দেগঙ্গা, 28 ডিসেম্বর: রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও রামমন্দির উদ্বোধন ঘিরে এখন সাজ সাজ রব অযোধ্যায় । 22 জানুয়ারির ওই অনুষ্ঠানের আগেই 30 ডিসেম্বর অযোধ্যা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । রামমন্দির উদ্বোধনের বিষয়টি রাজনৈতিক আঙিনায় প্রচারের হাতিয়ার করেছে বিজেপি । এই আবহে উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গার চাকলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও উঠে এল তীর্থস্থানের উন্নয়নের খতিয়ান । বাংলায় রাজ্য সরকার কোন কোন তীর্থস্থান উন্নয়নে কাজ করেছে, বৃহস্পতিবার তার বিস্তারিত বিবরণ দিলেন তিনি ।
এ দিন দেগঙ্গায় সভার আগে চাকলায় লোকনাথ মন্দিরে পুজো দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । চাকলায় পুজো দিয়ে একতার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । তার সঙ্গেই দিয়েছেন বাংলার তীর্থস্থানগুলির উন্নয়নের খতিয়ান । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তীর্থস্থানগুলির উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে । বাংলাজুড়ে তীর্থস্থানগুলির জন্য 400 কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে ।’’
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরকে ঢেলে সাজিয়েছে রাজ্য প্রশাসন । কালীঘাটের উন্নয়ন প্রকল্পও শুরু হয়েছে । সেই প্রসঙ্গও শোনা যায় মুখ্য়মন্ত্রীর মুখে । তিনি বলেন, ‘‘দক্ষিণেশ্বরের পর কালীঘাট মন্দিরেও স্কাইওয়াক হচ্ছে ।’’ কিছুদিন পরেই শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা । প্রথম থেকেই সেই মেলার পরিকাঠামো উন্নয়নের একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার । সেই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মমতার মন্তব্য, ‘‘গঙ্গাসাগরে আগে থাকার জায়গাও ছিল না । এখন আমূল পরিবর্তন হয়েছে ।’’ দিঘায় পুরীর মন্দিরের আদলে জগন্নাথ মন্দির তৈরি হচ্ছে । সেই প্রসঙ্গও উঠে এসেছে মুখ্য়মন্ত্রীর বক্তব্যে ।
এ দিন তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলায় ধর্মীয় পর্যটনের প্রায় 400টি স্থান আছে । মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য অনেক কাজ করেছি । বড়মার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলাম ।’’ এ দিন একতার বার্তাও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর মতে, ‘‘বাংলার মতো একতা কোথাও নেই, যে যার মতো ধর্ম পালন করে । বড়দিন থেকে ইদ, সব অনুষ্ঠানই আমরা পালন করি ।’’
মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, ঠাকুরনগরকে ঢেলে সাজানো থেকে মতুয়া বিকাশ পরিষদ গঠন করা হয়েছে । হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়, পিআর ঠাকুর কলেজ, আইটিআই পলিটেকনিক কলেজও হয়েছে । মধ্যমগ্রামে অনুকূল ঠাকুরের সৎসঙ্গের জন্য 5 একর জমি দেওয়া হয়েছে । 3 কোটি ব্যয়ে ওঁকারনাথ তোরণ তৈরি হয়েছে ডানলপে । ইস্কনের জন্য 700 একর জমি দেওয়া হয়েছে ৷ সতীপীঠগুলোর উন্নয়ন, জল্পেশ মদনমোহন মন্দিরের উন্নতি হয়েছে ৷ তারাপীঠ, পাথরচাপরি, ফুরফরা শরিফের জন্যও একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে বলে মনে করিয়েছেন তিনি ।
পর্যটন ব্যবসা নিয়ে বরাবরই উৎসাহ দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বাংলার পর্যটন ব্যবসার উন্নতি নিয়ে একাধিক প্রকল্পও চালু করেছে রাজ্য সরকার । এ দিন তিনি বলেন, ‘‘তীর্থস্থানগুলিকে একসঙ্গে জোড়ার চেষ্টা করেছি । দেশ বিদেশের মানুষ বলছে, পশ্চিমবঙ্গ ট্যুরিজমের সেরা ডেস্টিনেশন । রিলিজিয়াস ট্যুরিজমের 400 স্থান আছে এখানে ।’’
আরও পড়ুন: