ETV Bharat / state

বিদ্যাধরী নদীর দূষণ ঠেকাতে বিশেষ পরিকল্পনা, দ্রুত শুরু হচ্ছে কাজ - নদী পুনরুজ্জীবন কমিটি

এককালে বেগবতী বিদ্যাধরী আজ জরাগ্রস্ত । তাঁর জীবনশক্তি প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছে দূষণ । দূষণে নাভিশ্বাস উঠছে বিদ্যাধরীর । একটু একটু করে শেষ হয়ে যাচ্ছে নদীর দুপারের জীব বৈচিত্র্য। এই নিয়ে সরব হয়েছে স্থানীয়রা । কিন্তু রাজ্য প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ ।

Bidyadhari river
বিদ‍্যাধরী নদী
author img

By

Published : Dec 20, 2019, 11:26 PM IST

কলকাতা, 20 ডিসেম্বর: এককালে বেগবতী বিদ্যাধরী আজ জরাগ্রস্ত । তাঁর জীবনশক্তি প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছে দূষণ । দূষণে নাভিশ্বাস উঠছে বিদ্যাধরীর । একটু একটু করে শেষ হয়ে যাচ্ছে নদীর দুপারের জীব বৈচিত্র্য । এই নিয়ে সরব হয়েছে স্থানীয়রা । কিন্তু রাজ্য প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ ।

বিদ্যাধরী নদীর উৎস নদিয়ার হরিণঘাটা এলাকায় । বিদ্যাধরী মিশেছে রায়মঙ্গলে । নদীতে প্রবাহিত হয়েছে উত্তর 24 পরগনা এবং দক্ষিণ 24 পরগনার মধ্যে । ইতিহাসের পাতা বলছে, এই নদীতে গড়ে উঠেছিল একসময় চন্দ্রকেতুগড় বন্দর। ধীরে ধীরে এই নদীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় বেশকিছু ক্যানাল । নদীয়া এবং দুই 24 পরগনার কৃষিতে ব্যাপকভাবেই সাহায্য করে এসেছে বিদ্যাধরী । পরে কলকাতা এবং দুই 24 পরগনার পৌরসভা এলাকায় ড্রেনেজ সিস্টেমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে দেওয়া হয় এই নদীকে । তৈরি হয় একটি বড় খাল এবং বেশকিছু ড্রেনের সঙ্গে সংযোগ। বাগজোলা খাল, ভাঙড় খাল , পানশিলা খাল , নোনা গাঙ, শুটিয়া খাল মেশানো হয় এই নদীর সঙ্গে। বিদ্যাধরীর দুর্ভাগ্যের সূচনা তখন থেকেই। ভাঙ্গড় খালের মাধ্যমে বানতলা চর্মনগরীর তরল বর্জ্য মেশে বিদ্যাধরীতে। আর তাতেই রাহি ত্রাহি রব ওঠে‌। ধীরে ধীরে এই নদীর জল চাষের কাজে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। একটু একটু করে নষ্ট হতে শুরু করে জীব বৈচিত্র্য। শেষ হয়ে যায় নদীর মাছ। অসুস্থ হতে শুরু করেন এই নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন। ফলে তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

এলাকার মানুষ এজন্য বাধ্য হচ্ছে প্রতিবাদে পথে নামতে । উত্তর 24 পরগনার বিড়া এলাকায় এজন্য সাধারণ মানুষ বৃহস্পতিবার পথ অবরোধ করেন । দত্তপুকুর, অশোকনগর, দেগঙ্গা থানা এলাকার কারখানা গুলির প্রচুর বর্জ পদার্থ বিদ্যাধরী নদীতে গিয়ে পড়ছে । এই নদীর দূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতেও মামলা হয়েছে । সেই মামলার জেরে গত বছর জাতীয় পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণের । তারপরও টনক নড়েনি রাজ্য প্রশাসনের । সপ্তাহ খানেক আগে 'নদী পুনরুজ্জীবন কমিটি' জানায় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এই নদীর সংস্কারে । কাজের জন্য লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে 5 বছর । নদীর পুনরুজ্জীবন কমিটি সূত্রে খবর, সেই কাজ দ্রুত শুরু হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছে অগ্রাধিকার এলাকা নির্দিষ্ট করার কাজ । উত্তর 24 পরগনা এবং দক্ষিণ 24 পরগনা সীমান্তের প্রায় কুড়ি কিলোমিটার এলাকায় হবে প্রথম কাজ। ধীরে ধীরে বিদ্যাধরী নদীর গোটা সংস্কারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে ।

