মধ্যমগ্রাম, 21 নভেম্বর : সাধারণত গো-পুজোর প্রচলন রয়েছে গো-বলয়ের রাজ্যগুলিতে । সেখানে গোরুকে মাতা রূপে পুজো করা হয়ে থাকে । গো-পুজোর মাহাত্ম্য ও উপকারিতা বিভিন্ন সময়ে উঠে এসেছে BJP নেতাদের গলাতে । এবার BJP-র পথের শরিক হলেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়কও । মাতলেন গো-পুজোয় ।
মধ্যমগ্রামের বাদুতে গোপাষ্টমী উপলক্ষ্যে গোপুজোর আয়োজন করা হয়েছিল । আজ দুপুরে শ্রী শঙ্খ সেবা ফোরামের চেয়ারম্যান শঙ্খ চট্টোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে গো-পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাদুতে আসেন শাসকদলের প্রাক্তন বিধায়ক ও রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দীনেশ বাজাজ । প্রথমে নারায়ণ গোশালায় গোরুকে রুটি ও শাকপাতা খাওয়াতে দেখা যায় তৃণমূলের প্রাক্তন এই বিধায়ককে । এরপর, মন্দিরে মাথা ঠেকিয়ে গো-পুজোয় মেতে ওঠেন তিনি । রীতিমতো পুরোহিতের সামনে মন্ত্রোচ্চারণ ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান মেনে গো-পুজোর আয়োজন করা হয় ৷
গোবলয়ের রাজ্যগুলির মতো কয়েক বছর ধরে এই রাজ্যেও শুরু হয়েছে গোরুকে মাতা রূপে পূজো । কখনও সেই পুজোয় হাজির থাকতে দেখা গিয়েছে BJP-র রাজ্যস্তরের নেতাদের । আবার কখনও গেরুয়া শিবিরের ডাকসাইটে নেতাদের । গোরুর বিভিন্ন উপাদানের উপকারিতা বোঝাতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত কথাবার্তাও উঠে এসেছে BJP নেতাদের গলাতে ।
যদিও এ রাজ্যে গো-পুজো BJP-র হাত ধরে এসেছে বলে মনে করছেন না তৃণমূলের প্রাক্তন এই বিধায়ক । বরং এটা হিন্দুদের সংস্কৃতি বলেই মন্তব্য করেন তিনি ।
দীনেশ বাজাজ বলেন, "BJP-র থেকে আমাদের হিন্দুত্ব শিখতে কিংবা বুঝতে হবে না । ওরা নিজেরাই বাইরের লোক এনে এই রাজ্যে যা খুশি তাই করছে । ওদের বাংলার লোকের উপর বিশ্বাস নেই । আমরা গত পাঁচ বছর ধরে এখানে গো মাতার পুজো করে আসছি । গো মাতা সকলের । এটা হিন্দু সংস্কৃতিতে-ই রয়েছে । এর মধ্যে অন্য কিছু খোঁজা ঠিক হবে না ৷"
পুজোর উদ্যোক্তা শঙ্খ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "গোরুর মাতার পুজো বাইরের থেকে আমদানি হয়েছে, এটা ঠিক নয় । আমাদের সনাতন ধর্মেই গোরুকে মাতা রূপে পুজোর প্রচলন রয়েছে । এর মধ্যে রাজনীতি খোঁজাও অনুচিত । এখানে যে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-নেতৃত্ব আসতে পারেন । কারণ, আমি নিজে রাজনীতির লোক নই । ধর্ম ও রাজনীতিকে একসঙ্গে দেখা ঠিক নয় ।"
এই নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির । BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শংকর চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ক্ষমতা থেকে যাওয়ার আগে আমাদের সবকিছু এখন নকল করতে শুরু করেছেন তৃণমূলের বর্তমান ও প্রাক্তন জনপ্রতিনিধিরা । বুঝতে পারছেন দিন শেষ হয়ে আসছে । সেজন্য এসব করতে হচ্ছে । এসব করেও বিশেষ লাভ হবে না । মানুষ একুশের নির্বাচনে শাসকদলকে ক্ষমতা থেকে সরাতে প্রস্তুত ।"