরম সিদ্ধান্ত নেবে, তা কেউই বুঝে উঠতে পারেনি । রাজশ্রীর ভাই-ই প্রথমে গলায় কাপড় জড়ানো অবস্থায় ওর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় । এরপর পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ।"
পুলিশও প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে, অভিমানেই সম্ভবত ওই ছাত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে । এর পিছনে অন্য কোনও কারন আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।