দমদম, 8 নভেম্বর: আগ্নেয়াস্ত্র-সহ চলন্ত ট্রেন থেকে এক অস্ত্র কারাবারিকে হাতেনাতে ধরল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ(One Arrested With Firearms by STF)। ধৃতের নাম তপন সাহা । সোমবার রাতে নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে আপ হাবড়াগামী লোকালে হানা দেয় এসটিএফের একটি টিম । সেখান থেকেই পাকড়াও করা হয় এই অস্ত্র কারবারিকে । এসটিএফ সূত্রে খবর, ধৃতের কাছ থেকে 2টি সেভেন এমএম পিস্তল এবং 2টি ওয়ান শাটার রিভলবার মিলেছে । সেগুলো কোথায় সরবরাহ করার উদ্দেশ্য ছিল ধৃত ব্যক্তির, তা জানার চেষ্টা করছে এসটিএফ ৷ ঘটনায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়ায় শিয়ালদা-বনগাঁ শাখার দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন চত্বরে ।
জানা গিয়েছে, ধৃত তপন সাহা উত্তর 24 পরগনার হাবড়ার মনসাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা । দীর্ঘদিন ধরেই সে অস্ত্র কারবারের সঙ্গে জড়িত । আগেও মাঝবয়সি ওই ব্যক্তি অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল ৷ কয়েক মাস জেল খাটার পর বাইরে বেরিয়ে সে আবারও অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে । সেই তথ্য এসটিএফের হাতে এসে পৌঁছতেই বেশ কয়েকদিন ধরে তার খোঁজ শুরু হয় ৷
এমনকি ধৃতর হাবড়ার বাড়িতেও যায় এসটিএফ ৷ কিন্তু সেখানে তাকে না-পেয়ে শেষে মোবাইল টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করতে শুরু করে এসটিএফ । আর তাতেই জানা যায় তপন বিহারের মুঙ্গেরে রয়েছে । সেখান থেকে অস্ত্র নিয়ে রাতে রাজ্যে ফিরবে ৷ সেই মতো এসটিএফের একটি টিম শিয়ালদা স্টেশনে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল । সেখান থেকেই তপনের গতিবিধি নজর রাখা হচ্ছিল । এরপর হাবড়াগামী লোকাল দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে প্রবেশ করতেই ট্রেনের কামরা থেকে হাতেনাতে ধরা হয় এই অস্ত্র কারবারিকে । তাকে পাকড়াও করে সোজা নিয়ে চলে যাওয়া হয় কলকাতার এসটিএফ অফিসে । সেখানেই রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলে ৷
আরও পড়ুন : বিজেপি নেতার গাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেফতারের দাবি তৃণমূলের
জেরা করে এসটিএফ আধিকারিকরা নিশ্চিত হন যে বাজেয়াপ্ত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহের বরাত পেয়েছিল ধৃত তপন সাহা । হাবড়া, অশোকনগর, বাদুড়িয়া, হাড়োয়া এবং বসিরহাটের প্রত্যন্ত এলাকায় সেগুলো পৌঁছে দিতেই মুঙ্গের থেকে আগ্নেয়াস্ত্রগুলি নিয়ে আসা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে রাজ্য এসটিএফ । এই অস্ত্র কারবারের সঙ্গে আর কারোর যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এদিকে, হাবড়া থানা এলাকায় তপনের পরিচিতি ছিল তপু নামে । সকলে তাকে এই নামেই চিনত ৷ সে যে অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত তা যেন বিশ্বাসই করতে পারছে না পরিবারের সদস্যরা । পরিবার সূত্রে খবর, গ্রামে গ্রামে গিয়ে শাড়ির ব্যবসা করত তপন ৷ তাহলে কি শাড়ি ব্যবসার আড়ালেই এই অস্ত্র কারবার চালাত সে ? পরিবারও কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি ৷
অন্যদিকে, উত্তর 24 পরগনার শাসন থেকে দক্ষিণ 24 পরগনার নরেন্দ্রপুর, কাশীপুর । পঞ্চায়েত ভোটের আগে একের পর এক জেলা থেকে বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে । এই ইস্যুতে বিরোধীরা একযোগে শাসকদলকে নিশানা করলেও পালটা জবাব দিতে ছাড়ছে না শাসক শিবিরও ।
আরও পড়ুন : পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকা থেকে অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেফতার 2