ETV Bharat / state

বাংলাকে বঞ্চিত করে বিহারের নির্বাচনমুখী বাজেট, কটাক্ষ অভিষেকের - UNION BUDGET 2025

অমিত মিত্র, ফিরহাদ হাকিম-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা বাজেটের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ৷

UNION BUDGET 2025
বাংলাকে বঞ্চিত করে বিহারের নির্বাচনমুখী বাজেট, কটাক্ষ অভিষেকের (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 1, 2025, 9:06 PM IST

কলকাতা, 1 ফেব্রুয়ারি: বিহারের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বাজেট তৈরি করেছে ৷ সেই কারণে বঞ্চিত করা হয়েছে বাংলাকে ৷ শনিবার সংসদে 2025-26 আর্থিক বছরের বাজেট পেশ হয়ে যাওয়ার পর এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

এদিন সকাল 11টা থেকে প্রায় সোয়া একঘণ্টা ধরে বাজেট পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ৷ সেই সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পরে বাইরে এসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি ৷ সেখানে অভিষেক বলেন, ‘‘বাংলা যখন 18টা সাংসদ জিতিয়ে পাঠিয়েছিল, তখনও বাংলাকে কিছু দেয়নি ৷ আজও বিজেপির 12টা সাংসদ রয়েছে বাংলায়৷ বাংলাকে কিছুই দেওয়া হয়নি ৷’’

বাংলা বঞ্চিত হলেও এই রাজ্য থেকে জয়ী বিজেপি সাংসদরা কোনও প্রতিবাদ করবে না বলেই দাবি করেছেন অভিষেক ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এই যে 12 জন সাংসদ রয়েছেন, কেউ কোনোদিন প্রতিবাদও করবে না ৷ বাংলা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত ৷ আজও বঞ্চিত৷ বাংলার জন্য কিছুই নেই ৷’’

এর পরই তিনি বিহারের প্রসঙ্গ টানেন ৷ বলেন, ‘‘2025 সালের নভেম্বর মাসে যেহেতু বিহারে নির্বাচন আছে, তাই বিহারের জন্য সবকিছু করা হয়েছে ৷ এরা তো নির্বাচনকে মাথায় রেখে করে ৷ সাধারণ গরিব মানুষের জন্য তো কিছু করে না ৷’’

যদিও এবারের বাজেটের সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় আয়কর ছাড় ৷ সেই নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘‘মধ্যবিত্তের আয়কর ছাড় নিয়ে যে কথাটা বলেছেন, সেখানে 4-8 লাখের জন্য 10 শতাংশ, 8-12 লাখের জন্য 20 শতাংশ, এখানে একটা অস্পষ্ট জায়গা রয়েছে ৷ আমাকে পড়তে হবে ৷ তার পর আমার যা বলার আমি বলব ৷’’

কেন্দ্রের এই বাজেট নিয়ে সমালোচনা করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও ৷ এবারের বাজেট নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ, সাধারণ মানুষের জন্য বিপর্যয় ৷ এছাড়াও রয়েছে ষড়যন্ত্র, বিশেষজ্ঞরা তাই বলছেন ৷ সাধারণ মানুষের জন্য দরকারি এমন অনেক প্রকল্পের টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ যুব সমাজ, মহিলা ও কৃষকদের জন্য এই বাজেটে কিছু নেই ৷ কর্মসংস্থান কমানো নিয়ে কোনও দিশা নেই ৷ আয়করে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু মাত্র আট কোটি মানুষ আয়কর দেন ৷ মূল্যবৃদ্ধি রুখতে কী দিশা আছে এই বাজেটে ? দেশের ঋণ আরও বাড়বে ৷

বাজেট নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা কোনও বাজেটই নয় । সাধারণ মানুষের এতে কোনও উপকার হবে না । আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ রাখি বিমাক্ষেত্রে । বহুবার দেখা গিয়েছে বিদেশি সংস্থাগুলি আসে, তারা এখান থেকে সব তুলে নিয়ে চলে যায় । আমার পরিবারের ভবিষ্যৎ তাহলে কার হাতে থাকবে ? এই সরকারের হচ্ছে সবকিছু বিক্রি করে দেব । তাই আমাদের ভবিষ্যতে বিক্রি করতে এরা ব্যস্ত থাকে ।’’

