কলকাতা, 11 ফেব্রুয়ারি: বিভিন্ন সময় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে (Madan Mitra on Control Commission) । নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও দল কড়া অবস্থান গ্রহণ করেছে । দলের তরফ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, দুর্নীতি কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না । কিন্তু এরপরও উঠছে অভিযোগ। এই অবস্থায় বামপন্থীদের মতো তৃণমূলের অন্দরে কন্ট্রোল কমিশন গঠনের ডাক দিলেন দলের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র ।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র কামারহাটিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি । সেখানেই শাসক দলের বিভিন্ন নেতার দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে মদন বলেন, "আমি বলব দল প্রচন্ড নিয়ন্ত্রণ করছে । দলের মধ্যে অবিলম্বে কন্ট্রোল কমিশন বসানো উচিত । প্রয়োজনে দলের আরও কঠোর হওয়া উচিত । দল কাউকে রেয়াত করছে না । বিশেষ করে অভিষেক সময় দিয়ে চেষ্টা করছেন । তারপরও যে ঘটনাগুলি ঘটছে, আমার মনে হয় দলের আরও কঠোর হওয়া উচিত । আমি মদন মিত্র আমাকে মানুষ চেনে। আমি যদি দলের নামে যেখানে সেখানে গিয়ে যা খুশি তাই করি ,তোলাবাজি করি, তাহলে দল আমাকে নিয়ন্ত্রণ করবে । সেক্ষেত্রে কোর্টের জন্য অপেক্ষা করবে কেন !"
এখানেই শেষ নয়, এদিনের মঞ্চ থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়েও সরব হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী । তিনি বলেন, " মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় । তাঁকে শুধু সরিয়ে দেওয়া হয়নি, তাঁর পদটাও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে । তৃণমূল কোনও অবস্থাতেই দুর্নীতিকে সমর্থন করে না । একটা চক্র নিশ্চিতভাবে দুর্নীতি করেছে । এই ব্যাপারে কখনও কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা তৃণমূল করেনি । যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ আছে তাদের কারও পাশে দল দাঁড়ায়নি ।"
আরও পড়ুন: পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ক্যান্সারের সঙ্গে তুলনা মদনের
প্রসঙ্গত, বামফ্রন্ট আমলে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দলের অন্দরে কন্ট্রোল কমিশনের দাবি উঠত । এবার এই কথা শোনা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতার মুখেও ৷ খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তাহলে এই মুহূর্তে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কি শাসকদল বামপন্থীদের দেখানো পথেই হাঁটবে ? যদিও এ প্রসঙ্গে একমত নন সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ী । তিনি বলেন, " মদন মিত্র তো নিজেও মন্ত্রী ছিলেন । তাঁর বিরুদ্ধেও তো দুর্নীতিতে যুক্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে । অতএব তাঁর কথার কী গুরুত্ব রয়েছে ! এই ধরনের জোকারের কথায় কোন জবাব দেব না ।" প্রসঙ্গত মদন মিত্র যেদিন এই দাবি করেছেন সেদিনই শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রশ্নে কড়া অবস্থান নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট । 1 হাজার 911 জনের চাকরি বাতিল করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । ঠিক এই পরিস্থিতিতে মদনের দাবি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ।