বেলঘরিয়া, 29 এপ্রিল: কোরোনার প্রকোপে শুরু হল লকডাউন। তবু, নেতাদের প্রতিশ্রুতিতে মনে হয়েছিল ডাল ভাতের চিন্তা করতে হবে না। বলছেন প্রদীপ মাইতি। তাঁর কথায়, ভাবনা আর বাস্তব কবে আর হাত ধরাধরি করে চলেছে। অগত্যা, বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ছেলেকে সঙ্গে করে ফাস্ট ফুডের দোকান বন্ধ করে পাড়ায় পাড়ায় ঘোরা সবজি বিক্রেতা হলেন বেলঘরিয়ার প্রদীপ মাইতি।
কদিন আগেও স্থানীয় এক অভিজাত আবাসনের গেটের পাশেই ফাস্ট ফুডের দোকান ছিল প্রদীপ মাইতির। একটি বিখ্যাত জ্যাম-জেলি প্রস্তুতকারী কোম্পানির কর্মী ছিলেন একসময়। সে কোম্পানি বন্ধ হল প্রায় এক যুগ আগে। ফলে পেট চালাতে সেই সময়েই বেছে নিয়েছিলেন পরোটা, চপ, রোল, চাউমিন বানানোর ব্যবসাকে। দোকানও দিয়েছিলেন। কারখানা বন্ধের ধাক্কা সরিয়ে ঘুরেও দাঁড়িয়েছিলেন খানিক প্রদীপ মাইতি। এরপর ছেলে বউ নিয়ে তিনজনের সংসারে প্রাচুর্য ছিল না, তবে ডাল-ভাতের জোগান নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি, বলেন প্রদীপবাবু। কিন্তু কোরোনা ভাইরাস তথা লকডাউন তাঁকে প্রকৃত অর্থেই রাস্তায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
ফাস্ট ফুডের দোকান একমাসের বেশি হয়ে গেল বন্ধ। উপায় নেই দেখে এখন তিন চাকার ট্রলি ভ্যানের ফাস্ট ফুডের দোকানটিকেই সবজির দোকানে পরিণত করে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছেন প্রদীপ মাইতি। কিন্তু সমস্যা হল বেলঘরিয়ার অধিকাংশ পাড়ার গলিও সিল করে দিয়েছে পুলিশ। যেহেতু এলাকায় সংক্রমণের খবর মিলেছে। ফলে এক্ষেত্রেও ভাগ্য বিপর্যয় ৷
ভোররাতে উঠে পাইকারি বাজার থেকে আনা সবজি কষ্টের মূল্য পাওয়ার বদলে ভ্যানের ওপরেই শুকাচ্ছে। এমনিতে নতুন পেশা, প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার লড়াই। তবু প্রদীপবাবুর ভাষায়, হাল ছাড়িনি কিন্তু। তিনি জানান, ভরসা পেয়েছিলেন সরকারি তরফে সাহায্য পাওয়ার আশ্বাসে। টোটো ইউনিয়নের দুকেজি চাল ছাড়া বাকি সব মিথ্যে, বলছেন প্রদীপ মাইতি।
বেলঘরিয়ার প্রদীপ মাইতি আরও বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলর আশ্বাস দিয়েছেন। যার বাস্তবায়নও তো এখনও দেখতে পায়নি!