দত্তপুকুর, 28 অগস্ট: দত্তপুকুর বিস্ফোরণকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নীলগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। অভিযুক্তের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ । প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, নিহত কেরামত আলির সঙ্গে পার্টনারশিপে বাজি ব্যবসা চালাতেন ধৃত সফিকুল। বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সূত্রের খবর, এই ঘটনায় মোট চারজনের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তার মধ্যে প্রথম গ্রেফতার করা হল বিস্ফোরণকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত সফিকুলকে।
- ঘটনায় অভিযুক্ত
দত্তপুকুরের বেআইনি বাজি কারখানা বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও কয়েকটি নাম রবিবার থেকেই উঠছে । এর মধ্যে কেরামত আলির নাম। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, তিনি এই বেআইনি বাজি ব্যবসার মাথা। গতকালের বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্ত কেরামত ও তার ছেলের মৃত্যু হয়। আরও এক অভিযুক্ত, সইফুল আলির অবস্থাও বেশ খারাপ। এই মুহূর্তে তিনি বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ থেকে কারখানার জন্য শ্রমিক আনতেন এই সইফুল। সম্প্রতি অন্তত 20 জন এমন শ্রমিক এনেছিলেন ৷ যাঁরা ওই বেআইনি বাজি কারখানায় কাজ করছিলেন ।
- কারা কাজ করতেন দত্তপুকুর বেআইনি বাজি কারখানায়
কিন্তু গতকাল, রবিবার হওয়ায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক কাজে যোগ দেননি। না-হলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। এই শ্রমিকরা সুতি থানা এলাকার বাসিন্দা। ওই শ্রমিকদের পরিবারের দাবি, গতকাল বিস্ফোরণের পর থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ইতিমধ্যে তাঁরা দত্তপুকুুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এদিকে, গতকাল বেশকিছু দেহ শনাক্তকরণ করা সম্ভব হয়নি। এদিন তা করা হতে পারে বলে খবর। এসবের মধ্যেই নীলগঞ্জ থেকে সফিকুল ইসলামের গ্রেফতার করা হল। পুলিশ সূত্রে খবর, আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে ৷
- দুর্ঘটনার পর পুলিশের তল্লাশি
রবিবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর উত্তর 24 পরগনার দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামে রাতভর তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। রাত 1টার কিছুপর প্রথমে পুলিশ একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে তালা ভেঙে ঢোকে। বেশ কয়েকটি বস্তা উদ্ধার হয়। তার মধ্যে পাওয়া যায় সাদা পাউডার। এরপর রাত 2.23 মিনিটে শাহির হোসেন নামে এক ব্যক্তির গোডাউনে তল্লাশি চালানো হয়। গোডাউনের সদর দরজা বন্ধ থাকায় পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে পুলিশ । উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ বাজি। গোডাউনের সামনে বসে পুলিশ পিকেটিং ।
- দুর্ঘটনার মামলা
দত্তপুকুরের মোচপোল গ্রামে বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত 9 জনের মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে 4 জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 286, 304, 308, 34 বিস্ফোরক আইনের 9-এর বি ধারা এবং দমকল আইনের 24/26 ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, বেআইনি বাজি কারবারে আর কারা যুক্ত, তার খোঁজ চলছে । নাম উঠে এসেছে সামসুল আলি নামে এক স্থানীয় তৃণমূল কর্মীর।
- বর্তমান পরিস্থিতি
যে বাড়িতে বিস্ফোরণ হয় সেটি সামসুলের বলে দাবি স্থানীয়দের। তিনি কেরামত আলিকে বাড়িটি ভাড়া দেন বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের। অন্যদিকে, সোমবার সকালেও বিস্ফোরণস্থলের আশেপাশে ধরা পড়ল শিউরে ওঠার মতো ছবি। ঘটনাস্থলের 100 মিটার দূরে পুকুরে মিলল দেহাংশ। 200 মিটার দূরে পড়ে রয়েছে পায়ের অংশ, আঙুলের টুকরো। এসবই উস্কে দিয়েছে এগরা বিস্ফোরণের স্মৃতি!
আরও পড়ুন: সস্তার চাইনিজ মশলা ও তা ব্যবহারে অজ্ঞতার কারণেই হচ্ছে বিস্ফোরণ, মত গোয়েন্দাদের