মধ্যমগ্রাম, 8 অগস্ট : বনগাঁ লোকসভার পাঁচটি বিধানসভায় খারাপ ফলের অন্তর্তদন্ত করতে 11 জনের কমিটি গঠন করল উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস । শনিবার দুপুরে মধ্যমগ্রামে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে ওই পাঁচ বিধানসভায় খারাপ ফলের কারণ পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসেন জেলা তৃণমূল নেতারা । বৈঠকে বনগাঁ উত্তর ও দক্ষিণ, বাগদা, গাইঘাটা এবং স্বরূপনগর বিধানসভার নেতৃত্বরা যেমন হাজির ছিলেন, তেমনই উপস্থিত ছিলেন খোদ জেলার সভাপতি তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ।
সূত্রের খবর, বৈঠকে খারাপ ফলের পর্যালোচনা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে । খারাপ ফলের পিছনে ব্লক ও জেলা নেতৃত্বের সমন্বয়ের অভাব ছিল বলে মনে করছেন জেলা নেতৃত্বের একাংশ । সমন্বয়ের অভাব মেটাতে বৈঠকে উদ্যোগী হয়েছেন জেলার প্রথম সারির নেতারা । ঠিক হয়েছে, 11 জনের কমিটি এবার থেকে ব্লক ও জেলা নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে ।
বৈঠক শেষে জেলা তৃণমূলের সভাপতি ও বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "বনগাঁ উত্তর ও দক্ষিণ, গাইঘাটা ও বাগদা এই চারটি আসনে আমরা খুব কম মার্জিনে হেরেছি । স্বরূপনগরে অবশ্য আমরা জয়লাভ করেছি । বনগাঁ লোকসভায় হারার মার্জিন এবারের বিধানসভায় আমরা অনেকটাই কমিয়ে আনতে পেরেছি । তা সত্বেও বনগাঁ লোকসভার ওই পাঁচটি বিধানসভার আসনে আশানুরূপ ফলাফল আমরা করতে পারেনি ।"
তিনি আরও বলেন, "কেন এমন হল, তা খতিয়ে দেখতে আমরা ওই পাঁচটি বিধানসভায় 11 জনের কমিটি গঠন করেছি । এই কমিটিতে যেমন ব্লক সভাপতি, স্থানীয় পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা থাকবেন, তেমনই থাকবেন জেলা নেতৃত্ব । তারাই ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেবেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের কাছে । এরপর সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ।"
বনগাঁ লোকসভার চারটি বিধানসভায় পরাজয়ের পিছনে দলের কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে ? এই প্রশ্নের উত্তরে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, "দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই ।নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও তা আমরা এক মাসের মিটিয়ে নেব ।"
বিজেপিতে যাওয়া অনেক নেতাই ফের তৃণমূলে ভেড়ার চেষ্টা করছেন । তাদের কি দলে নেওয়া হবে ? এর জবাবে জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, "এই বিষয়টি সম্পূর্ণ রাজ্য নেতৃত্বের এক্তিয়ারভুক্ত । যদি বিজেপিতে যাওয়া কোনও নেতার বিরুদ্ধে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের কোনও অভিযোগ থাকে, সেটিও লিখিত আকারে জানানো হবে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে । এরপর, তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন কাকে দলে নেওয়া হবে, আর কাকে নেওয়া হবে না ।"
এদিকে, দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে বাদুড়িয়া ব্লকের শায়েস্তাপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি ও পঞ্চায়েত সদস্য সেলিম শাহরিয়াকে ছয় বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা করেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । বলেন, "তাঁকে অনেকবার সতর্ক করা হয়েছে । তা সত্বেও তলেতলে তিনি বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করছিলেন । তাই তাঁকে শোকজ় করার পর বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।"
দলবিরোধী কাজ যে কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না, তাও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।