এর পরেই দেশের আর্থিক অবস্থা নিয়ে বলেন তিনি । দাবি করেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধি সর্বোচ্চস্তরে আছে । এখন টাকার মূল্য এত কমে গিয়েছে যে এখন 12 লক্ষ টাকা কোনও টাকাই নয় । 12 লক্ষ টাকায় এখন মধ্যবিত্ত হয় না, নিম্ন মধ্যবিত্ত চলে গিয়েছে । এক লাখ করে মাসে রোজকার এখন ফ্যামিলির জন্য কোনও রোজগারই নয় । মূল্যবৃদ্ধি আপনি রাখতে পারছেন না, মুদ্রাস্ফীতি ধরতে পারছেন না । আজ টাকার মূল্য দিনকে দিন পড়ছে । সুতরাং আপনাকে ব্যাগ নিয়ে বাজার করতে যেতে হবে আর ঠোঙায় করে বাজার নিয়ে আসতে হবে ।’’

একইভাবে কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে সমালোচনায় মুখর হন জয়প্রকাশ মজুমদার । তিনি বলেন, ‘‘বাজেটের আগে যে আর্থিক সমীক্ষা দেখানো হয়েছে, তাতে এই সরকারই পাঁচটা প্রধান প্রশ্ন তুলে ধরেছে নিজেদের আর্থিক সমীক্ষায় । যার উপর ভিত্তি করে বাজেট হওয়া উচিত । বেকারত্ব, মূল্য বৃদ্ধি, শিল্প উৎপাদন তলানিতে এসে ঠেকেছে, বাণিজ্য ঘাটতি ও টাকার অবমূল্যায়ন । এই দিকগুলো তুলে ধরেছে মোদি সরকারের আর্থিক সমীক্ষা । এই বাজেটে কোন দিকে সমস্যা সমাধান করা হয়েছে ? কর ছাড়ের মাত্রা বাড়ানো টেবিল চাপড়েছেন মোদি । আমার প্রশ্ন, কত জন করদাতা আছেন দেশে ? রিটার্ন দেন সাড়ে আট কোটি । কর দেন না দু’কোটি । 140 কোটি জনতার মধ্যে 5 কোটি মধ্যবিত্ত এই সুযোগ, লাভ পাবে ।’’

তৃণমূল কংগ্রেসের আরেক নেতা কুণাল ঘোষেরও একই বক্তব্য ৷ তিনি এই বাজেটকে দিশাহীন বলেছেন ৷ এতে সাধারণ মানুষের কোনও লাভ হবে না ৷ উলটে মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে ৷ তাঁর আরও দাবি, গত দশ বছরের মতো এবারও কেন্দ্রীয় বাজেটে পশ্চিমবঙ্গকে একেবারেই উপেক্ষিত করা হয়েছে ।

কলকাতা, 1 ফেব্রুয়ারি: বিহারের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বাজেট তৈরি করেছে ৷ সেই কারণে বঞ্চিত করা হয়েছে বাংলাকে ৷ শনিবার সংসদে 2025-26 আর্থিক বছরের বাজেট পেশ হয়ে যাওয়ার পর এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

এদিন সকাল 11টা থেকে প্রায় সোয়া একঘণ্টা ধরে বাজেট পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ৷ সেই সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পরে বাইরে এসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি ৷ সেখানে অভিষেক বলেন, ‘‘বাংলা যখন 18টা সাংসদ জিতিয়ে পাঠিয়েছিল, তখনও বাংলাকে কিছু দেয়নি ৷ আজও বিজেপির 12টা সাংসদ রয়েছে বাংলায়৷ বাংলাকে কিছুই দেওয়া হয়নি ৷’’

বাংলা বঞ্চিত হলেও এই রাজ্য থেকে জয়ী বিজেপি সাংসদরা কোনও প্রতিবাদ করবে না বলেই দাবি করেছেন অভিষেক ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এই যে 12 জন সাংসদ রয়েছেন, কেউ কোনোদিন প্রতিবাদও করবে না ৷ বাংলা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত ৷ আজও বঞ্চিত৷ বাংলার জন্য কিছুই নেই ৷’’

এর পরই তিনি বিহারের প্রসঙ্গ টানেন ৷ বলেন, ‘‘2025 সালের নভেম্বর মাসে যেহেতু বিহারে নির্বাচন আছে, তাই বিহারের জন্য সবকিছু করা হয়েছে ৷ এরা তো নির্বাচনকে মাথায় রেখে করে ৷ সাধারণ গরিব মানুষের জন্য তো কিছু করে না ৷’’

যদিও এবারের বাজেটের সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় আয়কর ছাড় ৷ সেই নিয়ে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘‘মধ্যবিত্তের আয়কর ছাড় নিয়ে যে কথাটা বলেছেন, সেখানে 4-8 লাখের জন্য 10 শতাংশ, 8-12 লাখের জন্য 20 শতাংশ, এখানে একটা অস্পষ্ট জায়গা রয়েছে ৷ আমাকে পড়তে হবে ৷ তার পর আমার যা বলার আমি বলব ৷’’

