ETV Bharat / state

হাসপাতালে চিকিৎসায় সুস্থ যুবক, সোশাল মিডিয়ার সাহায্যে খুঁজে পেল পরিবার

বছর খানেক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যান মানসিক রোগী গৌতম । ঘুরতে ঘুরতে একদিন চলে আসেন বারাসতের দিকে । সেই সময় তাঁর হাতে আঘাতও ছিল ।

Psychiatry department of Barasat Hospital
হাসপাতাল থেকে গৌতম মণ্ডলের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুজোর উপহার
author img

By

Published : Oct 18, 2020, 1:14 PM IST

বারাসত, 18 অক্টোবর : মানসিক রোগীকে সুস্থ করে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঘরে ফেরাল বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । গৌতম মণ্ডল নামে ওই রোগীকে সুস্থ অবস্থায় আজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে গেলেন পরিবারের লোকেরা । হাসপাতালের তরফে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় পুজোর নতুন জামাকাপড়ও । দেবী বোধনের আগে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরে চোখেমুখে খুশির ছোঁয়া গৌতমের । আনন্দিত পরিবারের লোকেরাও । আর সোশাল মিডিয়ার হাত ধরে ঘরের ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পেরে আপ্লুত হাসপাতাল সুপার ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বছর খানেক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যান গৌতম । ঘুরতে ঘুরতে একদিন চলে আসেন বারাসতের দিকে । সেই সময় তাঁর হাতে আঘাতও ছিল ।এরপর পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে বারাসত হাসপাতালে । সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে ভরতি করা হয় সার্জিকাল ওয়ার্ডে । হাতের আঘাতের চিকিৎসা করার সময় তাঁর শারীরিক লক্ষণ দেখে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন গৌতম মানসিক রোগে আক্রান্ত । এরপরই তাঁকে সার্জিকাল ওয়ার্ড থেকে স্থানান্তরিত করা হয় মানসিক ওয়ার্ডে ।

মানসিক রোগী সুস্থ করে তুলতে পেরে খুশি হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ

সেখানে দীর্ঘদিন চলে ওই যুবকের মানসিক রোগের চিকিৎসা । তখনও যুবকের নাম ও পরিচয় সঠিকভাবে জানতেন না হাসপাতালের চিকিৎসকরা । পরে সুস্থ হওয়ার পর তাঁর নাম ও পরিচয় জানতে পারেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । জানা যায়, গৌতম মণ্ডল নামে ওই যুবকের বাড়ি হুগলির কোন্নগরে । এরপর, বিভিন্নভাবে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । কিন্তু তা সফল হয়নি । এরপরই হাতিয়ার করা হয় সোশাল মিডিয়াকে । কয়েকদিন আগে ওই যুবকের ছবি সহ নাম, পরিচয় সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । আর তাতেই মেলে সাফল্য । ছবি ও নাম দেখে চিনতে পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিবারের লোকেরা । এরপর,তাঁদের সমস্ত ডকুমেন্ট নিয়ে আসতে বলা হয় বারাসত হাসপাতালে । সেই মতো আজ হাসপাতালে আসলে সুস্থ হওয়া ওই মানসিক রোগীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন হাসপাতাল সুপার ।

এই বিষয়ে বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, "সোশাল মিডিয়ার ভালো মন্দ দুটিই আছে । এক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো দিক সোশাল মিডিয়া । আমরা ওঁকে (গৌতম মণ্ডল) মানসিক রোগ থেকে সুস্থ করে আজ বাড়ি ফেরালাম । এর থেকে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না ।" তাঁর কথায়, গৌতম অসম্ভব নেশা করত । তিনি আরও জানান, "নেশার কারণে ওঁর সংসারও একসময় ভেঙে যায় । স্ত্রী ওঁকে ছেড়ে চলে যায় । গৌতমের 13 বছরের একটি মেয়ে রয়েছে । আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা করার আগে বিভিন্ন রিহ্যাবিলিটি সেন্টারে ওঁর চিকিৎসাও হয় । সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে ফের নেশার দিকে ঝুঁকতে শুরু করে গৌতম । ফের সুস্থ করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে খুব ভালো লাগছে ।"

এদিকে, গৌতমের মতো ভবঘুরে প্রায় 27 জন মানসিক রোগীকেও সুস্থ করে তুলেছে বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । তাঁদের হাতেও আজ নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে । শুধু বস্ত্র তুলে দেওয়াই নয়, পুজোর চারদিন তাঁদের জন্য থাকছে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও । কোরোনা আবহে এবছর পুজো মণ্ডপে ঠাকুর দেখার ব্যবস্থা থেকে বিরত করা হলেও ভবঘুরে ওই রোগীরা যাতে টিভির পর্দায় ঠাকুর দেখতে পান তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল ।

