বারাসত, 16 নভেম্বর : ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যম দুয়ারে পড়ল কাঁটা । যমুনা দেয় জমকে ফোঁটা । আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা । থুড়ি, ভাই নয় । বোনকে ফোঁটা দিলেন দাদারা । বোনেদের কপালে চন্দনের মঙ্গল ফোঁটা দেওয়ার সময় দাদাদের বলতে শোনা গেল, "বোনের কপালে দিলাম ফোঁটা । দুষ্কৃতীর দুয়ারে পড়ল কাঁটা । দুষ্কৃতীরা দেয় অন্যায়কে ফোঁটা । আমরা দিই আমাদের বোনকে ফোঁটা ।" এমন অভিনব মন্ত্রোচ্চারণে ধ্বনিত হল বারাসতের সমন্বয় নামে একটি সামাজিক সংগঠনে । রেল লাইনের ধারের ঝুপড়ি কিংবা রাস্তার ধারের কাছের বস্তিতে থাকে এমন শতখানেক কিশোরীকে ফোঁটা দিল সমন্বয় ।
শুধু ফোঁটা দেওয়া নয় । বরং সুস্বাদু খাবারের উপহার দিল দাদারা । খাবারের তালিকায় ছিল রকমারি মিষ্টি । ভাইফোঁটার সকালে এমন অভিনব বোন ফোঁটার আয়োজনে মেতে উঠেছে অনেকে । বাঙালির কাছে ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় ভাইফোঁটা হল বিশেষ দিন । তবে কোরোনা আবহে এবছর পরিস্থিতি যথেষ্ট প্রতিকূল । এ পরিস্থিতিতে অনেক পরিবারই দুবেলা অন্ন জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছে । তার উপর ভাইফোঁটার পঞ্চব্যঞ্জন জোগাড় করা যেনো আপাতত স্বপ্ন । সমন্বয়ের সদস্যরা তাই দুস্থ গরিব বোনদের স্বপ্নপূরণ করতে এগিয়ে আসেন । এদিন বোনফোঁটায় উপহার স্বরূপ তুলে দেওয়া হয় চাল ডাল আলু পেঁয়াজ মাছ মাংস সহ আরও অনেক কিছু । প্রতিজনকে প্রায় 20 রকমের খাদ্যসামগ্রী উপহার দেওয়া হয়েছে ।
উপহার পেয়ে বোনেরা বলেন, "লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়ে সংসার চালাতে কালঘাম ছুটছে পরিবারের । সেখানে ফোঁটা দিয়ে সমন্বয়ের দাদারা যেভাবে পাশে দাঁড়াল তা এককথায় অনবদ্য । তাঁরা সহযোগিতা করায় খুব ভালো লাগছে ।" এবিষয়ে বারাসত সমন্বয় সংগঠনের সভাপতি বিষ্ণুচরণ বসু বলেন,"কোরোনা সংকটে কাজ হারিয়ে উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের লোকেদের । হাতে টাকা না থাকায় সংসার চালানোয় এখন দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের কাছে । তাই, গরিব ও অসহায় ওই সমস্ত পরিবারের মেয়েদের জন্য বোন ফোঁটার আয়োজন করেছি । তুলে দেওয়া হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীও । এঁদের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুব ভালো লাগছে আমাদের ।"