বাগদা, 28 নভেম্বর : উত্তর 24 পরগনার বাগদার মুহুরি পরিবার ৷ এই পরিবারেরই সদস্য ছিলেন শিবাণী মুহুরি ৷ শনিবার বিকেলে মৃত্যু হয় তাঁর ৷ শিবাণীর বয়স 90 ছাড়িয়েছিল ৷ তাই তাঁর মৃত্যুতে শোক হলেও বিষয়টাকে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলেন পরিবারের বাকিরা ৷ কিন্তু, তখনও তাঁরা জানতেন না, তাঁদের জন্য কী ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করে রয়েছে ! পরিবারের তরফে স্থির করা হয় নদিয়ার নবদ্বীপ শ্মশানে শিবাণীর মরদেহ দাহ করা হবে ৷ সেই মতোই করা হয় ব্যবস্থা ৷ মুহুরি পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও আত্মীয় ও প্রতিবেশী মিলিয়ে 40 থেকে 50 জন শ্মশানযাত্রায় সামিল হন ৷ আর সেই যাত্রাই তাঁদের কাল হয় ৷ নদিয়ার হাঁসখালিতে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনার (Nadia Road Accident) কবলে পড়ে শবযাত্রীদের গাড়ি ৷ তাতে এখনও পর্যন্ত 18 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ সেই খবর বাগদায় পৌঁছতেই শোকে হতবাক হয়ে যান বাসিন্দারা (Nadia Road Accident family reaction) ৷ গ্রামজুড়ে কান্নার রোল ওঠে ৷
এই ঘটনায় মুহুরি পরিবারের মোট পাঁচজন মারা গিয়েছেন ৷ মৃত্যু হয়েছে তাঁদের আরও ছ’জন আত্মীয়ের ৷ সব মিলিয়ে সংখ্যাটা 11 ৷ এছাড়াও, প্রতিবেশী বন্ধুদের মধ্যে প্রাণ গিয়েছে আরও সাতজনের ৷ স্বজনহারাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না প্রতিবেশীরা ৷ দুর্ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় ছুটে এসেছেন রাজনীতির কারবারিরা ৷ তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ছাড়াও বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া, বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার এবং গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন ৷ সকলেই দিয়েছেন পাশে থাকার আশ্বাস ৷
কিন্তু, শোকের আবহে নেতা, বিধায়কদের আশ্বাসেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না স্বজনহারারা ৷ দুর্ঘটনা যাঁদের কেড়ে নিয়েছে, তাঁদের অনেকেই পরিবারের রোজগেরে সদস্য ৷ এখন তাঁদের অবর্তমানে সংসার কীভাবে চলবে, তা ভেবে উঠতে পারছেন না সদ্য আপনজনদের হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়া মানুষগুলো ৷ তাঁদের আর্তি শুধু একটাই ৷ যাঁরা চিরকালের মতো ইহলোক ত্যাগ করেছেন, তাঁদের নাবালক সন্তানদের দায়িত্বটুকু অন্তত সরকার নিক ৷