বারাসত, 19 এপ্রিল: 'নিয়োগ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড মমতা।' এবার মুখ্যমন্ত্রীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি করলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ৷ মুখ্যমন্ত্রীকে টানা তিনঘণ্টা জেরা করলেই রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির যাবতীয় তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে বুধবার বিস্ফোরক মন্তব্য করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
জেলাপরিষদ অভিযানে অশান্তি এবং সংঘর্ষের ঘটনায় ধৃত 10 জন বাম ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে সাতজনের জেল হেফাজতের মেয়াদ ফুরিয়েছে ৷ এদিন ফের তাঁদের বারাসত আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেই মামলাতেই এদিন ধৃত বাম ছাত্র-যুব কর্মীদের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য্য ৷ সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বলেন, "গোটা নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনায় জড়িত স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।" তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকারের সচিবালয় থেকেই নিয়োগ দুর্নীতির ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করা হয়েছে।
এদিন বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, "বিভিন্ন মামলার সওয়াল-জবাবে সেই কথা আমরা বারবার তুলে ধরেছি আদালতের সামনে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন দল এবং মন্ত্রিসভার দু'নম্বরে। তাঁর উপরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই গোটা দুর্নীতির জন্য মমতাই দায়ী ৷" এদিন বারাসত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য্ বলেন, "গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক ব্যবস্থায় আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। সংবিধান সেই অধিকার দিয়েছে। সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা পুলিশ কিংবা রাজ্য সরকারের নেই। তারপরও পুলিশ তদন্তের নামে এই 10 জন আন্দোলনকারীকে আটকে রেখেছে। অকারণে এদের জেলে রাখার কোনও মানে নেই।" এরপরই বাম ছাত্র-যুবদ কর্মীদের জামিন দেওয়ার দাবি জানান তিনি ৷
যদিও পালটা বিকাশ ভট্টাচার্যের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী ৷ সরকারের দাবি, "আন্দোলন যে কেউ করতেই পারে। তার মানে এই নয় যে গুন্ডামি করতে হবে।" পাশাপাশি জামিন দিলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে বলেও এজলাসে জানান সরকার পক্ষের আইনজীবী ৷ দু'পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে ধৃত সাতজনের জামিন নাকচ করে ফের তাঁদের সাতদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। অন্যদিকে, আদালত থেকে বেরিয়ে মুকুল রায়ের দিল্লি যাত্রা থেকে শুরু করে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে রীতিমতো বিস্ফোরক অভিযোগ করেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ ৷
আরও পড়ুন: ইয়ে ডর মুঝে আচ্ছা লাগা, শাহর সঙ্গে মমতার কথা নিয়ে ফোন নম্বর প্রকাশের হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর
তাঁর কথায়, "আপনারা ভাবছেন মুকুল রায় এমনি গিয়েছে। ওকে দিল্লি পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। এখন ওসব নাটক, মাথা খারাপ, পেট খারাপ বলে লাভ নেই। কারণ, তদন্ত যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে মমতা এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের বাঁচার কোনও পথ নেই। তাই মুকুল রায়ের মাধ্যমে চেষ্টা করছেন নিজে এবং তাঁর ভাইপো অভিষেককে বাঁচানোর জন্য।" পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, অমিত শাহ এবং নরেন্দ্র মোদির পায়ে ধরা ছাড়া তাঁদের আর কোনও উপায় নেই। তাঁর কথায়, "মুকুল রায়কে এজেন্ট হিসেবে দিল্লিতে পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"