সোদপুর, 12 মে : বাড়ির সবাই করোনা পজিটিভ ৷ তাঁদের মধ্যেই এক সদস্যের মৃত্য়ু হয়েছে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে ৷ সেখানে মৃত্যুর পর তাঁর দেহ আটকে রাখল ওই হাসপাতাল ৷ মৃত্যুর পর 2 দিন কেটে গেলেও দেহ পেলেন না বাড়ির লোক ৷ কারণ সম্পূর্ণ বিল মেটাতে পারেননি রোগীর বাড়ির লোক ৷ গোটা বিলের অর্ধেকের কিছুটা কম টাকা দিতে পেরেছেন তাঁরা ৷ তাও সেটার অঙ্কটাও লক্ষাধিক ৷ বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দেয় পুরো বিল না মেটালে মৃতদেহ ছাড়া হবে না ৷ ঘটনাটি ঘটেছে সোদপুরে ৷
জানা গিয়েছে, ব্যারাকপুর নোনা চন্দনপুকুরের বাসিন্দা 64 বছর বয়সী প্রদীপ কুমার দেবনাথ 24 এপ্রিল কোভিড পজিটিভ হন ৷ সোদপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে 30 এপ্রিল ভর্তি করা হয় ৷ এপ্রিলের 10 তারিখ তিনি মারা যান । হাসপাতালের বিল হয় 3 লক্ষ 18 হাজার টাকা । মৃতের বাড়ির লোকজন 1 লক্ষ 40 হাজার টাকা মেটাতে পারেন ৷ বাকি টাকা তাঁরা দিতে পারছেন না । পুরো বিল না মেটানোয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ আটকে রেখে দেন । বকেয়া বিল দেওয়া না মেটানো পর্যন্ত মৃতদেহ ও ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় মৃতের বাড়ির লোকজনকে ৷
মৃতের শ্যালক পিনাকী নাথ জানান, তিনি নিজে গত 24 এপ্রিল করোনা পজিটিভ ৷ বাড়ির অন্যরাও করোনায় আক্রান্ত ৷ এর মধ্যেই তাঁর জামাইবাবুর মৃত্যু হল ৷ এবার দেহটি তাঁদের হাতে তুলে দিলে তাঁরা সৎকার করবেন ৷ তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি ৷ কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে গোটা টাকা না দিলে দেহ এবং ডেথ সার্টিফিকেট তারা আটকেই রাখবে ৷
মৃতের প্রতিবেশী বিকাশ দাসও বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারছেন না ৷ তিনি বলেন, "মানুষের এমন দুঃসময়ের মধ্যে এই অমানবিক কাজ একদমই ঠিক নয় ৷ আর এত বেশি বিল করাটাও ঠিক নয় ৷ ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছে যাওয়া হয়েছিল ৷ তিনি কিছু করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন ৷ দেহ তো আমাদের ছাড়তেই হবে ৷ নাহলে আমরা কী করে কাজ করব ৷ এখানে কথা বলে কিছু না হলে আমরা হায়ার অথরিটিকে জানাব ৷"
নার্সিংহোমে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ।
আরও পড়ুন: ব্লাড ব্যাঙ্কে নেই পর্যাপ্ত রক্ত, রক্তদানের আবেদন স্বাস্থ্য কর্তাদের