দেগঙ্গা, 17 এপ্রিল : ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনের ছায়া এবার উত্তর 24 পরগনার দেগঙ্গায় । নায্য ক্ষতিপূরণ না মেলায় কর্মীদের আটকে রেখে পাওয়ার গ্রিডের কাজ বন্ধ করে দিলেন চাষিরা (Farmers kept power grid workers protested for compensation)। ঘটনাকে ঘিরে রবিবার সরগরম হয়ে ওঠে দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েত এলাকায় ।
আন্দোলনকারীদের দাবি, যতক্ষণ না পর্যন্ত জমি বাবদ নায্য ক্ষতিপূরণ মিলছে, ততক্ষণ বন্ধ থাকবে পাওয়ার গ্রিডের তার টানার কাজ । কোনও অবস্থাতেই কাজ করতে দেওয়া হবে না ৷ দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘেরাও মুক্ত হন কর্মীরা । এরপরই পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় । তবে বিক্ষোভের জেরে এদিনের মতো পাওয়ার গ্রিডের কাজ বন্ধ হয়ে যায় ।
দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রামে পাওয়ার গ্রিডের কাজ চলছে প্রায় দু'বছর ধরে । পাওয়ার গ্রিডের জন্য প্রথমে চাষিদের একাংশ জমি দিতে রাজি না হলেও পরে আলোচনার মাধ্যমে সেই সমস্যা মিটে যায় বলে জানা গিয়েছে । চাষিদের দাবিমতো জমিবাবদ সরকার নির্ধারিত নায্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ ।
আরও পড়ুন : Panihati Councillor Murder Case : পানিহাটিতে কাউন্সিলর খুনে গ্রেফতার আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহকারী
অভিযোগ, এরপরও নায্য ক্ষতিপূরণ পাননি অনেকে । বহুবার এই বিষয়ে দরবার করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন কিংবা পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ কোনও কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে । তারই মধ্যে এদিন সকালে সেফটি তার টানার কাজ করতে চাঁপাতলা গ্রামে যান পাওয়ার গ্রিডের কর্মীরা । তাঁদের মালপত্র নামাতে দেখে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে চাষীদের একাংশ । বাধা দেওয়া হয় তাঁদের কাজ করতে । নায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে একসময় আটকে রাখা হয় কর্মীদের ।
ঘটনা সামনে আসতেই সরগরম হয়ে ওঠা এলাকা । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দেগঙ্গা থানার পুলিশ । আসেন চাঁপাতলা পঞ্চায়েতে তৃণমূল সদস্য মহিব্বার মোল্লা । প্রথমে বুঝিয়ে আন্দোলনকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন তাঁরা । কিন্তু চাষিরা পরিষ্কার বলে দেন, নায্য ক্ষতিপূরণ না মিললে পাওয়ার গ্রিডের তার টানার কাজ করতে দেওয়া হবে না ।
পরে চাষিদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হলে ঘেরাও মুক্ত হন কর্মীরা । এই বিষয়ে আবদার রহমান মোল্লা নামে এক চাষি বলেন, "চাঁপাতলা মৌজার একেবারে রাস্তার ধারেই আমার একফালি জমি ছিল । উন্নয়নের স্বার্থে সেই জমি তুলে দিয়েছি পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষের হাতে । কিন্তু জমি বাবদ আমাকে 29 হাজার 500 টাকা দেওয়া হয়েছে । পরে জানতে পারি সেই জমির নায্য দাম 39 হাজার 500 টাকা । আমরা চাই নায্য ক্ষতিপূরণ । সেটা যতক্ষণ না মিলছে, ততক্ষণ কাজ করতে দেওয়া হবে না ৷"
বিষয়টি নিয়ে চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য মহিব্বার মোল্লা বলেন, "ক্ষতিপূরণের বিষয়ে পাওয়ার গ্রিডের এক পদস্থ কর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে । উনি সোমবার সকালে এখানে আসবেন । আশা করছি, শীঘ্রই দু'পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ।"
এদিকে আটকে রাখার বিষয়ে পাওয়ার গ্রিডের কর্মী প্রবীর কোনার বলেন, "ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আমরা কিছুই জানি না । তা সত্ত্বেও কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । সমস্যা মিটলেই আমরা কাজ করতে আসব । নচেৎ নয় ৷"
আরও পড়ুন : BJP MLA on Anubrata Mondal : "অনুব্রতকে বিষাক্ত ইঞ্জেকশন দিয়ে মেরে ফেলবেন মমতা", আশঙ্কা বিজেপি বিধায়কের