দত্তপুকুর, 25 জুলাই: পুজো করার সময় বাবাকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। মৃতের নাম রঘুনাথ সিকদার। ঘটনার জেরে মঙ্গলবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুরের ছোট জাগুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। পরে, তা পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনে অভিযুক্ত হৃদয় সিকদার দীর্ঘদিন ধরেই মানসিকভাবে অসুস্থ। নেশাও করত সে। তার জেরে চিকিৎসাও চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। কিন্তু, তারই মধ্যে এই ঘটনায় হতবাক সকলে।
শুধু কি মানসিক অসুস্থতার জেরে এই ঘটনা নাকি এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে? ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে আটক করে শুরু হয়েছে ঘটনার তদন্ত ৷ বছর পঞ্চান্ন'র রঘুনাথ সিকদার ছোট জাগুলিয়া পঞ্চায়েতের মালিয়াপুর-দাসপাড়ার বাসিন্দা। পেশায় তিনি দিনমজুর। সেখানেই রবি দত্ত নামে একজনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ওই প্রৌঢ়ের স্ত্রী মঞ্জুও দিনমজুরের কাজ করেন। দম্পতির একমাত্র ছেলে হৃদয়। মাঝেমধ্যেই নেশা করত সে।তার জেরে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় তার মধ্যে।
আরও পড়ুন: সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় মাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ, পলাতক ছেলে ও বৌমা
চার-পাঁচ বছর ধরে মানসিক চিকিৎসা চলছিল হৃদয়ের। অভিযোগ, নেশা করার জন্য টাকা চেয়ে অনেক সময় বাড়িতে অশান্তিও করত সে। টাকা না-দিলেই যুবক হিংস্র আচরণ করত বলে অভিযোগ। যদিও পরিবারের দাবি, টাকা পয়সা নিয়ে কখনই কোনও সমস্যা হয়নি হৃদয়ের সঙ্গে। মানসিক অসুস্থতা থাকলেও ইদানিং সে পরিবারের সঙ্গে খুব একটা কথাবার্তা বলত না। বেশিরভাগ সময়ই মনমরা হয়ে থাকত। এসবের মধ্যেই এদিন সকালে হঠাৎই হৃদয় পিছন থেকে বঁটির কোপ মারে বাবাকে। সেই সময় তিনি পুজো দিচ্ছিলেন ঠাকুর ঘরে।
বঁটির আঘাত লাগে প্রৌঢ়ের ঘাড়ে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। রক্তে ভেসে যায় ঘর। সেই দৃশ্য দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেয় পুলিশে। পুলিশ এসে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রৌঢ়কে উদ্ধার করে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই বিষয়ে মৃতের স্ত্রী মঞ্জু সিকদার বলেন, "আমি শুয়েছিলাম। এমন সময় আওয়াজ পেয়ে ঘরে ঢুকে দেখি ও (রঘুনাথ) মেঝেতে পড়ে রয়েছে। পাশে চাপ চাপ রক্ত।ছেলেকে সুস্থ করার সবরকমের চেষ্টায় করছিলাম আমরা। তারপরও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটে গেল তা বুঝতে পারছি না।"
আরও পড়ুন: অনলাইনে ছুরি অর্ডার করে বাবাকে খুন করল ছেলে