বারাসত, 28 মার্চ : অনুপম হত্যা মামলায় সরিয়ে দেওয়া হল সরকারি আইনজীবী বিপ্লব রায়কে। কী কারণে তাঁকে সরানো হল তা জানা যায়নি। আইনজীবীও এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন। তবে তাঁর অনুমান, BJP-র এক মহিলা কর্মীর স্বামীর হয়ে মামলা লড়ার জন্য তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাম লিগাল রিমেম্বারেন্স(L.R) থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর কাছে একটি চিঠি যায়। তবে চিঠির বয়ানে কী ছিল তা নিয়ে তিনি মুখ খুলতে চাননি। গতকাল বিপ্লববাবু বলেন, "আজই আমি মামলার সাক্ষীদের বয়ানের কাগজপত্র দিয়ে দিয়েছি। আগামীকাল মামলার কেস ডায়েরি দিয়ে দেব।"
অনুপম হত্যা মামলায় সরকারি আইনজীবীকে সরিয়ে দেওয়ার ফলে মামলা বিলম্বিত হতে পারে বলে মনে করছে আইনজীবীদের একাংশ। এই মামলা দেড় বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে। কিন্তু, এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হয়নি। 31 তম সাক্ষ্য হিসেবে বারাসত আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক ফোর্থ কোর্টে এখনও সাক্ষ্যদান চলছে মামলার তদন্তকারী অফিসার শংকর সাহার। ফলে, এরকম অবস্থায় হঠাৎ বিপ্লব রায়কে মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়ায় বিপদে পড়েছে অনুপমের পরিবারও। তারা এই মামলায় সরকারি আইনজীবী হিসেবে বিপ্লব রায়কেই পুনরায় চেয়ে আবেদন করছে লিগাল রিমেম্বারেন্স(L.R)-এর কাছে। আবেদন জানিয়েছে নবান্নেও। এই নিয়ে গতকাল বিকেলে নিহত অনুপমের মা কল্পনা সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "আমরা বিষয়টি নিয়ে আগামীকালই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে কালীঘাটের বাড়িতে যাব। তাঁকে অনুরোধ করব, মামলার বিচারের ক্ষেত্রে বিপ্লব রায়কে সরকারি আইনজীবী রাখাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়া আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করব।" কল্পনা সিংহের কথায়, এমনিতেই মামলা অনেকটা বিলম্বিত হয়েছে। তার উপর সরকারি আইনজীবী বিপ্লব রায়কে সরিয়ে দেওয়ায় মামলায় প্রভাব পড়তে পারে।
এবিষয়ে জেলা আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী শান্তময় বসুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "দু'জন সরকারি আইনজীবীর নামে চিঠি এসেছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী সরে গেলেও অনুপম হত্যা মামলায় কোনও প্রভাব পড়বে না। কলকাতা হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যেই মামলা শেষ করা যাবে।"
প্রসঙ্গত, 2017 সালের 2 মে বারাসতের হৃদয়পুরের বাড়িতে খুন হন বেসরকারি সংস্থার কর্মী অনুপম সিংহ। সেই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ অনুপমের স্ত্রী মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিতকে গ্রেপ্তার করে। ইতিমধ্যে এই মামলার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট বারাসত আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এখন এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে।