বারাসত, 9 জুলাই : করোনা আবহে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে মামলা । এর ফলে না হচ্ছে আদালতে বিচার, না হচ্ছে অভিযুক্তদের জামিন । জেলেই আটকে থাকতে হচ্ছে তাদের । এমনই অভিযোগ তুলে শুক্রবার বারাসত জেলা আদালতের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান অভিযুক্তদের পরিবারের লোকেরা । মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং সুবিচারের দাবিতে চলে স্লোগানও ।করোনা আবহে রীতিমতো জমায়েত করে এদিন এই বিক্ষোভ হয় । পুলিশ তা তুলতে গেলে বচসা শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ।এর জেরে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয় আদালত চত্বরে । পরে তাঁদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে পুলিশ ।
জানা গিয়েছে যে বারাসত, হাবড়া, বনগাঁ, আমডাঙা থেকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল একাধিক ব্যক্তিকে । এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই রুজু হয় মাদক মামলা । আবার নাবালিকাকে নির্যাতনের মামলাও রয়েছে কারও কারও বিরুদ্ধে । এদের কেউ এক বছর কিংবা দু'বছর ধরে জেলে বন্দি রয়েছে । আবার কেউ জেলবন্দি রয়েছে তার থেকেও বেশি সময় ধরে ।
আরও পড়ুন : Uniform Civil Code : অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনতে কেন্দ্রকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিল্লি হাইকোর্টের
যদিও অভিযুক্তদের পরিবারের দাবি, তারা নির্দোষ । পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়েছে তাদের । তাই তারা চাইছেন দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক । কিন্তু করোনা আবহে মামলার বিচার প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে বলে অভিযোগ । তার জেরে জামিন হচ্ছে না ওই অভিযুক্তদের । তাই সুবিচারের দাবিতে এদিন পথে নামেন অভিযুক্তদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ।
বিক্ষোভকারী তন্দ্রা সরকার বলেন, "দু'বছর ধরে আমার ছেলে জেলে আটকে রয়েছে । ও কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয় । তা সত্ত্বেও মছলন্দপুর থেকে পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করেছে । মিথ্যা মামলা দিয়েছে । ও একজন হার্টের রোগী । মাঝেমধ্যেই ওকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হয় । কোভিড পরিস্থিতিতে ওর যদি কিছু হয়ে যায়, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি আমরা । আমরা চাই ও যদি দোষী হয়, তাহলে তার বিচার হোক ।’’
আরও পড়ুন : উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার কলকাতা হাইকোর্টের
বিচার ছাড়াই দু'বছর ধরে কেন তাঁর ছেলে জেলে বন্দি রয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি । একই সুর শোনা গিয়েছে পিঙ্কি দাস নামে এক মহিলার গলাতেও । তিনি তাঁর স্বামীর মুক্তির দাবিতে সরব হয়েছেন এদিন ।
যদিও মামলার প্রেক্ষাপটের ওপরই জামিনের বিষয়টি নির্ভর করে বলে জানিয়েছেন বারাসাত আদালতের আইনজীবী আখরু জামাল । তিনি বলেন, "মাদক ও পকসোর মতো গুরুতর মামলায় জামিন দেওয়ার আগে আদালতকে দু'বার চিন্তা করতে হয় । কারণ, এক্ষেত্রে অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হলে সমাজে তার প্রভাব পড়তে পারে ৷" তবে মামলা যদি গুরুতর না হয় সেক্ষেত্রে জামিন দেওয়া যেতে পারে বলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।
আরও পড়ুন : ভুয়ো ভ্যাকসিন-কাণ্ডে আপাতত সিবিআই তদন্ত নয়, রায় কলকাতা হাইকোর্টের