বারাসত, 30 জুন: 'ভুল হয়ে থাকলে সংশোধন করে নিতে হবে। মাথানত করে ক্ষমা চাইতে হবে মানুষের কাছে গিয়ে'। ভোটের মুখে ফের দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে এমনই বার্তা দিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দলের আক্রান্ত কাউন্সিলর দেবব্রত পালের পাশে দাঁড়াতে বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর 24 পরগনার বারাসতে আসেন মমতার মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আক্রান্ত কাউন্সিলরের সঙ্গে এদিন বেশ কিছুক্ষণ একান্তে কথাও বলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে, এনিয়ে অবশ্য সাংবাদিকদের সামনে তিনি কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও ভোট সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে মুখ খুলেছেন বনমন্ত্রী। সেই সঙ্গে দলীয় কর্মীদের নমনীয় এবং ভুল সংশোধন করে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পরামর্শও দিতে দেখা গিয়েছে জ্যোতিপ্রিয়-কে।
তিনি বলেন,"আমিও যদি কোনও ভুল কাজ করে থাকি তাহলে মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব। আমার ভুলের জন্য কোনও মানুষ দুঃখ পেয়ে থাকলে বাড়িতে গিয়ে তাঁর কাছে ক্ষমা চাইব। এটা বলতে কোনও লজ্জা নেই। মানুষের কাছে ক্ষমা চাইব। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে মাথা নত করব না।আবারও বলছি এটা"। এরপরই আবেগপ্রবণ হয়ে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, "মানুষ মাত্রই তো ভুল হয়! সকলেই আমরা রক্ত মাংসে গড়া মানুষ। তাই, আমারও কোথাও ভুল হয়ে থাকতে পারে। মানুষই তো আবার ক্ষমা করে। ক্ষমাই পরম ধর্ম। কর্মীদেরও বলেছি যেখানে ভুল হয়েছে, সেখানে শুধরে নিতে হবে।ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে মানুষের কাছে গিয়ে"।
এদিকে, জ্যোতিপ্রিয়র বিধানসভা কেন্দ্র হাবরায় ভোট প্রচারে গিয়ে বনমন্ত্রী-র বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এমনকি, ইডি এসে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাঁটু ভাঙবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে এদিন নাম না করে পালটা সুকান্ত মজুমদারকে কটাক্ষ করেছেন বনমন্ত্রী। তাঁর কথায়, "আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে। তাই, ওর কথার উত্তর দিতে রুচিতে বাধে আমার। অত সময়ও নেই। তবে, যেদিন ভোটের রেজাল্ট বেরবে, সেদিনই উত্তর পেয়ে যাবে ও (সুকান্ত)। মানুষই জবাব দিয়ে দেবে। আমরা মানুষের কাছেই একমাত্র দায়বদ্ধ । অন্য কারও কাছে নই ।"
অন্যদিকে, সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি । এই তিন রাজনৈতিক দলের মধ্যে পঞ্চায়েত ভোটে গোপন সমঝোতা হয়েছে বলেও বিস্ফোরক দাবি করেছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, "পঞ্চায়েতে তিন দলের প্রার্থী কোনও আলাদা নয়! এদের প্রার্থী একই। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে চলছে বিরোধী এই তিন রাজনৈতিক দল। ভোট দেওয়ার আবেদনও করছে একে অপরকে।"
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটে মক্কায় বসে মনোনয়ন জমা তৃণমূল প্রার্থীর, খারিজ করল কমিশন
তিনি আরও বলেন, "2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের যে সমস্ত লোকজন বিজেপির হয়ে ভোট করেছিল তাঁদের পুনরায় সিপিএম ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। কিন্তু, বিজেপি সেটা করতে পারেনি। তাই, বিজেপির থেকে সিপিএম এবার বেশি মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে। অর্থাৎ সিপিএম চলে আসবে দ্বিতীয় স্থানে। তিনটি দল, দ্বিতীয়-তৃতীয়-চতুর্থ স্থানের জন্য লড়াই করছে। আমরা লড়াই করছি ৯৫ শতাংশ আসনে জয়ী হব বলে। ওরা যতই ভোটে গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করুক, মানুষ কিন্তু নির্বিঘ্নে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। অবাধ এবং সুষ্ঠু ভোট করাতে বদ্ধপরিকর আমরা।"