মধ্যমগ্রাম, 12 অক্টোবর: লটারির বেআইনি টাকার যোগসূত্র খুঁজতে এ বার উত্তর 24 পরগনার মধ্যমগ্রামে ডিয়ার লটারির গোডাউন ও ছাপাখানায় হানা দিলেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা । বৃহস্পতিবার সাতসকালেই আইটি-র বিশেষ টিম পৌঁছে যায় মধ্যমগ্রামের সুকান্ত নগরে ওই লটারি কোম্পানির গোডাউনে । এরপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে আধিকারিকরা ঢুকে পড়েন লটারির ছাপাখানার একেবারে ভিতরে ।
সূত্রের খবর, এ দিন চারটি গাড়িতে আয়কর দফতরের 10 থেকে 12 জনের একটি দল হানা দেয় সেখানে । এরপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ঘেরাটোপে গোডাউন এবং ছাপাখানায় একযোগে শুরু হয় ম্যারাথন তল্লাশি । যা এখনও অব্যাহত রয়েছে । লটারির দুর্নীতির টাকার কোনও যোগসাজশ এখানে রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই এ দিন এই ছাপাখানার মালিক-সহ একাধিক কর্মীকে জেরা করেন আধিকারিকরা । সেই সঙ্গে বিভিন্ন নথিপত্র এবং লটারির প্রিন্টিংয়ের তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, শিক্ষক, পৌর নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে একইভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ও সিবিআই ব্যাংকের আর্থিক প্রতারণা এবং একটি লটারি কোম্পানির দুর্নীতির মামলার তদন্তেও নেমেছে । অভিযোগ উঠেছে, প্রকৃত পুরষ্কার প্রাপকদের বঞ্চিত করে ওই লটারি কোম্পানি পুরষ্কারের কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করেছে । যার ফলে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে সেখানে । শুধু তাই নয়, একাধিক তৃণমূল নেতার অ্যাকাউন্টে লটারির বেআইনি টাকা ঢুকেছে বলেও খবর । কারও কারও অ্যাকাউন্টে বেশ কয়েকবার একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির লটারির প্রথম পুরষ্কারের কয়েক কোটি টাকা জমা পড়েছে ।
আরও পড়ুন: মধ্যমগ্রাম পৌরসভাতেও হানা দিল ইডি, খাদ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বাড়ল কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতা
সন্দেহ করা হচ্ছে লটারির পুরষ্কারের আর্থিক টাকার সঙ্গে এই কারখানার ছাপা লটারির কোনও না কোনও যোগসূত্র রয়েছে । সেই যোগসূত্র খুঁজতেই এ দিন মধ্যমগ্রামের যশোর রোডের ধারে ডিয়ার লটারির এই গোডাউন এবং ছাপাখানায় হানা দিয়েছে আয়কর দফতরের বিশেষ টিম । কারখানার গেট বন্ধ করে চলছে জোর তল্লাশি ।
এর আগে, পৌরসভার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই মধ্যমগ্রামেই খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা । মন্ত্রীকে প্রায় 19 ঘণ্টা জেরা করার পর সে দিন রথীন ঘোষের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তদন্তকারী অফিসারেরা । সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে মধ্যমগ্রামে হানা দিল আয়কর দফতর ।
এই বিষয়ে স্থানীয় দোকানদার আলো মিত্র বলেন, "এখান থেকে পাইকারি লটারি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয় । লটারি ঝাড়াই বাছাই করার পর তা গাড়িতে লোডিং করে পাঠানো হত এই গোডাউন থেকে । লোকজন সকালেই এসেছেন এখানে । কিন্তু কী কারণে এসেছেন সেটা বলতে পারব না । হয়তো কোনও তদন্ত করার জন্য ডিয়ার লটারির এই গোডাউনে আসতে পারেন তাঁরা । এটা ওরাই ভালো বলতে পারবেন ৷"