বারাসত, 12 অক্টোবর : ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ৷ সোমবার তার কঠোর শাস্তির দাবিতে বারাসত আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখাল অভিযুক্ত গৃহশিক্ষকের এলাকার লোকজন । সোমবার পোস্টার প্ল্যাকার্ড-সহ ওই গৃহশিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিলেন মহিলারা ।
সকালে বারাসত আদালত চত্বরে পোস্টার নিয়ে হাজির হন অভিযুক্তের এলাকার লোকজন । তাঁরা ভেবেছিলেন, আজ আদালতে অভিযুক্তকে পেশ করা হবে ৷ কিন্তু সাতদিনের পুলিশি হেপাজতের সময়সীমা এখনও শেষ হয়নি । অভিযুক্ত আদালত চত্বরে না থাকলেও তার শাস্তির দাবিতে আদালত চত্বরে সোচ্চার হন বিক্ষোভকারীরা ৷ প্রায় ঘণ্টা দু'য়েক ধরে চলে বিক্ষোভ । পরে বারাসত থানার IC দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থানে এসে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করে ৷
উল্লেখ্য, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হলেও অপর অভিযুক্ত এখনও পলাতক । পলাতক ওই গৃহশিক্ষকের বন্ধু বলে জানা গিয়েছে ৷ গণধর্ষণে যোগসাজশের অভিযোগে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে স্বপন সামন্ত ও তার স্ত্রী শান্তাকে । তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দম্পতির বাড়িতেই দিনের পর দিন ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণ করা হত ছাত্রীকে । বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় বারাসতের সুভাষপল্লি এলাকায় । অভিযুক্ত গৃহশিক্ষকের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাকে মারধর করে উত্তেজিত জনতা । ভাঙচুর চলে গৃহশিক্ষকের বাড়িতে । এরপর ঘটনাস্থানে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে অভিযুক্তকে উদ্ধার করে পুলিশ । নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় গৃহশিক্ষক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাসকে । এই গ্রেপ্তারির পর রাজনৈতিক রঙ মাথাচাড়া দেয় । তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করে, ধৃতের সঙ্গে BJP-র যোগ রয়েছে ৷ শাস্তির দাবিতে তৃণমূল এলাকায় আন্দোলনেও নামে ৷ যদিও গেরুয়া শিবির সেই অভিযোগ খণ্ডন করে পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে । এদিকে ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগায় অসন্তুষ্ট নির্যাতিতার পরিবার । তাঁরা এই বিষয়ে কোনওরকম রাজনীতি চাইছেন না, বরং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন ৷ স্থানীয় বাসিন্দারাও চাইছেন, ধৃত গৃহশিক্ষকের কঠোর শাস্তি হোক ৷ তাহলেই পড়ুয়ারা সুরক্ষিত থাকবে ৷ এই দাবিতেই আজ বারাসত আদালতে একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখান ওই গৃহশিক্ষকের প্রতিবেশীরা ।
জনৈক বিক্ষোভকারী শম্পা বিশ্বাস বলেন, "অভিযুক্ত শিক্ষকের কঠোর শাস্তি হলেই অন্য পড়ুয়ারা সুরক্ষিত হবে ৷ এই দাবিতেই আমরা বারাসত আদালতে চত্বরে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছি ৷ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে আমাদের সন্দেহ । প্রশাসনের প্রতি আস্থা রয়েছে । তাঁরা নিশ্চয় পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন ৷ আশা করি সুবিচার পাব ৷ "