বারাসত, 27 জুন: ভোট এলেই উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যায় ৷ আবার কোথাও প্রকাশ্যে আসে শাসকদলের একাধিক দুর্নীতি ৷ বারাসত 1 নম্বর ব্লকের কালিয়ানই গ্রাম ৷ সেখানেই কবরস্থানের ভূমি উন্নয়ন ও গাছ লাগানোর প্রকল্পের দুর্নীতির ঘটনায় সরগরম এলাকা । টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ৷
জানা গিয়েছে, মহাত্মা গান্ধি জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে কালিয়ানই গ্রামে কবরস্থানের ভূমি উন্নয়ন ও গাছ লাগানোর জন্য 2 লক্ষ 33 হাজার 208 টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল । 2019-2020 অর্থবর্ষে বরাদ্দ হওয়েছিল উন্নয়েনের এই টাকা ৷ অভিযোগ, সেই টাকা আত্মসাৎ করে প্রকল্পের বোর্ড লুকিয়ে রাখা হয়েছে গ্রামেরই বাসিন্দা সেলিম মোল্লার বাড়িতে ৷ বিনিময়ে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা ৷ যা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায় । ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই তদন্ত চেয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও তুলেছেন গ্রামবাসীরা । যদিও ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান ।
এই প্রসঙ্গেই স্থানীয় বাসিন্দা ইমাম মোল্লা বলেন, "2020 সালের 26 ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কবরস্থানের উন্নয়নে কিছুই হয়নি । তিন বছর পার হতে চলল ৷ কেন কাজ হল না তা আমরা জানি না । সেটা শাসকদলের নেতারাই ভালো বলতে পারবেন । তবে এখন জানতে পারছি প্রকল্পের পুরো টাকাটাই নাকি তুলে নেওয়া হয়েছে । এটা হলে অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত ।" গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ফলাও করে তা উল্লেখ করাই সার! এর কোনওটায় হয়নি খাতায় কলমে।
এদিকে, যাকে টাকা দিয়ে এই প্রকল্পের বোর্ড লুকিয়ে রেখে ম্যানেজ করার চেষ্টার অভিযোগ এলাকাবাসীর সেই সেলিম মোল্লা জানান, হাফিজুল নামে এক সুপারভাইজার তাঁকে বলেছিলেন বাড়ির পুকুর খননের জন্য 100 দিনের টাকা বরাদ্দ হয়েছে । তাই একটি সরকারি বোর্ড দিতে হবে । এরপর পুকুর খননের জায়গায় বোর্ডটি না দিয়ে তাঁর বাড়িতে এসে বোর্ডটি রেখে গিয়েছেন। প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি বোর্ডটি কবরস্থানের কাজের জন্য । পরে এলাকাবাসীদের থেকে শোনার পর তিনি জানতে পারেন, তাঁর বাড়িতে কবর স্থান উন্নয়নের বোর্ড রাখা ৷ তিনিও চান ব্যাপারটির তদন্ত হোক ৷ এলাকার উন্নয়ন হোক ৷ যারা উন্নয়নে বাধা দিয়েছে তাদের শাস্তি হোক ৷
আরও পড়ুন: আগে সুষ্ঠু ভোট পরে মিষ্টি, তৃণমূল প্রার্থীর সৌজন্যে 'না' বিজেপি প্রার্থীর
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজায় জড়িয়েছে শাসক-বিরোধী উভয় শিবিরই । সিপিএম এবং বিজেপি নেতৃত্ব যেখানে এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের সঙ্গে দুর্নীতির তুলনা করে শাসকদলকে বিঁধছে । সেখানে এই ঘটনায় রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুলে বিরোধীদের কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক শিবির।