বারাসত, 25 এপ্রিল: বারাসত পৌরসভার 26 নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দিরা কলোনিতে দীর্ঘ 40 বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করে আসছেন প্রায় 260টি পরিবার । এদের সকলেই 1971 সালে ওপার বাংলা থেকে চলে আসেন এদেশে । ছিন্নমূল অবস্থায় কোনওরকমে বসবাস শুরু করেন বারাসত শহরের ইন্দিরা কলোনিতে । সকলেই দরিদ্র সীমার নীচে বসবাস করেন ৷ সেখানে নিজেদের ক্ষমতায় পাকা বাড়ি তৈরি অনেকটাই 'অলীক স্বপ্ন'-এর মতো দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারগুলির কাছে । দীর্ঘদিন ধরেই এই কলোনিতে পাকা ঘরের দাবি করে আসছিলেন তাঁরা ।
এই সকল বাসিন্দাদের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী । 2022 সালের 6 জানুয়ারি এই কলোনিতেই রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে 'শহর আবাসন জনপ্রকল্প'-এর ভিত্তিপ্রস্তর সূচনা করে ছিলেন তিনি। ঠিক হয় কলোনির 2.4 একর জমিতে চারতলা আবাসন গড়ে তোলা হবে ৷ প্রকল্পটি গড়ে তুলবে রাজ্য সরকারের পৌর দফতরের আওতাধীন কেএমডিএ । এই শিলান্যাসের একবছর কেটে গেলেও গড়ে ওঠেনি আবাসন ৷ তাই বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোট বয়কটের ডাক দেন ৷
বস্তিবাসীদের এই অভিযোগে কার্যত আগুনে ঘি ঢেলেছেন পৌরসভার বিরোধী দলনেতা ও সিপিএম কাউন্সিলর বরুণ ভট্টাচার্য ৷ এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, "এটা নতুন কিছু নয় । উন্নয়নের নামে মানুষের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছে শাসকদল । বারাসত শহরের যাবতীয় উন্নয়ন হয়েছে বিগত বাম পৌরবোর্ডের আমলেই । তৃণমূল পৌরবোর্ড কিছুই করতে পারেনি । ক্ষমতায় এসে শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট বৈতরণী পার হওয়ার চেষ্টা করেছে শাসকদল । মানুষ ওদের এই ধাপ্পাবাজি ধরে ফেলেছে ।"
যদিও বিরোধীদের এই অভিযোগকে এক প্রকার উড়িয়ে দিয়েছেন পৌরসভার পৌর পারিষদ তথা বারাসত শহর তৃণমূলের সভাপতি অরুণ ভৌমিক ৷ এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, "এটি একটি বড় প্রজেক্ট । যে কোনও প্রজেক্টের কাজ শুরু হওয়ার আগে অনেকগুলো ধাপ থাকে । জমি, আর্থিক বরাদ্দ, ভেটিং-সহ আনুষাঙ্গিক নানা বিষয় । জমি জটের বিষয়টি আপাতত কেটে গিয়েছে । প্রকল্পের ভেটিং-ও যাদবপুর ইউনিভার্সিটি-কে দেওয়া হয়ে গিয়েছে । আশা করছি, ভেটিং হয়ে গেলেই আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে । হয়তো দেরি হচ্ছে বলেই সেখানকার বস্তিবাসীরা একটু অধৈর্য হয়ে পড়েছে । প্রকল্প হবেই । আটকে থাকার কোনও ব্যাপার নেই।"
আরও পডু়ন: বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মজয়ন্তী পালনে কাজিয়া ! প্রকাশ্যে শাসকের অন্তর্দ্বন্দ্ব
প্রসঙ্গত, এই আবাসনের জন্য ইতিমধ্যেই বরাদ্দও হয়ে গিয়েছে 16 কোটি 29 লাখ 62 হাজার 171 টাকা । তবে, হাটখোলা সংলগ্ন ইন্দিরা কলোনির যে জমির ওপর আবাসন প্রকল্পটি গড়ে ওঠার কথা, সেই জমিটি শিক্ষা দফতরের হাতে থাকায় তা নিয়ে প্রথমে জটিলতা তৈরি হয়েছিল । পরে, অবশ্য আলোচনার মাধ্যমে সেই জটিলতা কেটে যেতেই জমি হস্তান্তর করা হয় পৌরসভার হাতে ।