কাজের অগ্রগতি নিয়ে নদীর পুনরুজ্জীবন কমিটি প্রতি তিন মাস অন্তর কাজের পর্যালোচনা করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলাশাসকের নেতৃত্বে করা হচ্ছে নজরদারি কমিটি। সেই কমিটি রিপোর্ট পাঠাবে রাজ্য কমিটিকে। ঠিক হয়েছে, শুধু নদীর সংস্কার নয়, নদীর ধারে বৃক্ষরোপণও করা হবে। যেসব পৌরসভা গুলির জল এই নদীতে পড়ছে সেখানেও নেওয়া হবে বিশেষ পরিকল্পনা । যে কারখানাগুলির দূষিত জল নদীতে পড়ছে সেগুলিকে সতর্ক করা হবে।

কলকাতা, 20 ডিসেম্বর: এককালে বেগবতী বিদ্যাধরী আজ জরাগ্রস্ত । তাঁর জীবনশক্তি প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছে দূষণ । দূষণে নাভিশ্বাস উঠছে বিদ্যাধরীর । একটু একটু করে শেষ হয়ে যাচ্ছে নদীর দুপারের জীব বৈচিত্র্য । এই নিয়ে সরব হয়েছে স্থানীয়রা । কিন্তু রাজ্য প্রশাসন উদাসীন বলে অভিযোগ ।

বিদ্যাধরী নদীর উৎস নদিয়ার হরিণঘাটা এলাকায় । বিদ্যাধরী মিশেছে রায়মঙ্গলে । নদীতে প্রবাহিত হয়েছে উত্তর 24 পরগনা এবং দক্ষিণ 24 পরগনার মধ্যে । ইতিহাসের পাতা বলছে, এই নদীতে গড়ে উঠেছিল একসময় চন্দ্রকেতুগড় বন্দর। ধীরে ধীরে এই নদীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় বেশকিছু ক্যানাল । নদীয়া এবং দুই 24 পরগনার কৃষিতে ব্যাপকভাবেই সাহায্য করে এসেছে বিদ্যাধরী । পরে কলকাতা এবং দুই 24 পরগনার পৌরসভা এলাকায় ড্রেনেজ সিস্টেমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে দেওয়া হয় এই নদীকে । তৈরি হয় একটি বড় খাল এবং বেশকিছু ড্রেনের সঙ্গে সংযোগ। বাগজোলা খাল, ভাঙড় খাল , পানশিলা খাল , নোনা গাঙ, শুটিয়া খাল মেশানো হয় এই নদীর সঙ্গে। বিদ্যাধরীর দুর্ভাগ্যের সূচনা তখন থেকেই। ভাঙ্গড় খালের মাধ্যমে বানতলা চর্মনগরীর তরল বর্জ্য মেশে বিদ্যাধরীতে। আর তাতেই রাহি ত্রাহি রব ওঠে‌। ধীরে ধীরে এই নদীর জল চাষের কাজে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। একটু একটু করে নষ্ট হতে শুরু করে জীব বৈচিত্র্য। শেষ হয়ে যায় নদীর মাছ। অসুস্থ হতে শুরু করেন এই নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন। ফলে তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।

এলাকার মানুষ এজন্য বাধ্য হচ্ছে প্রতিবাদে পথে নামতে । উত্তর 24 পরগনার বিড়া এলাকায় এজন্য সাধারণ মানুষ বৃহস্পতিবার পথ অবরোধ করেন । দত্তপুকুর, অশোকনগর, দেগঙ্গা থানা এলাকার কারখানা গুলির প্রচুর বর্জ পদার্থ বিদ্যাধরী নদীতে গিয়ে পড়ছে । এই নদীর দূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতেও মামলা হয়েছে । সেই মামলার জেরে গত বছর জাতীয় পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণের । তারপরও টনক নড়েনি রাজ্য প্রশাসনের । সপ্তাহ খানেক আগে 'নদী পুনরুজ্জীবন কমিটি' জানায় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এই নদীর সংস্কারে । কাজের জন্য লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে 5 বছর । নদীর পুনরুজ্জীবন কমিটি সূত্রে খবর, সেই কাজ দ্রুত শুরু হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছে অগ্রাধিকার এলাকা নির্দিষ্ট করার কাজ । উত্তর 24 পরগনা এবং দক্ষিণ 24 পরগনা সীমান্তের প্রায় কুড়ি কিলোমিটার এলাকায় হবে প্রথম কাজ। ধীরে ধীরে বিদ্যাধরী নদীর গোটা সংস্কারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে ।

