কাঁচরাপাড়া, 30 অক্টোবর: জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারিকাণ্ডে যখন শাসকদলের ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়াচ্ছে বিরোধীরা। তখন ইডি তদন্তের আওতায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে যুক্ত করার দাবি জানালেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। দলের বর্ষিয়ান নেতা মুকুল রায়ের শারীরিক অসুস্থতার খোঁজখবর নিতে সোমবার তাঁর কাঁচরাপাড়ার ঘটক রোডের বাড়িতে আসেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক ও সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক।সঙ্গে ছিলেন তাঁরই সতীর্থ বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুবোধ অধিকারী। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানান জ্যোতিপ্রিয়-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজ্যের এই মন্ত্রী।
রেশনবন্টন দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের মোবাইল ফোন বর্তমানে ইডি-র স্ক্যানারে। প্রায় 25টিরও বেশি মোবাইলের তথ্য খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সম্প্রতি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আরও দুটি ফোন নম্বর এই দুর্নীতির তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, "এই দুটি ফোন নম্বরের সঙ্গে সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোগ রয়েছে ৷"
সেই বিষয়ে এদিন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "ওই দুটি নম্বর যেহেতু ওনার কাছে রয়েছে, সেহেতু দুটি ফোন নম্বরের বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন। কারণ শুভেন্দুর এত ফোন নম্বর জানা রয়েছে। তাই ওই দুটি ফোন নম্বরও অজানা নয় ওনার কাছে। তাহলে ভাবুন, যত দু-নম্বরি ফোন নম্বর। সবই শুভেন্দুর মুখস্থ। তাই আমরা দাবি করছি, শুভেন্দু অধিকারীকেও ইডি-র তদন্তের আওতায় আনা হোক ৷"
পাশাপাশি রেশনবন্টন দুর্নীতিকাণ্ডে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং সাংসদ দিলীপ ঘোষের মন্তব্যেরও জবাব দিয়েছেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক।তাঁর দাবি, "2021 সালে মমতা বন্দোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর কোনও দুর্নীতির অভিযোগ আসেনি। যা এসেছে তা সবটাই শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল সরকারে থাকাকালীন। নতুন সরকারের প্রায় আড়াই বছর অতিক্রান্ত। এই সময়কালে কেউ কখনও কোনও অভিযোগ করতে পারেনি। যা অভিযোগ সেটা 2017 অথবা 2018 সালের। তখন মমতা মন্ত্রিসভার প্রথম সারিতে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই, আগের মন্ত্রিসভার সবার বিরুদ্ধে যদি তদন্ত করতে হয় তাহলে শুভেন্দুকেও তদন্তের আওতায় আনা উচিত ৷"
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্কে দিল্লির কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি মমতার
অন্যদিকে, তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা বিধায়ক মুকুল রায়ের শারীরিক অসুস্থতার প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, "ওনার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি প্রশাসন দেখছে। চিকিৎসকরা ঠিকমতো ট্রিটমেন্ট করছেন। শুশ্রূষাও ঠিকমতো হচ্ছে। আশা করি, চিন্তার কিছু নেই। উনি ভালো আছেন। বাদ বাকিটা তো মেডিকেলের ব্যাপার ৷" যদিও মুকুল রায়ের বাড়িতে আসার কারণ হিসেবে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করার বিষয়টিই সামনে এনেছেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক।
আরও পড়ুন: ন্যানো ক্ষতিপূরণ! টাটাকে প্রায় 766 কোটি টাকা দিতে হবে মমতা সরকারকে
প্রসঙ্গত, মুকুল রায়ের শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কিছুদিন আগেই সোশাল মিডিয়ায় তাঁর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তৃণমূল নেতা মুকুল রায়কে যথেষ্টই অসুস্থ বলে মনে হয়েছে নেটিজেনদের একাংশের। এই ছবি প্রকাশ্যে আসায় ক্ষুদ্ধ হন মুকুল রায়ের পরিবার। যদিও এ নিয়ে কখনই তাঁরা প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। এদিনও পরিবারের সদস্যদের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি মুকুল রায়ের অসুস্থতা নিয়ে।