স্বরূপনগর, 6 সেপ্টেম্বর : ফের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বড়সড় সাফল্য বিএসএফের । পাচারের আগেই দু কেজি ছয়শো গ্রাম সোনার বিস্কুট সহ পাচারকারীকে হাতেনাতে ধরলেন বিএসএফের 112 নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে উত্তর 24 পরগনার স্বরূপনগরের তারালি সীমান্ত এলাকায় ফাঁদ পেতে বিপুল এই পরিমাণ সোনার বিস্কুট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । সেই সঙ্গে আটক করা হয় আজমল সানা নামে এক পাচারকারীকে । পরে, আটক যুবককে স্বরূপনগর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলে গ্রেফতার করা হয় তাকে । বিএসএফ সূত্রে খবর, ওই পাচারকারীর কাছ থেকে মোট 24টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়েছে । যার বাজারমূল্য এক কোটি 27 লাখ টাকা । বাংলাদেশ থেকে বিপুল টাকার সোনার বিস্কুট চোরাচালানের মাধ্যমে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছিল মনে করা হচ্ছে । সেই সোনার বিস্কুট ভারতের কোথাও পাচারের ছক ছিল বলে ধারণা বিএসএফ কর্তৃপক্ষের । বাজেয়াপ্ত হওয়া সোনার বিস্কুট তেতুলিয়া শুল্ক দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় পাচারের ঘটনা নতুন কিছু নয় ৷ এর আগেও স্বরূপনগরের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নানা ধরনের জিনিস পাচারের চেষ্টা রুখেছে বিএসএফ । কখনও সোনার বাট, রুপোর গয়না । আবার কখনও ফেন্সিডিল কিংবা মাছের চারাপোনা । সম্প্রতি বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্ত থেকে প্রায় সাতাশি লাখ টাকার সোনার বিস্কুট বাজেয়াপ্ত করেছিলেন বিএসএফের 153 নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা । এবার এক কোটি টাকারও বেশি সোনার বিস্কুট বাজেয়াপ্ত হল স্বরূপনগরের তারালি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ।
এই সংক্রান্ত খবর : সীমান্তে বাজেয়াপ্ত 87 লাখ টাকার সোনার বিস্কুট
জানা গেছে, শনিবার রাতে তারালি সীমান্ত হয়ে বিপুল পরিমাণ সোনার বিস্কুট পাচার হওয়ার খবর ছিল বিএসএফের কাছে । সেই মতো আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন 112 নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা । বাইক নিয়ে সন্দেহভাজন এক যুবককে সীমান্ত ঘেঁষা আমুদিয়া এলাকার দিকে আসতে দেখে সন্দেহ হওয়ায় বাইকটি দাঁড় করান তাঁরা । এরপর,তল্লাশি চালাতেই চক্ষু চড়কগাছ বিএসএফের কর্তব্যরত জওয়ানদের । বাইকের এয়ার ফিল্টার থেকে মেলে থরেথরে সোনার বিস্কুট । তল্লাশির মাঝেই জওয়ানদের চোখে ধুলো দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ওই যুবক । জওয়ানদের তৎপরতায় ধরা পড়ে যায় ৷ আটক করা হয় তাকে । আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা জানতে পারেন, তার নাম আজমল সানা । বাড়ি তারালি সীমান্তের আমুদিয়ার নিত্যানন্দ কাটিতে । বাংলাদেশের চোরাচালানকারী সাইদুল মোল্লার থেকে সোনার বিস্কুটগুলো নিয়ে বালতি বাজারের খালিক গাজির কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল তার । এজন্য কমিশন বাবদ ওই যুবক 500 টাকা পেত বলে দাবি করেছে বিএসএফের কাছে । কিন্তু তার আগেই বিএসএফ জওয়ানদের নজরদারিতে পাচারের ছক বানচাল হয়ে যায় ।
আটক যুবককে পরে স্বরূপনগর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলে গ্রেফতার করা হয় তাকে । সেই সঙ্গে বাজেয়াপ্ত হওয়া বিপুল টাকার ওই সোনার বিস্কুট তেতুলিয়া শুল্ক দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ ।
এই বিষয়ে বিএসএফের 112 নম্বর ব্যাটেলিয়নের কমান্ডিং অফিসার নারায়ণ চন্দ্র বলেন, "চোরাচালান কিংবা যে কোনও অপরাধ ঠেকাতে সীমান্তে জওয়ানরা সবসময় সজাগ রয়েছে । সীমান্ত এলাকার যুবকরা যাতে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে না পারে তারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিএসএফ । অপরাধ ছেড়ে তাঁদের মূল স্রোতে ফেরানোই উদ্দেশ্য আমাদের । জওয়ানদের তৎপরতার জন্যই এতবড় সাফল্য এসেছে ৷"
এদিকে,ঘটনার সঙ্গে আন্তঃরাজ্য পাচার চক্রের কোনও যোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে স্বরূপনগর থানার পুলিশ। সেই মতো রবিবার ধৃতকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখার আদেশ দেন ।