অন্যদিকে, একবছরও বেশি সময় পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরে আনন্দে আত্মহারা গৌতম । বলেন , "খুব ভালো লাগছে এতদিন পর বাড়ি ফিরতে পেরে । এরজন্য ডাক্তারদের অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই । হাসপাতাল থেকে দেওয়া নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখব । চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনেই চলব । আর কোনওদিন নেশা করব না ।"

বারাসত, 18 অক্টোবর : মানসিক রোগীকে সুস্থ করে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঘরে ফেরাল বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । গৌতম মণ্ডল নামে ওই রোগীকে সুস্থ অবস্থায় আজ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে গেলেন পরিবারের লোকেরা । হাসপাতালের তরফে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় পুজোর নতুন জামাকাপড়ও । দেবী বোধনের আগে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরে চোখেমুখে খুশির ছোঁয়া গৌতমের । আনন্দিত পরিবারের লোকেরাও । আর সোশাল মিডিয়ার হাত ধরে ঘরের ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পেরে আপ্লুত হাসপাতাল সুপার ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বছর খানেক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যান গৌতম । ঘুরতে ঘুরতে একদিন চলে আসেন বারাসতের দিকে । সেই সময় তাঁর হাতে আঘাতও ছিল ।এরপর পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে বারাসত হাসপাতালে । সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে ভরতি করা হয় সার্জিকাল ওয়ার্ডে । হাতের আঘাতের চিকিৎসা করার সময় তাঁর শারীরিক লক্ষণ দেখে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন গৌতম মানসিক রোগে আক্রান্ত । এরপরই তাঁকে সার্জিকাল ওয়ার্ড থেকে স্থানান্তরিত করা হয় মানসিক ওয়ার্ডে ।

মানসিক রোগী সুস্থ করে তুলতে পেরে খুশি হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ

সেখানে দীর্ঘদিন চলে ওই যুবকের মানসিক রোগের চিকিৎসা । তখনও যুবকের নাম ও পরিচয় সঠিকভাবে জানতেন না হাসপাতালের চিকিৎসকরা । পরে সুস্থ হওয়ার পর তাঁর নাম ও পরিচয় জানতে পারেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । জানা যায়, গৌতম মণ্ডল নামে ওই যুবকের বাড়ি হুগলির কোন্নগরে । এরপর, বিভিন্নভাবে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । কিন্তু তা সফল হয়নি । এরপরই হাতিয়ার করা হয় সোশাল মিডিয়াকে । কয়েকদিন আগে ওই যুবকের ছবি সহ নাম, পরিচয় সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । আর তাতেই মেলে সাফল্য । ছবি ও নাম দেখে চিনতে পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিবারের লোকেরা । এরপর,তাঁদের সমস্ত ডকুমেন্ট নিয়ে আসতে বলা হয় বারাসত হাসপাতালে । সেই মতো আজ হাসপাতালে আসলে সুস্থ হওয়া ওই মানসিক রোগীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন হাসপাতাল সুপার ।

এই বিষয়ে বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, "সোশাল মিডিয়ার ভালো মন্দ দুটিই আছে । এক্ষেত্রে অবশ্যই ভালো দিক সোশাল মিডিয়া । আমরা ওঁকে (গৌতম মণ্ডল) মানসিক রোগ থেকে সুস্থ করে আজ বাড়ি ফেরালাম । এর থেকে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না ।" তাঁর কথায়, গৌতম অসম্ভব নেশা করত । তিনি আরও জানান, "নেশার কারণে ওঁর সংসারও একসময় ভেঙে যায় । স্ত্রী ওঁকে ছেড়ে চলে যায় । গৌতমের 13 বছরের একটি মেয়ে রয়েছে । আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা করার আগে বিভিন্ন রিহ্যাবিলিটি সেন্টারে ওঁর চিকিৎসাও হয় । সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে ফের নেশার দিকে ঝুঁকতে শুরু করে গৌতম । ফের সুস্থ করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে খুব ভালো লাগছে ।"

এদিকে, গৌতমের মতো ভবঘুরে প্রায় 27 জন মানসিক রোগীকেও সুস্থ করে তুলেছে বারাসত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । তাঁদের হাতেও আজ নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয় হাসপাতালের তরফে । শুধু বস্ত্র তুলে দেওয়াই নয়, পুজোর চারদিন তাঁদের জন্য থাকছে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও । কোরোনা আবহে এবছর পুজো মণ্ডপে ঠাকুর দেখার ব্যবস্থা থেকে বিরত করা হলেও ভবঘুরে ওই রোগীরা যাতে টিভির পর্দায় ঠাকুর দেখতে পান তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল ।

অন্যদিকে, একবছরও বেশি সময় পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরে আনন্দে আত্মহারা গৌতম । বলেন , "খুব ভালো লাগছে এতদিন পর বাড়ি ফিরতে পেরে । এরজন্য ডাক্তারদের অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই । হাসপাতাল থেকে দেওয়া নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখব । চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনেই চলব । আর কোনওদিন নেশা করব না ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.