ঠাকুরনগর, 22 জানুয়ারি : মতুয়াদের নাগরিকত্বের দাবি পূরণের লক্ষে 30 জানুয়ারি ঠাকুরনগরে আসছেন অমিত শাহ । তার আগে মতুয়াদের এককাট্টা করতে আসরে নেমেছে তৃণমূল । আজ মতুয়া অধ্যুষিত তিন বিধানসভা এলাকা গাইঘাটা, বনগাঁ ও বাগদায় তৃণমূলের সভা রয়েছে । কিন্তু, মতুয়াদের এককাট্টা করার ওই তিন সভায় থাকছেন না খোদ মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর । আর তা নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েননি বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ।
বিধানসভা নির্বাচনের মুখে মতুয়া ভোট কাছে টানতে মরিয়া তৃণমূল ও বিজেপি দু'পক্ষই । সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কবে চালু হবে সে ব্যাপারে বার্তা দিতে চলতি মাসের 30 তারিখে ঠাকুরনগরে আসছেন অমিত শাহ । মতুয়াদের প্রত্যাশা, ওইদিন তিনি নাগরিকত্বের ব্যাপারে স্পষ্ট বার্তা দেবেন । রাজনৈতিক বিশ্লষকরা মনে করছেন, অমিত শাহ সেদিন মতুয়াদের নাগরিকত্বের ব্যাপারে সদর্থক কোনও ঘোষণা করলে বিধানসভা নির্বাচনে তার সুফল ঘরে তুলবে বিজেপি । রাজ্যে মতুয়া অধ্যুষিত 84টি বিধানসভা কেন্দ্রে বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে যাবে গেরুয়া শিবির ।
তাই, বিজেপির যাত্রাভঙ্গের লক্ষে আসরে নেমে পড়েছে তৃণমূল শিবিরও । অমিত শাহর সভার আগে মতুয়াদের এককাট্টা করতে তারা পথে নেমে পড়েছে । আজ মতুয়া পীঠস্থান ঠাকুরবাড়ির চারপাশের তিন বিধানসভা কেন্দ্র-গাইঘাটা, বনগাঁ ও বাগদায় তৃণমূলের 3 টি সভা হবে । ওই তিন সভায় মতুয়া মহাসংঘের প্রতিনিধিরা থাকবেন । তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করবেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । থাকবেন সাংসদ সৌগত রায়ও । মতুয়া মহাসংঘের সহ সভাপতি অভিজিৎ বিশ্বাস বলেন, "সিএএ নিয়ে বিজেপি যে নীতি নিয়েছে, আমরা তার বিরোধী । আমরা মতুয়াদের সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা দিতে আজ তিনটি সভা করব । দুই মন্ত্রী থাকবেন । সঙ্গে থাকবেন সাংসদ সৌগত রায়ও ।"
আরও পড়ুন : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইন জানেন না, নাগরিকত্ব প্রশ্নে কটাক্ষ শান্তনুর
কিন্তু তৃণমূল যে মতুয়াদের নিয়ে সভা করবে, তার সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুরই তাতে থাকছেন না । মমতাবালা টেলিফোনে তাঁর না থাকার কারণ সম্পর্কে বলেছেন, "ত্রিপুরায় আমার কাজ রয়েছে । আমি দলকে সেটা জানিয়েও দিয়েছি । দলের কর্মসূচি আমার অজ্ঞাতেই ঠিক করা হয়েছে ।" দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মতুয়াদের নিয়ে সভা করবে তৃণমূল । অথচ মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুরের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনাই করেননি কোনও নেতা । তাই তিনি দলকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ওই তিন সভায় থাকবেন না ।
আর বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ঠাকুরবাড়ির সদস্য বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর । তিনি বলেছেন, "তিনি কেন তাঁর দলের কর্মসূচিতে থাকবেন না, তা বলতে পারব না । তবে মতুয়াদের নাগরিকত্বের বিরোধিতা করলে যে মতুয়া সমাজে কুখ্যাত হতে হবে তা সকলেই জানেন ।" ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দলের মতুয়া সম্মেলনে মমতাবালার গরহাজিরা নিয়ে বিড়ম্বনা বাড়ল ঘাসফুল শিবিরে ।