দেগঙ্গা, 30 এপ্রিল: করোনার উপসর্গ নিয়ে দেগঙ্গায় মৃত্যু হল মা ও ছেলের । মৃত উম্মেতুন্নেসা (70) এবং তাঁর ছেলে সামিউদ্দিন (47) বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন । তারপরও করোনার পরীক্ষা করাননি তাঁরা । শ্বাসকষ্ট বাড়ায় শেষে চিকিৎসা শুরু হওয়ায় আগেই মৃত্যু হয় মায়ের । এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে মৃত্যু হয় ছেলেরও । কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে এই দুই মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেগঙ্গার চৌরাশি পঞ্চায়েত এলাকায় ।
আতঙ্কিত এলাকার লোকজন । স্থানীয়দের সন্দেহ, মা ও ছেলে দু'জনেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন । কারণ, করোনার উপসর্গ ছিল দু'জনের শরীরেই । কোভিড টেস্ট হলে মা এবং ছেলের রিপোর্ট পজিটিভ আসবে বলেও ধারণা স্থানীয় বাসিন্দাদের । জানা গিয়োছে, দেগঙ্গার চৌরাশি পঞ্চায়েতের রাজুকবের গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় বাড়ি প্রবীণ ওই মহিলার । ছেলে সামিউদ্দিন দেগঙ্গার জীবনপুর বাজারে একটি দড়ির কারখানায় কাজ করতেন । সপ্তাহ খানেক আগে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন । সেই সঙ্গে ছিল শ্বাসকষ্টও । তা সত্ত্বেও সামিউদ্দিন গুরুত্ব না দিয়ে কোভিড পরীক্ষা করাননি । বদলে শুধু রক্ত পরীক্ষা করান । বাড়িতেই জ্বরে আক্রান্ত ছেলের পরিচর্যা করছিলেন উম্মেতুন্নেসা । দু'দিন আগে তিনিও আক্রান্ত হন জ্বরে । সঙ্গে বাড়তে থাকে শ্বাসকষ্টও ।
70 বছরের প্রবীণ ওই মহিলার শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন তাঁকে বদর বাজারের কাছে এক চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়ে যান । কিন্তু চিকিৎসক দেখার আগেই সেখানে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন উম্মেতুন্নেসা । পরে, সেখান থেকে দেহ নিয়ে আসা হয় বাড়িতে । এদিকে, মায়ের মৃত্যুর পরই শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে ছেলেরও । ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েন পরিবারের লোকেরা । কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরে শেষে বৃহস্পতিবার রাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করার চেষ্টা করেন তাঁরা । কিন্তু শত চেষ্টাতেও ব্যবস্থা করা যায়নি অক্সিজেন সিলিন্ডারের । শেষে অক্সিজেনের অভাবে এদিন রাত দেড়টা নাগাদ বাড়িতেই মৃত্যু হয় সামিউদ্দিনের ।
আরও পড়ুন : হাবড়া পৌরসভার রেকর্ড রুমে আগুন লাগিয়েছে তৃণমূল, দাবি রাহুল সিনহার
করোনার সামান্য উপসর্গ দেখা দিলে যেখানে চিকিৎসকরা দেরি না করে প্রথমেই কোভিড টেস্ট করানোর কথা বলছেন, সেখানে জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও কেন ওই দু'জনের করোনা পরীক্ষা করতে উদাসীনতা দেখানো হল, সেই প্রশ্নই এখন বড় করে দেখা দিয়েছে । এক্ষেত্রে অসচেতনতাকেই দায়ী করছেন সবাই । অন্যদিকে, দেগঙ্গা ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই দু'জনের মৃত্যু হয়েছে, সেই কারণে সরকারি নিয়ম মেনে দু'জনেরই কোভিড টেস্ট হবে । সেই রিপোর্ট আসার পর দেহ সৎকারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । শুক্রবার পরিবারের লোককে সেই কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ।