বারাসত, 9 এপ্রিল: জগদীপ ধনকড়ের দেখানো পথে না-চললে সিভি আনন্দ বোসের চাকরি টিকবে না ৷ তাই ধনকড়ের পথ অনুসরণ করতে হচ্ছে বর্তমান রাজ্যপালকে ৷ সাম্প্রতিককালে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী ৷ রবিবার বারাসতে তৃণমূলের একটি রক্তদান শিবিরে হাজির হন তিনি ৷ সেখানেই ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে বারাসতের তৃণমূল বিধায়ক অভিযোগ করেছেন, রাজ্যপালের ভূমিকা নিরপেক্ষ নয় ৷ তাঁর ভূমিকা নিরপেক্ষ হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি ৷ কিন্তু, সেটা হচ্ছে না ৷
প্রসঙ্গত, উচ্চশিক্ষায় আর্থিক লেনদেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের খতিয়ান নিয়ে সম্প্রতি রাজভবন থেকে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ৷ আর তা সরাসরি গিয়েছে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের কাছে ৷ কাজের খতিয়ান নিয়ে এখন থেকে সপ্তাহান্তে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের ৷ এমনকি কোনও সমস্যা হলে উপাচার্যরা সরাসরি আলোচনা করতে পারবেন রাজ্যপালের সঙ্গে ৷ সেই নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে ৷
যদিও সেই নির্দেশিকার কোনও আইনি বৈধতা নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ সংঘাতের এমন আবহের মধ্যেই আবারও উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ এড়াতে বড়সড় বদল আনতে চলেছে শিক্ষা দফতর ৷ ইতিমধ্যে, শিক্ষা দফতর পুরনো রীতি ফেরাতে সার্চ কমিটিতে ইউজিসি-র প্রতিনিধি নিয়োগের ভাবনা শুরু করেছে ৷ সেই কারণে তোড়জোড় চলছে অর্ডিন্যান্স আনারও ৷ আর এই জটিল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য বিজেপিকে দুষেছেন বারাসতের বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী ৷
আরও পড়ুন: রাজ্যপালকে এড়াতে উপাচার্য নিয়োগে বদল! অর্ডিন্যান্সের ভাবনা ব্রাত্যদের
এই বিষয়ে চিরঞ্জিত বলেন, "এখানে রাজ্যপাল থাকলে বিজেপি ভেবেছিল তাঁদের অনেক সুবিধা হবে ৷ সেই কারণে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা চলছে ৷ কারণ, এর মধ্যে ওরা ঢুকতে চাইছে ৷ যার ফলেই সংঘাত বাঁধছে ৷" তাহলে কি জগদীপ ধনকড়ের মতো বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁর প্রাক্তনীর দেখানো পথেই হাঁটছেন ? জবাবে তৃণমূলের তারকা বিধায়ক বলেন, "একদমই তাই ৷ তা না-হলে তো রাজ্যপাল পদেই থাকবেন না সিভি আনন্দ বোস ৷ জগদীপ ধনকড়ের পথে তিনিও যাচ্ছেন ৷"
আরও পড়ুন: রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশিকা রাজভবনের, প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ
আগামিদিনে এই সংঘাত যে আরও বাড়তে পারে, তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন শাসকদলের বিধায়ক ৷ তাঁর মতে, সরকারের কাজে বাঁধা দেওয়া হলে সংঘাত হবেই ৷ প্রাপ্য টাকা না দিলে প্রতিবাদ এবং লড়াই করতেই হবে ৷ এ প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ন্যায্য পাওনা আদায়ে এক কোটি সই সংগ্রহের প্রসঙ্গও তুলে আনেন তিনি চিরঞ্জিত চক্রবর্তী ৷ আর তাঁর কাছে এ নিয়ে নির্দেশ এলে তিনিও সামিল হবেন সই সংগ্রহে, জানালেন বারাসতের বিধায়ক ৷