সন্দেশখালি, 25 মে : সুন্দরবন ঘেঁষা সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ-সহ একাধিক ব্লকের নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন বিভিন্ন ফ্লাড সেল্টারগুলিতে । ঘূর্ণিঝড় যশের দাপটে প্রাণহানি ঠেকাতে ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার মানুষকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । আবার অনেকেই কাঁচা বাড়ি ছেড়ে নিজেরাই আসতে শুরু করেছেন এইসব আশ্রয় কেন্দ্রে । নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানোর প্রক্রিয়া জারি রয়েছে ৷ করোনা আবহের মধ্যে কোভিড বিধি মেনেই যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে ।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এমনিতেই জেরবার পশ্চিমবঙ্গ । তার ওপর আবার যশের ভ্রুকুটি । ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা । যশের মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই সমস্ত রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন । বিশেষ করে সুন্দরবন লাগোয়া সন্দেশখালি, হিঙ্গলগঞ্জ, মিনাখাঁ এবং হাড়োয়ায় যাঁরা নদীর পাড়ে বসবাস করেন, তাঁদের বিভিন্ন ফ্লাড সেল্টারে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পঞ্চায়েত এবং প্রশাসন ।
বসিরহাট মহকুমায় প্রায় 15টি আশ্রয় শিবির খোলা হয়েছে । এছাড়া দুর্গতদের জন্য সরকারি সাইক্লোন সেল্টারগুলিও কাজে লাগানো হচ্ছে । সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েক হাজার মানুষ । যেহেতু সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে উত্তর 24 পরগনা জেলা শীর্ষে রয়েছে । সেই কারণে এই বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে প্রশাসনকে ৷ তাই সংক্রমণ ঠেকাতে কোভিড বিধির উপরও জোর দেওয়া হয়েছে ফ্লাড সেল্টারগুলিতে । যাঁরা ঘর-বাড়ি ছেড়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে মাস্ক, স্যানিটাইজারের । রয়েছে শরীরের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রও ।
পাশাপাশি সমস্ত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার তরফে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প বসানো হয়েছে । সেখানে আশা কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে । তাঁদের কাজ মূলত করোনায় কেউ আক্রান্ত হলে তাঁকে আলাদা ঘরে থাকার ব্যবস্থা করা এবং বিশেষ যত্ন নেওয়া । আশ্রয় কেন্দ্রগুলিতে দুর্গতদের জন্য খাওয়া-দাওয়া ও চিকিৎসার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে ।
এই বিষয়ে সন্দেশখালি বিধানসভার তৃণমূল আহ্বায়ক শেখ শাজাহান বলেন, "ইতিমধ্যে নদী তীরবর্তী এলাকার অসংখ্য মানুষকে আমরা সরিয়ে নিয়েছি । বিভিন্ন স্কুল এবং ফ্লাড সেল্টারগুলিতে দুর্গতদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে । কোভিড বিধি মেনেই তাঁদের খাওয়া-দাওয়া এবং স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে । পাশাপাশি বিভিন্ন নদী বাঁধ ও ভেড়িগুলোর দিকেও সর্বদা নজর রেখে চলেছি আমরা । প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদেরও সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে এই দিকে ৷"
আরও পড়ুন : যশ সামলাতে আজ রাতে নবান্নেই থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী