বসিরহাট, 21 অগস্ট : "লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ ফর্ম জমা পড়বে ঠিকই । কিন্তু প্রকল্পের টাকা সকলে পাবেন কিনা, সন্দেহ রয়েছে । কারণ সরকারের কাছে এত টাকায় নেই !" লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলে এভাবেই রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু (Sayantan Basu) । শনিবার পুরানো একটি রাজনৈতিক মামলায় হাজিরা দিতে বসিরহাট মহকুমা আদালতে আসেন রাজ্য বিজেপির এই নেতা । সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন সায়ন্তন ।
বিধানসভা নির্বাচনের সময় মহিলাদের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । ক্ষমতায় এসে সেই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগীও হন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান । সেই মতো 16 অগস্ট থেকে রাজ্যজুড়ে চালু হয়েছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির ক্যাম্প, যা চলবে আগামী মাস খানেক ৷ সেখানে অন্যান্য প্রকল্পের সঙ্গে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্ম বিতরণ এবং জমা নেওয়ার কাজও চলছে জোরকদমে । এক সঙ্গে প্রায় 18টি প্রকল্পের কাজ চলায় অধিকাংশ ক্যাম্পেই উপচে পড়ছে ভিড় । অতিরিক্ত ভিড়ের জেরে কোথাও কোথাও বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে বলেও অভিযোগ । এনিয়েও রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু । তাঁর কথায়, "যেভাবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের জন্য মানুষ ভিড় করছে, তাতে করোনা বাড়বে । আখেরে কষ্ট পাবেন সেই সাধারণ মানুষই ৷"
এরপরই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারকে খোঁচা দিয়ে সায়ন্তন বলেন, "সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বকেয়া । বাকি বিভিন্ন খাতের বকেয়া টাকার পেমেন্ট হচ্ছে না । কন্ট্রাক্টরা পেমেন্ট পাচ্ছেন না । এত টাকা আসবে কোথা থেকে ?"
শুক্রবারই বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে শান দিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির নেতৃত্বে বিরোধী উনিশ রাজনৈতিক দলের নেতারা বৈঠক করেছেন । এই নিয়ে সায়ন্তন বসুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "বিরোধীর মিটিং করতেই পারে । তবে এর কোনও গুরুত্ব আছে বলে আমি মনে করি না । বিরোধীরা মিটিং করুক, সিটিং করুক, ইটিং করুক কোনও গুরুত্ব নেই ৷"
আদালতে হাজিরা দেওয়ার প্রসঙ্গে সায়ন্তন বলেন, "সারা পশ্চিমবঙ্গে আমার নামে অজস্র মামলা করেছে শাসকদল । গত দু-তিন বছরে বসিরহাটেও আমার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়েছে । সেই সমস্ত মামলায় জামিন নিতেই এদিন বসিরহাট মহকুমা আদালতে এসেছিলাম ।"
প্রসঙ্গত, 2019-এর লোকসভা ভোটে বসিরহাটে নির্বাচনী প্রচারে বিতর্কিত মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু । সেই সময় প্রকাশ্য মঞ্চে তিনি বলেছিলেন, "ভোটের সময় তৃণমূলের কেউ অশান্তি করতে এলে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বলব, গুলি পায়ে না করে যেন সরাসরি বুকে করা হয় ৷" সায়ন্তনের বিতর্কিত এই মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে । ঘটনার পরই তাঁর বিরুদ্ধে বসিরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের হয় শাসকদলের তরফে । পুরানো সেই মামলাতেই হাজিরা দিতে শনিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে আসেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু ।
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : সাধারণের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি আসুক টাকা, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে চান মমতা