কেন্দ্রের এই বাজেট নিয়ে সমালোচনা করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও ৷ এবারের বাজেট নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ, সাধারণ মানুষের জন্য বিপর্যয় ৷ এছাড়াও রয়েছে ষড়যন্ত্র, বিশেষজ্ঞরা তাই বলছেন ৷ সাধারণ মানুষের জন্য দরকারি এমন অনেক প্রকল্পের টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ যুব সমাজ, মহিলা ও কৃষকদের জন্য এই বাজেটে কিছু নেই ৷ কর্মসংস্থান কমানো নিয়ে কোনও দিশা নেই ৷ আয়করে ছাড় দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু মাত্র আট কোটি মানুষ আয়কর দেন ৷ মূল্যবৃদ্ধি রুখতে কী দিশা আছে এই বাজেটে ? দেশের ঋণ আরও বাড়বে ৷

বাজেট নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা কোনও বাজেটই নয় । সাধারণ মানুষের এতে কোনও উপকার হবে না । আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ রাখি বিমাক্ষেত্রে । বহুবার দেখা গিয়েছে বিদেশি সংস্থাগুলি আসে, তারা এখান থেকে সব তুলে নিয়ে চলে যায় । আমার পরিবারের ভবিষ্যৎ তাহলে কার হাতে থাকবে ? এই সরকারের হচ্ছে সবকিছু বিক্রি করে দেব । তাই আমাদের ভবিষ্যতে বিক্রি করতে এরা ব্যস্ত থাকে ।’’

এর পরেই দেশের আর্থিক অবস্থা নিয়ে বলেন তিনি । দাবি করেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধি সর্বোচ্চস্তরে আছে । এখন টাকার মূল্য এত কমে গিয়েছে যে এখন 12 লক্ষ টাকা কোনও টাকাই নয় । 12 লক্ষ টাকায় এখন মধ্যবিত্ত হয় না, নিম্ন মধ্যবিত্ত চলে গিয়েছে । এক লাখ করে মাসে রোজকার এখন ফ্যামিলির জন্য কোনও রোজগারই নয় । মূল্যবৃদ্ধি আপনি রাখতে পারছেন না, মুদ্রাস্ফীতি ধরতে পারছেন না । আজ টাকার মূল্য দিনকে দিন পড়ছে । সুতরাং আপনাকে ব্যাগ নিয়ে বাজার করতে যেতে হবে আর ঠোঙায় করে বাজার নিয়ে আসতে হবে ।’’

একইভাবে কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে সমালোচনায় মুখর হন জয়প্রকাশ মজুমদার । তিনি বলেন, ‘‘বাজেটের আগে যে আর্থিক সমীক্ষা দেখানো হয়েছে, তাতে এই সরকারই পাঁচটা প্রধান প্রশ্ন তুলে ধরেছে নিজেদের আর্থিক সমীক্ষায় । যার উপর ভিত্তি করে বাজেট হওয়া উচিত । বেকারত্ব, মূল্য বৃদ্ধি, শিল্প উৎপাদন তলানিতে এসে ঠেকেছে, বাণিজ্য ঘাটতি ও টাকার অবমূল্যায়ন । এই দিকগুলো তুলে ধরেছে মোদি সরকারের আর্থিক সমীক্ষা । এই বাজেটে কোন দিকে সমস্যা সমাধান করা হয়েছে ? কর ছাড়ের মাত্রা বাড়ানো টেবিল চাপড়েছেন মোদি । আমার প্রশ্ন, কত জন করদাতা আছেন দেশে ? রিটার্ন দেন সাড়ে আট কোটি । কর দেন না দু’কোটি । 140 কোটি জনতার মধ্যে 5 কোটি মধ্যবিত্ত এই সুযোগ, লাভ পাবে ।’’

তৃণমূল কংগ্রেসের আরেক নেতা কুণাল ঘোষেরও একই বক্তব্য ৷ তিনি এই বাজেটকে দিশাহীন বলেছেন ৷ এতে সাধারণ মানুষের কোনও লাভ হবে না ৷ উলটে মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে ৷ তাঁর আরও দাবি, গত দশ বছরের মতো এবারও কেন্দ্রীয় বাজেটে পশ্চিমবঙ্গকে একেবারেই উপেক্ষিত করা হয়েছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.