কাজের অগ্রগতি নিয়ে নদীর পুনরুজ্জীবন কমিটি প্রতি তিন মাস অন্তর কাজের পর্যালোচনা করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলাশাসকের নেতৃত্বে করা হচ্ছে নজরদারি কমিটি। সেই কমিটি রিপোর্ট পাঠাবে রাজ্য কমিটিকে। ঠিক হয়েছে, শুধু নদীর সংস্কার নয়, নদীর ধারে বৃক্ষরোপণও করা হবে। যেসব পৌরসভা গুলির জল এই নদীতে পড়ছে সেখানেও নেওয়া হবে বিশেষ পরিকল্পনা । যে কারখানাগুলির দূষিত জল নদীতে পড়ছে সেগুলিকে সতর্ক করা হবে।

Intro:কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: দূষণে জেরবার বিদ্যাধরী। একটু একটু করে শেষ হয়ে যাচ্ছে নদীর দুপারের জীব বৈচিত্র। প্রতিবাদে সরব হয় উত্তর 24 পরগনার একটা বড় অংশের মানুষ। বিড়া এলাকায় এ নিয়ে হয় পথ অবরোধ। কারণ দত্তপুকুর, অশোকনগর, দেগঙ্গা থানা এলাকার কারখানা গুলির প্রচুর বর্জ‍্য এই নদীতে গিয়ে পড়ে। এই নদীর দূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতেও মামলা হয়। সেই মামলার জেরে গত বছর এই জাতীয় পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণের। কিন্তু তার পরেও টনক নড়েনি রাজ্য প্রশাসনের। সপ্তাহ খানেক আগে নদী পুনরুজ্জীবন কমিটি জানায় প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এই নদীর সংস্কারে। কাজের জন্য লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে 5 বছর। নদীর পুনরুজ্জীবন কমিটি সূত্রে খবর, সেই কাজ দ্রুত শুরু হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছে অগ্রাধিকার। উত্তর 24 পরগনা এবং দক্ষিণ 24 পরগনা সীমান্তের প্রায় কুড়ি কিলোমিটার এলাকায় হবে প্রথম কাজ। ধীরে ধীরে বিদ্যাধরী নদীর গোটা সংস্কারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।


Body:বিদ্যাধরী নদীর উৎস নদীয়ার হরিণঘাটা এলাকায়। এই নদী মিশেছে রায়মঙ্গলে। নদীতে প্রবাহিত হয়েছে উত্তর 24 পরগনা এবং দক্ষিণ 24 পরগনার মধ্যে। ইতিহাসের পাতা বলছে, এই নদীতে গড়ে উঠেছিল একসময় চন্দ্রকেতুগড় বন্দর। ধীরে ধীরে এই নদীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় বেশকিছু ক‍্যানাল। যা নদীয়া এবং দুই 24 পরগনার কৃষিতে ব্যাপকভাবেই সাহায্য করে এসেছে। পরে কলকাতা এবং দুই 24 পরগনার পৌর এলাকায় ড্রেনেজ সিস্টেমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে দেওয়া হয় এই নদীকে। তৈরি হয় একটি বড় খাল এবং বেশকিছু ড্রেনের সঙ্গে সংযোগ। বাগজোলা খাল, ভাঙ্গড় খাল , পানশিলা খাল , নোনা গাঙ, শুটিয়া খাল মেশানো হয় এই নদীর সঙ্গে। বিদ্যাধরীর দুর্ভাগ্যের সূচনা তখন থেকেই। ভাঙ্গড় খালের মাধ্যমে বানতলা চর্মনগরীর তরল বর্জ্য মেশে বিদ্যাধরীতে। আর তাতেই রাহি ত্রাহি রব ওঠে‌। ধীরে ধীরে এই নদীর জল চাষের কাজে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। একটু একটু করে নষ্ট হতে শুরু করে জীব বৈচিত্র। শেষ হয়ে যায় নদীর মাছ। অসুস্থ হতে শুরু করেন এই নদীর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন। ফলে তারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।



Conclusion:সম্প্রতি এই নদীর সংস্কারে বরাদ্দ হয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দ্রুত শুরু করা হবে সংস্কারের কাজ। কাজের অগ্রগতি নিয়ে নদীর পুনরুজ্জীবন কমিটি প্রতি তিন মাস অন্তর কাজের পর্যালোচনা করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলাশাসকের নেতৃত্বে করা হচ্ছে নজরদারি কমিটি। সেই কমিটি রিপোর্ট পাঠাবে রাজ্য কমিটিকে। ঠিক হয়েছে, শুধু নদীর সংস্কার নয়, নদীর ধারে বৃক্ষরোপণও করা হবে। যে পৌরসভা গুলির জল এই নদীতে পড়ছে সেখানেও নেওয়া হবে বিশেষ পরিকল্পনা। যে কারখানাগুলির দূষিত জল নদীতে পড়ছে সেগুলিকে সতর্ক করা হবে।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.