বাদুড়িয়া, 8 মার্চ : ইউক্রেনের রাজধানী কিভে তখন অনবরত গোলা-গুলি চলছে । একের পর এক মিসাইল ছুড়ছে রুশ সেনাবাহিনী । সেই পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে 48 জন সহপাঠীকে বের করে হাঙ্গেরি সীমান্তে পৌঁছানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন বাংলার মেডিকেল পড়ুয়া আজহার ইসলাম । যাবতীয় বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সেই দায়িত্বে সফল হওয়ায় খুশি আজহার (Students Return From Ukraine) । তাঁর এই কাজে গর্বিত শহিদ সেনা কর্মীর পরিবার ।
উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়া নয়াবস্তিয়া পঞ্চায়েতের কাঁকড়া গ্রামের বাসিন্দা বছর চব্বিশের আজহার ইসলাম । বাবা আমিরুল ইসলাম কর্মরত ছিলেন সেনাবাহিনীতে। চার বছর আগে দেশের হয়ে প্রাণ দিতে হয় তাঁকে। মা অলিভিয়া ইসলাম গৃহবধূ। পরিবারের একমাত্রই সন্তান আজহার। বাবার স্বপ্ন-পূরণ করতে 2018 সালে ডাক্তারি পড়ার জন্য ইউক্রেন পাড়ি দেন তিনি। ইউক্রেনের রাজধানী কিভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আজহার ।
আরও পড়ুন : তিন মাসে স্বপ্নভঙ্গ, ইউক্রেন থেকে ফিরলেন নদিয়ার ছাত্র
সবকিছুই ঠিকঠাকভাবে চলছিল । কিন্তু, ছন্দপতন ঘটল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War ) পরিস্থিতির জেরে। যুদ্ধ ক্ষেত্রে আটকে পড়েন আজহার-সহ 48 জন মেডিকেল পড়ুয়া । যুদ্ধক্ষেত্র পেরিয়ে কিভাবে কিভ থেকে ইউক্রেন-হাঙ্গেরি সীমান্তে পৌঁছাবেন, তা ভেবেই ঘুম উড়েছিল মেডিকেলের চতুর্থ বর্ষের এই পড়ুয়ার। যদিও মনোবল না হারিয়ে প্রায় এগারশো কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কোনওরকমে 48 জন সহপাঠীকে নিয়ে হাঙ্গেরি সীমান্তে পৌঁছান আজহার। সেখান থেকে ভারতীয় দূতাবাসের সহযোগিতায় বিশেষ বিমানে দিল্লি বিমানবন্দরে নামেন সকলে।
এরপর দিল্লি থেকে বিমানে যে যার মতো বাড়ি ফেরেন। সোমবার গভীর রাতে বাদুড়িয়ার বাড়িতে আসেন আজহার । ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসায় স্বস্তিতে শহিদ সেনা কর্মীর পরিবার।
আরও পড়ুন : রণক্ষেত্র ইউক্রেন থেকে বাড়ি ফিরলেন পূর্ব বর্ধমানের আকিব
আজহার বলেন, "ডাক্তারি পড়াশোনার ক্ষতি হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে 48 জন সহপাঠীকে নিয়ে একসঙ্গে দেশে ফেরার আনন্দই আলাদা।" ভারতে থেকেই যাতে আজহারের মতো অন্যান্য মেডিকেল পড়ুয়ারাও ডাক্তারির কোর্স সম্পূর্ণ করতে পারেন, তার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে আর্জি জানিয়েছে তাঁর পরিবার ৷