গাইঘাটা, 23 জুন: অনাস্থা ভোটের আগেই প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে ইস্তফা পত্র জমা দিলেন শিমুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কনা গুহ।
বুধবার দুপুরে উত্তর 24 পরগণার গাইঘাটা ব্লক অফিসে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি । কনাদেবী বলেন "শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমি পদত্যাগ করলাম । আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি, ভবিষ্যতেও থাকব ।"
যখন কনা গুহ প্রধান নির্বাচিত হন তখন শিমুলপুর পঞ্চায়েতে মোট সদস্য সংখ্যা ছিল 20 । যার মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল 13 টি ও বিজেপি 7 টি আসন পেয়েছিল । পরবর্তী কালে একজন তৃণমূল সদস্য পদত্যাগ করায় তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা দাড়ায় 12 । বিধানসভা ভোটে গাইঘাটা কেন্দ্রে প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় দলের বিরুদ্ধে একাধিক ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন কনাদেবীর স্বামী তথা গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য ধ্যানেশ নারায়ণ গুহ। এরপর কনা দেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন শিমুলপুর পঞ্চায়েতের 11 জন তৃণমূল সদস্য । যদিও ভোটের কারণে সেই সময় অনাস্থা খারিজ হয়ে যায় । পরবর্তীতে বিধানসভা নির্বাচনের পর তাঁর বিরুদ্ধে ফের অনাস্থা আনেন তৃণমূলের সদস্যরা ।
আগামী 25 জুন অনাস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু তাঁর আগেই এদিন প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন কনাদেবী । রাজনৈতিক মহলের মতে, অনাস্থা ভোটে হার নিশ্চিত বুঝেই পদত্যাগ করতে চাইছেন কনাদেবী । যদিও সেই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়ে শারীরিক অসুস্থতাকে পদত্যাগের কারণ হিসেবেই দেখাচ্ছেন কনা গুহ ৷
পদত্যাগের বিষয়ে তৃণমূল নেতা তথা গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস বলেন, "কনা তৃণমূলেরই প্রধান ছিলেন । বিধানসভা ভোটের আগে আমাদের প্রার্থীর হয়ে তাঁকে প্রচার করতে দেখা যায়নি । তাঁর বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল ৷ আজ পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে তিনি দলের প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছেন । এবার দল তাঁর বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে ।"
আরও পড়ুন: বারাসতে অসহায় পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিল লোকেশ্বরানন্দ আই ফাউন্ডেশন
সম্প্রতি কনাদেবীর স্বামী ধ্যানেশ নারায়ণ গুহর বিরুদ্ধে গাইঘাটা থানায় বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে ৷ এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য, দিন কয়েক আগে তাঁর গাড়িচালককে গ্রেফতার করে আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ । পুলিশের জেরায় চালক স্বীকার করেছিল উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ধ্যানেশের কথায় নিয়ে আসা হয়েছিল । বর্তমানে ধ্যানেশ পলাতক । তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এই বিষয়ে কনা গুহ বলেন, "আমার স্বামীর নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে । এই জন্যে আমি খুবই বিব্রত । সে কারণে আমার পদত্যাগের চিঠি দিতে দেরি হল । আরও আগেই দিতাম ।"
রাজনৈতিক মহলের মতে, স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হওয়ার কারণেই পঞ্চায়েত প্রধানের পদ ছাড়তে বাধ্য হলেন কনা গুহ ।